১০ হাজার মসজিদে উড়ল তিরঙ্গা, সংবিধান পাঠ!  বাম রাজ্যে নয়া নজির

১০ হাজার মসজিদে উড়ল তিরঙ্গা, সংবিধান পাঠ!  বাম রাজ্যে নয়া নজির

তিরুবন্তপুরম: প্রজাতন্ত্র দিবসের মত দেশের গৌরবান্বিত ইতিহাস কে সমৃদ্ধ করল কেরলের মুসলিম সম্প্রদায়ের এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ। দেশের ৭১তম প্রজাতন্ত্র দিবসের প্রাক্কালে প্রথমবার কেরালায় একসঙ্গে প্রায় দশ হাজার মসজিদে উড়ল ভারতের জাতীয় পতাকা যা নিঃসন্দেহে ঐতিহাসিক। স্টেট ওয়াক অফ বোর্ডের নির্দেশিকা মেনেই এই বিশেষ দিনটি 'সংবিধান সুরক্ষা' দিবস হিসেবে পালন করা হল কেরলের মসজিদে মসজিদে।

নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে বিশ্বের সবথেকে বড় গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে যখন ভারতকে কাঠগড়ায় তুলছে জাতিসংঘ। নাগরিক বৈধতা দেওয়ার তালিকা থেকে  মুসলিম সম্প্রদায়ের নাম বাদ পড়ায় যখন সরকারের বিরুদ্ধে সংবিধান অমান্য করার মত অভিযোগ উঠছে। সরকারের নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ, বিরোধিতা ও আন্দোলনের জেরে দেশ যে কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, সেই কথা মাথায় রেখেই সার্বভৌমত্বের ও একতার বার্তা পৌঁছে দিতে প্রজাতন্ত্র দিবসের কর্মসূচির বিষয়ে আগে থেকেই নির্দেশিকা পাঠিয়েছিল কেরালার স্টেট ওয়াকফ বোর্ড।

নির্দেশিকা  অনুসারে প্রজাতন্ত্র দিবসের প্রাক্কালে প্রতিটি মসজিদ প্রাঙ্গণগ সাজিয়ে তোলা হয়েছিল সাদা, সবুজ এবং গেরুয়া রঙে। রাজ্যের সমস্ত মসজিদে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের পাশাপাশি ভারতীয় সংবিধান রক্ষার অঙ্গীকারের লক্ষ্যে সংবিধানের প্রস্তাবনাও পাঠ করা হয়। সংবিধানের প্রস্তাবনাগুলি নির্দেশিকার সঙ্গেই রাজ্যের সমস্ত মসজিদগুলিতে পাঠানো হয়েছিল। 

দেশের প্রতিটি প্রান্তে সম্প্রীতির বার্তা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে স্টেট ওয়াকফ বোর্ডের অধীনস্থ সমস্ত মসজিদ ও একাধিক মুসলিম সংগঠনকে প্রজাতন্ত্র দিবস উদযাপনের উপর জোর দেওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছিল নির্দেশিকায় । 

দেশের সাম্প্রতিক অস্থিরতার পরিবেশে এমন ঘটনা সত্যিই   দৃষ্টান্ত স্থাপন করল, যখন নাগরিকত্ব সংশোধন আইন (সিএএ) এবং জাতীয় নাগরিকত্ব নিবন্ধক (এনআরসি) ইস্যুতে প্রতিবাদী রাজ্য হিসেবে মুখ্য ভূমিকা পালন করছে  কেরালা। কিছুদিন আগেই দেশের মধ্যে প্রথম রাজ্য হিসেবে কেরালা বিধানসভা সিএএ-র বিরুদ্ধে প্রস্তাব পাস করে । দেশের মধ্যে কেরল সরকারই প্রথমবার সিএএ-র বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে হলফনামাও দাখিল করে । যে আইনে পাকিস্তান, আফগানিস্তান এবং বাংলাদেশ থেকে আগত ৩১ ডিসেম্বর ২০১৪-এর আগে ভারতে আগত শুধুমাত্র অমুসলিমদের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।  বিষয়টিকে সংবিধান অমান্য এবং মূল্যবোধের পরিপন্থী বলেই মনে করছে প্রতিবাদীরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *