বসিরহাট: বাদুড়িয়া থানার মিলনি নয়াবস্তিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের কাঁকড়া সুতি গ্রামের বছর চব্বিশের আজাহার ইসলাম৷ ২০১৮ সালে মেডিকেল পড়ার জন্য ইউক্রেনের কিভে গিয়েছিলেন। চতুর্থ বছরের মেডিকেলের ছাত্র। রাশিয়ার ও ইউক্রেনে যুদ্ধের মধ্যে মেডিকেল পড়া হল না। অবশেষে নিজের জীবন, সঙ্গে ৪৮ জন সহপাঠীদের গ্রুপ ক্যাপ্টেন হয়ে প্রায় ১,১০০ কিলোমিটার কখনো বাস, ট্রেন আবার কখনো পায়ে হেঁটে নিজেদের খরচায় হাঙ্গেরি সীমান্তে পৌঁছাতে হয়েছিল।
কিন্তু এই পথ অতিক্রম করতে গিয়ে ইউক্রেন রাশিয়ান সেনার হেনস্তার মুখে পড়তে হয়। ভারতীয় পড়ুয়াদের বিভিন্ন সময়ে তাদের একদিকে উপযুক্ত নথিপত্র চাওয়া হয়। অন্যদিকে বিভিন্ন সময় তাদেরকে ঘন্টার পর ঘন্টা স্টেশন বসে থাকতে হয়। আবার কখনো বাসে আবার কখনো পায়ে হেঁটে ,এই পথ ছিল ভয়ংকর। যেকোনো সময় চলার পথে মিসাইল হামলা গুলিবর্ষণের মধ্যে পড়তে হত। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ৪৮ জন পড়ুয়া নিয়ে জীবনের ঝুঁকি পথ অতিক্রম করতে হয়েছিল আজহারকে৷ আজহার সোমবার গভীর রাত্রে বাদুড়িয়ার বাড়িতে এসে পৌঁছায়৷ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল সৈনিক পরিবার। গ্রামবাসীদের যুদ্ধের ভয়ংকর স্মৃতি শেয়ার করতেই একদিকে পরিবার গর্বিত হচ্ছে অন্যদিকে গ্রামের মানুষরা তাকে বাহবা দিচ্ছেন।
এদিকে যখন যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনের কলেজে পাঠরত সন্তানদের নিয়ে যখন চিন্তিত তখন অন্য বার্তা দিলেন আজহারের মা অলিভিয়া ইসলাম মন্ডল৷ তিনি বলেন, ‘‘যুদ্ধ তো ওর রক্তেই আছে৷ আমি ওই বিষয় নিয়ে ভাবিনি৷ কারণ, ওর বাবা কাকারা প্রাক্তন সৈনিক ।’’ ২০১৮ সালে আজহার তারা বাবা আমিরুল ইসলামকে হারিয়েছেন।বাবার স্বপ্ন পূরন করতে বিদেশে পাড়ি দিয়েছিল আজাহার৷ তবে তিনি জানান, ‘‘ইউক্রেনে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আবার যাবেন সেখানে মেডিকেল পড়তে৷’’