বিমান দুর্ঘটনার পর আমাজ়নের জঙ্গলে ৪০ দিন বেঁচে ৪ শিশু! কীভাবে প্রাণরক্ষা?

বিমান দুর্ঘটনার পর আমাজ়নের জঙ্গলে ৪০ দিন বেঁচে ৪ শিশু! কীভাবে প্রাণরক্ষা?

কথায় আছে রাখে হরি মারে কে! জন্ম-মৃত্যু সবই ঈশ্বরের নিয়ন্ত্রণে। ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনার ৪০ দিন পর ৪ শিশুকে জীবিত উদ্ধার যেন মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসার মতই একটা ঘটনা। যা অবাক করছে সকলকে।  

গত ১ মে, আমাজ়নের জঙ্গলে ভেঙে পড়েছিল ছোট যাত্রীবাহী বিমান ‘সেসনা ২০৬’। মা এবং দুজন পাইলটের সঙ্গে সেই বিমানেই যাত্রা করছিল এই ৪ শিশু। বিমান দুর্ঘটনার পর ধরেই নেওয়া হয়েছিল, তারাও হয়তো আর বেঁচে নেই… কিন্তু সকলকে অবাক করে দিয়ে বিমান ভেঙে পড়ার প্রায় ৪০ দিন পরে দেখা মিলল তাদের। কলম্বিয়ার আমাজন জঙ্গল থেকে এই শিশুদের উদ্ধার করে সেদেশের সেনা বাহিনী। কলম্বিয়ান প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেট্রো বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। উদ্ধার করা শিশুদের বয়স যথাক্রমে ১৩ বছর, নয় বছর, চার বছর ও ১ বছর… ৪০ দিন ধরে প্রকৃতির বুকে নিজেদের টিকিয়ে রেখেছে উইটোটো জনজাতি সম্প্রদায়ভুক্ত এই শিশুরা। যা অকল্পনীয়…

জানা যায়, যাত্রীবাহী সেই বিমান জঙ্গলে ভেঙে পড়ার পর শিশুদের মা এবং দুই পাইলটের দেহ পাওয়া গেলেও শিশুগুলির দেখা মেলেনি। শিশুদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হলে, এক পর্যায়ে উদ্ধারকারীরা একটি শিশুর পানীয়ের বোতল, এক জোড়া কাঁচি, একটি চুলের ফিতে, আধ খাওয়া ফলের টুকরো দেখতে পান। জঙ্গলের মধ্যে ছোট পায়ের ছাপও আবিষ্কার করেছিলেন উদ্ধারকারীরা। যা থেকে ধারণা করা হচ্ছিল যে তারা দুর্ঘটনা থেকে হয়তো বেঁচে গিয়েছে। আমাজনের গভীর জঙ্গলে তন্ন তন্ন করে তল্লাশি চলে। অবশেষে ৪০ দিন পর শিশুদের খোঁজ পাওয়া যায়… 

কলম্বিয়ান প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেট্রো দিনটিকে “মিরাক্যাল ডে” বলে অভিহিত করেছেন। টুইটে তিনি লেখেন, “এই ঘটনা পুরো দেশের জন্য আনন্দ। এতদিন শিশুরা একা ছিল, তারা নিজেরাই সম্পূর্ণ বেঁচে থাকার একটি উদাহরণ অর্জন করেছে। যা ঐতিহাসিক। এই শিশুরা আজ শান্তির সন্তান এবং কলম্বিয়ার সন্তান।”

শিশুদের ছবিও টুইটে শেয়ার করেছেন প্রেসিডেন্ট। ছবিতে দেখা যাচ্ছে, গভীর জঙ্গলে সামরিক পোশাক পরা কয়েকজনের সঙ্গে রয়েছে ৪ শিশু। শিশুদের খোঁজে সেনাবাহিনীর ১০০ জন সদস্যকে নিযুক্ত করে কলম্বিয়া সরকার। অনুসন্ধান অভিযানে সাহায্য করার জন্য তিনটি হেলিকপ্টার ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও উদ্ধারে হাত লাগায় অ্যামাজনে বসবাসকারী আদিবাসী সম্প্রদায়ের ৭০ জন সদস্য। শিশুরা যাতে জঙ্গলের মধ্যে চলাচল না করে, তারজন্য হুইটোটো ভাষায় শিশুদের পরিবারের বার্তা হেলিকপ্টার থেকে প্রচার করা হয়। অবশেষে দুর্ঘটনার ৪০ দিন পর জীবিত উদ্ধার করা হয় শিশুদের। শারীরিক চিকিৎসরা পর শিশুদের পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে কলম্বিয়া প্রশাসন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

2 × one =