রাজ্যে ১৭ জেলায় ছড়িয়েছিল নিয়োগ দুর্নীতির জাল, চার্জশিটে দাবি ইডি-র!

রাজ্যে ১৭ জেলায় ছড়িয়েছিল নিয়োগ দুর্নীতির জাল, চার্জশিটে দাবি ইডি-র!

কলকাতা: রাজ্যের শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে জল ঘোলা হয়েছে আগেই।  দুর্নীতির শিকড় যে কলকাতা ছাড়িয়ে জেলায় জেলায় ছড়িয়ে পড়েছিল, সেকথা আগেই অনুমান করেছিলেন তদন্তকারীরা। এবার  চার্জশিটেও মিলল সেই ইঙ্গিত। চার্জশিটে ইডির দাবি, রাজ্যে নিয়োগ দুর্নীতির জাল ছড়িয়ে পড়েছিল ১৭ টি জেলায়। 

সোমবার শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় ও অয়ন শীলের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। সেই চার্জশিটে শান্তনু ও অয়নের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির উল্লেখ করার পাশাপাশি কী ভাবে, কোথায় কোথায় চাকরি বিক্রি হয়েছে? সমস্তটাই উল্লেখ করা হয়েছে। 

চার্জশিটে উল্লেখ, তৃণমূলের বহিষ্কৃত নেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে প্রাথমিকের চাকরিপ্রার্থীদের যে তালিকা হাতে পেয়েছিলেন তদন্তকারীরা সেখান থেকে জানা গিয়েছে, রাজ্যের ১৭ জেলায় নিয়োগ দুর্নীতির জাল ছড়িয়েছিল। মোট ৩৪৬ জন প্রার্থীর নাম রয়েছে তালিকায়।  

তালিকায় কোন কোন জেলার নাম?
 
কলকাতা থেকে শুরু করে রাজ্যের উত্তর, দক্ষিণ সব প্রান্তেই ছড়িয়ে পড়েছিল শান্তনুদের দুর্নীতির জাল। যা দেখে একপ্রকার হতবাক হয়েছেন তদন্তকারীরা। তালিকায় নাম রয়েছে- 

  • কোচবিহার
  • মালদহ
  • জলপাইগুড়ি
  • শিলিগুড়ি
  • উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর
  • হুগলি
  • নদীয়া
  •  বর্ধমান
  • বাঁকুড়া
  •  বীরভূম
  • পুরুলিয়া
  •  মুর্শিদাবাদ
  •  পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর
  •  উত্তর ২৪ পরগনা
  • কলকাতা

 

সূত্রের দাবি, প্রাথমিকে শিক্ষকপদের জন্য মোট ৩৪৬ জনের নাম রয়েছে তালিকায়। যার মধ্যে আবেদনকারীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি বীরভূমে। ৩৪৬ জনের তালিকায়-বীরভূম থেকে ১৪৮, মুর্শিদাবাদ থেকে ৬৭, মালদা থেকে ২৬, কোচবিহার থেকে ১৮, বর্ধমান থেকে ১৫। এছাড়াও বিভিন্ন জেলার চাকরিপ্রার্থীদের নাম রয়েছে। সবচেয়ে কম প্রার্থী দক্ষিণ ২৪ পরগনার। সেখান থেকে মাত্র একজন প্রার্থী চাকরির জন্য শান্তনুদের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বলে খবর।

চার্জশিটে ইডির দাবি,  প্রাইমারি শিক্ষক হিসাবে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার জন্যই এসেছিল ওই নামের তালিকা। জেরায় শান্তনু জানিয়েছেন, বীরভূমের সুখেন রানা এবং মুর্শিদাবাদের সুজল আনসারির কাছ থেকে তাঁর অফিসে ওই তালিকা এসেছিল। জেরার মুখে, সুখেন এবং  সুজলকে এজেন্ট হিসেবে উল্লেখ করেছেন শান্তনু। চার্জশিটে এই ২ জনের নামও উল্লেখ করেছে ইডি।

বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতার দাবি, কুন্তল ঘোষের সূত্রেই সুখেন রানা এবং সুজল আনসারির সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়েছিল। সিটি সেন্টার ২-এর কাছে যে উজ্জ্বলা অ্যাপার্টমেন্টে কুন্তলের ফ্ল্যাট, সেখানেই তাঁদের আলাপ হয়। দুর্নীতির সঙ্গে শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় ও কুন্তল ঘোষের প্রত্যক্ষ যোগ ছিল বলে চার্জশিটে দাবি করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।  চার্জশিটে দাবি, ২০১৪-র টেট দুর্নীতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন তৃণমূলের এই ২ বহিষ্কৃত নেতা।  

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

five × 2 =