বেঙ্গালুরুর: একুশ শতকের পৃথিবীতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি যেভাবে ক্রমোন্নয়নের ধারা বজায় রেখে এগিয়ে চলেছে দিনের পর দিন, তাতে পদে পদে প্রযুক্তির বিস্ময়কর ব্যবহারও আর অবাক করে না আমাদের। প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর নজিরও বিরল নয়। এদিনের ঘটনা আরো একবার বিজ্ঞান প্রযুক্তির সেই আশীর্বাদকেই যেন স্মরণ করিয়ে দিল।
নিজস্ব ড্রোন ব্যবহার করে মাঝ সমুদ্রে বিপাকে পড়া জেলেদের উদ্ধার করে এনেছে ১৯ বছর বয়সী এক যুবক, এদিন এমনটাই জানা গেছে সূত্রের খবরে। আরব সাগরের মাঝে নৌকাডুবি হয়ে ঘোর বিপদে পড়েছিলেন ৪ জন জেলে। এদিন তাদেরকেই কার্যত একার চেষ্টায় উদ্ধার করে আনে দেবাঙ্গ সুবিল নামের এক যুবক। তার এই কাজ ইতিমধ্যেই সাড়া ফেলে দিয়েছে বিভিন্ন মহলে।
জানা গেছে, বছর উনিশের দেবাঙ্গ সুবিল কেরালার থ্রিস্সুর এলাকার বাসিন্দা। সে সম্প্রতি কেরালার নাট্টিকা বিচ থেকে একটি নৌকা সমুদ্রে হারিয়ে যাওয়ার কথা শোনে। দেবাঙ্গ জানতে পারে হারিয়ে যাওয়া ওই নৌকার সন্ধান না পেয়ে বেশ চিন্তিত উদ্ধারকর্মীরা। এ ব্যাপারে নিজের ড্রোনটি ব্যবহার করার পরামর্শ দেয় দেবাঙ্গ। কিন্তু বলা বাহুল্য, প্রথমে ‘বাচ্চা’ ছেলে মনে করে তাঁর কথায় পাত্তা দেয় নি কেউই। বেঙ্গালুরুর ক্রাইস্ট ইউনিভার্সিটির ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্র দেবাঙ্গ সুবিল এরপর নিজের পরামর্শ নিয়ে এলাকার বিধায়কের দ্বারস্থ হয়। তাঁর হস্তক্ষেপে অবশেষে উদ্ধারকারীদের নৌকায় জায়গা হয় দেবাঙ্গর। সঙ্গে ছিল তাঁর ড্রোন।
এ ব্যাপারে সাংবাদিকদের কাছে নিজের অভিজ্ঞতার কথা জানায় দেবাঙ্গ সুবিল।মাঝ সমুদ্রে ড্রোনের কারসাজি বর্ণনা করতে গিয়ে রীতিমতো উচ্ছ্বসিত শোনায় তার গলা, “আমাদের নৌকো ১১ মাইল পথ যাওয়ার পর আমি ড্রোনটা ব্যবহার করি, আর ১০ মিনিটের মধ্যেই আমি একজন মানুষকে সমুদ্রের মধ্যে কাঠের টুকরো আঁকড়ে ভাসতে দেখি। আমাদের নৌকো তখন সেদিকে নিয়ে যাওয়া হয়। ২০০ মিটার দূরে আরো দুই জেলেকে আমরা দেখতে পাই।” চতুর্থ ব্যক্তিকে খুঁজে পেতে অবশ্য কিছুটা বেগ পেতে হয় বলে জানিয়েছে দেবাঙ্গ। তবে ড্রোনের দৌলতেই মেলে তাঁর সন্ধানও। সূত্রের খবর, ৪ জন জেলেই বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। নৌকাডুবির পর প্রায় ৬ ঘন্টা ধরে সমুদ্রে ছিলেন তাঁরা। থ্রিস্সুরের বিধায়ক গীতা গোপী জানিয়েছেন, “যে তরুণের জন্য আজ ৪টি প্রাণ বাঁচল আমরা তাকে স্যালুট জানাই।” দেবাঙ্গকে সংবর্ধনা দেওয়ার কথাও ভাবা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।