ভারতের ৫৯% অঞ্চলই ভূমিকম্প-প্রবণ! কোন জোনে কলকাতা? তালিকায় আপনার শহরই নেই তো?

ভারতের ৫৯% অঞ্চলই ভূমিকম্প-প্রবণ! কোন জোনে কলকাতা? তালিকায় আপনার শহরই নেই তো?

bea7c775080ea1ab057acd2bb2a2113c

কলকাতা: প্রবল ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছে তুরস্ক৷ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে প্রায় ধুলিস্মাৎ আস্ত একটা দেশ৷ মৃতের সংখ্যা প্রায় ৮০০০৷ তুরস্কের সেই ছবি কোথাও যেন ভয় ধরাচ্ছে এ দেশেও৷ সম্প্রতি একাধিক ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছে উত্তর ভারত৷ কেঁপেছে দক্ষিণবঙ্গের মাটিও৷ নতুন করে ভূমিকম্পের যে মানচিত্র সামনে এসেছিল তাতে দেখা যাচ্ছে, দেশের ৫৯ শতাংশ এলাকাই ভূমিকম্প-প্রবণ৷

আরও পড়ুন- রেললাইনে ফাটল! যুবক ও রেলকর্মীর তৎপরতায় দুর্ঘটনা থেকে বাঁচল হাওড়া-অমৃতসরগামী মেল

গতবছর লোকসভায় একটি প্রশ্নের উত্তরে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য তুলে ধরেছিলেন ‘মিনিস্ট্রি অফ আর্থ সায়েন্স’-এর মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং। লিখিত জবাবে তিনি জানিয়েছিলেন, দেশের ভূমিকম্প-প্রবণ অঞ্চলগুলিকে তীব্রতার ভিত্তিতে চারটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। সবার ওপরে রয়েছে জোন ৫। সবার নীচে রয়েছে জোন -২।

তথ্য বলছে, দেশের ১১ শতাংশ ভূমিকম্প-প্রবণ অঞ্চল রয়েছে জোন ৫-এ। জোন ৪-এ রয়েছে ১৮ শতাংশ অঞ্চল। আর সবথেকে বেশি ৩০ শতাংশ ভূমিকম্প প্রবণ অঞ্চল রয়েছে জোন ৩-এ। বাদ বাকি রয়েছে জোন ২-এ। অতীতে ভূমিকম্পের ঘটনা ও ভূমির ওঠানামা বা কম্পনের ওপর ভিত্তি করেই এই অঞ্চলগুলিকে ভাগ করা হয়েছে। 

ভারতে ভূমিকম্প নিয়ে যাবতীয় চর্চার জন্য ইতিমধ্যেই গড়ে তোলা হয়েছে ন্যাশনাল সিসমোলজিক্যাল নেটওয়ার্ক৷ এই নেটওয়ার্কের সঙ্গে প্রভূত তথ্য আদানপ্রদান করে ‘ন্যাশনাল সেন্টার ফর সিসমোলজি’। মাটির তলায় কম্পনের ওপর নজরদারি চালানোর জন্য ১১৫টি জায়গায় পর্যবেক্ষক রয়েছে ‘ন্যাশনাল সেন্টার ফর সিসমোলজি’র। কোনও কারণে ভূ-স্তর সরে গেলে তৎক্ষণাৎ রাজ্য ও কেন্দ্রের বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরকে খবর পাঠায় এই কেন্দ্রগুলি৷

কিন্তু কোন জোনে রয়েছে আমাদের রাজ্য? কী অবস্থা মহানগরী কলকাতার? ভূমিকম্পের ভয় রয়েছে এ রাজ্যের কোন কোন অঞ্চলে? এই সব প্রশ্নেরই উত্তর রয়েছে৷ জানা গিয়েছে, সবথেকে আশঙ্কাজনক জোন ৫-এ রয়েছে শ্রীনগর, ভুজ, দারভাঙা, গুয়াহাটি, তেজপুর,  সাদিয়া, পোর্ট ব্লেয়ার, মান্ডি, কোহিমা এবং জোরহাট৷ জোন ৪-এ রয়েছে কলকাতা, জলপাইগুড়ি, লুধিয়ানা, মোরাদাবাদ, পটনা, পিলভিট, শিমলা, রুরকি, অম্বালা, অমৃতসর, বাহরাইচ, বারাউনি, বুলন্দশহর, চণ্ডীগড়, আলমোরা এবং এ রাজ্যের  পার্বত্য জেলা দার্জিলিংয়ের নাম। অর্থাৎ জোন-৪ এর মধ্যে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের তিন শহর৷ তবে এখানেই শেষ নয়, ভূমিকম্প প্রবণ এই জোন ৪-এর মধ্যেই রয়েছে দেহরাদুন, দিল্লি, দেউরিয়া, দিনাজপুর, গাজিয়াবাদ, গ্যাংটক এবং গোরক্ষপুর৷ 

এদিকে, রাজাধানী দিল্লি ভূমিকম্পন-প্রবণ এলাকায় নাম লেখানোয় স্বভাবতই চিন্তায় কেন্দ্রের সরকার৷ পরিস্থিতি সামাল দিতে ভূমিকম্প-প্রবণ অঞ্চলগুলি নিয়ে সমীক্ষার কথাও চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে৷ 

দেখা যাচ্ছে ভারতে মোট ১০৭টি জায়গা রয়েছে, যেখানে ভূমিকম্পের প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে৷ এই সকল অঞ্চলের মাটি কেঁপে উঠলে ব্যপক ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা তৈরি হবে৷ গত ৫০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে হিমালয়ে ভূমিকম্প হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়ে রয়েছে। সেই বিপদ কখন নেমে আসবে তা কেউ জানে না। গত ৫ কোটি বছর ধরে ইন্ডিয়ান প্লেট এবং ইউরেশিয়ান প্লেট একে অপরের মধ্যে সেঁধিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে। তার জেরেই সম্প্রতি এত ভূমিকম্প হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ভূবিজ্ঞানীরা৷