সুন্দরবন: পয়লা অক্টোবর থেকে শুরু হয়েছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ সব কলেজের ফাইনাল সেমেস্টার পরীক্ষা। কিন্তু মে মাসের ঘূর্ণিঝড় আমফানের ধাক্কা সুন্দরবন-সাগরদ্বীপের ছাত্রছাত্রীরা এখনও সামলে উঠতে পারেনি। ওই এলাকার অধিকাংশ পড়ুয়ার স্মার্টফোন নেই, দ্রুত গতির ইন্টারনেট পরিষেবা নেই। তাই প্রশ্নপত্র ডাউনলোড এবং উত্তরপত্র আপলোড দুই ক্ষেত্রেই তাদের সমস্যার কথা মাথায় রেখে প্রত্যন্ত এলাকার ছাত্রছাত্রীদের জন্য বাড়তি উদ্যোগ নিয়েছে কলেজ গুলির শিক্ষকরা। নৌকায় করে গিয়ে নিজেরাই উত্তরপত্র সংগ্রহ করলেন তাঁরা পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে।
ওই এলাকার কলেজ গুলিতে আগে যে পরিষেবা দেওয়ার বন্দবস্ত ছিল, তা আমফান পরবর্তীকালে পুনরায় চালু করা যায়নি। পাশাপাশি এই সমস্ত কলেজে মূলত বোটখালি, বঙ্কিমনগর, মুড়িগঙ্গা, গোবিন্দপুর অঞ্চলের পড়ুয়ারা পড়াশোনা করতে আসে, ঘূর্ণিঝড়ে যাদের অনেকেরই স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যহত হয়েছে। তাই এই পরিস্থিতিতে তারা কীভাবে কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রশ্নপত্র দেখবে এবং কেমন ভাবেই তারা উত্তরপত্র আপলোড করবে তা নিয়ে সংশয় ছিল কলেজ গুলির অন্দরে। অবশেষে এই সমস্যার সমাধান করলেন খোদ শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মীরাই।
নামখানার শিবানী মণ্ডল মহাবিদ্যালয়ের টিচার ইনচার্জ দয়ালচাঁদ সর্দার আগেই জানিয়েছিলেন, ‘‘পরীক্ষার দিনগুলিতে কলেজে কন্ট্রোল রুম খুলতে হবে। পরীক্ষার্থীরা যদি ফোনে জানায় যে, তারা প্রশ্নপত্র ডাউনলোড করতে পারছে না, তা হলে ফোনেই বলতে হবে। এ ছাড়া পথ নেই। হয়তো শেষে গাড়ি নিয়ে গিয়ে আমাদেরই উত্তরপত্র সংগ্রহ করতে হবে।’’ দেখা গেল বাস্তবে সেটাই হয়েছে। পরীক্ষা শুরু পর একাধিক পরীক্ষার্থীর ইন্টারনেট কানেকশন না থাকায় সমস্যার মুখে পড়ে তারা। এই অঞ্চলের পরীক্ষার্থীরা অনেকেই সময় মতো প্রশ্নপত্র পায়নি। পরীক্ষা শুরুর কিছুক্ষণ পর হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে প্রশ্নপত্র দিয়ে দেওয়া হয় কলেজ তরফে। এরপর দুর্গম গোসাবা ব্লকের ৩৮০ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে মোট ২৭০ জন পরীক্ষা দেয়। বাকি ১১০ জনের অনলাইনে পরীক্ষা দেওয়ায় সমস্যা থাকায়, তাদের উত্তরপত্র কলেজের শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মীরা নদী পেরিয়ে নৌকায় করে গিয়ে সংগ্রহ করেন।