তরুণ হাতে জ্বলল কিরণ! অভাবের সংসারে স্বপ্নের উড়ান ‘উজ্জ্বল কন্যাশ্রী’র

জঙ্গলমহলের এক লড়াকু কিশোরির পাশে দাঁড়িয়েছেন রাজ্য সরকার ও কলকাতার এক ব্যবসায়ী। খয়ের পাহাড়ি গ্রামের কিরণ কেশরবাণী একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। ১৪ আগস্ট কন্যাশ্রী দিবসের দিন রাজ্যের নারী ও শিশুবিকাশ এবং সমাজকল্যাণ দফতর কিরণকে 'এক উজ্জ্বল কন্যাশ্রী' হিসাবে শংসাপত্র দিয়েছে।

 

গোয়ালতোড়: জঙ্গলমহলের এক লড়াকু কিশোরির পাশে দাঁড়িয়েছেন রাজ্য সরকার ও কলকাতার এক ব্যবসায়ী। খয়ের পাহাড়ি গ্রামের কিরণ কেশরবাণী একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। ১৪ আগস্ট কন্যাশ্রী দিবসের দিন রাজ্যের নারী ও শিশুবিকাশ এবং সমাজকল্যাণ দফতর কিরণকে 'এক উজ্জ্বল কন্যাশ্রী' হিসাবে শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে।

করোনা পরিস্থিতির আবহে এখন পড়ুয়াদের ভরসা অনলাইন পড়াশোনা। কিন্তু অভাবের সংসারে স্মার্টফোন কেনার সামর্থ্য নেই কিরণের পরিবারের। আর জঙ্গলে ঘেরা গ্রামে ইন্টারনেট পরিষেবাও অতি ক্ষীণ। কিন্তু পড়াশোনা করার তাগিদ কোনও দিন ছেড়ে দেয়নি কিরণ। তাই রোজ সকালে সাইকেলে করে ৮ কিলোমিটার পথ পেরিয়ে কিরণ গোয়ালতোড়ের বুলানপুরে পড়তে আসে। ওই কোচিং সেন্টারের শিক্ষকের স্মার্টফোনই একমাত্র ভরসা কিরণের।

সংবাদপত্রে কিরণের এই খবর প্রকাশ্যে আসে। এরপর অনেকেই তার পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি দেন। অবশেষে কলকাতার এক ব্যবসায়ী তরুণ রায় একটি স্মার্টফোনের ব্যবস্থা করে দেন কিরণকে। ইতিমধ্যেই সিমলাপালের এক দোকান থেকে সেই স্মার্টফোনটি হাতে পেয়েছে কিরণ। পাশাপাশি ব্লক প্রশাসনের এক অনুষ্ঠানে কন্যাশ্রী দিবসের দিন অর্থাৎ ১৪ আগস্ট, রাজ্যের নারী ও শিশুবিকাশ এবং সমাজকল্যাণ দফতরের পক্ষ থেকে কিরণকে একটি শংসাপত্র দেওয়া হয়। যেখানে কিরণকে 'একজন উজ্জ্বল কন্যাশ্রী' হিসাবে উল্লেখ করা হয়। এই অনুষ্ঠানে শংসাপত্রের সঙ্গেই বিভিন্ন শিক্ষা সামগ্রী তুলে দেওয়া হয় কিরণের হাতে।

সারেঙ্গার বিডিও সংলাপ বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, 'কিরণের বাবা নেই, অভাবের সংসার, খুব কষ্ট করেই পড়াশোনা করে। কিরণকে উৎসাহিত করতে এদিন শুধুমাত্র তাকেই সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে।' কলকাতার ওই ব্যবসায়ী তরুণ রায় বলেছেন, “অভাবী এক মেয়ে এত কষ্ট করে পড়াশোনা করছে দেখে খুব খারাপ লেগেছিল। ওকে বলেছি তিন মাস অন্তর অন্তর ওর ফোন রিচার্জ করে দেব।” তরুণ বাবু এগিয়ে চলার লক্ষ্যে আরও একধাপ এগিয়ে দিয়েছেন কিরণকে। ফোন পেয়ে খুব খুশি কিশোরি। কিরণ জানিয়েছে, এই ফোন পেয়ে তার সত্যিই খুব উপকার হয়েছে। এখন থেকে রোজ সকালে ওই ৮ কিলোমিটার পথ পেরিয়ে পড়তে যেতে হবে না। কিরণের কথায়, রাজ্য সরকার কন্যাশ্রীদের পাশে আছেন সর্বদা। কিরণের মা চান মেয়ে উচ্চশিক্ষা লাভ করুক। সকলে পাশে থাকলে মায়ের ইচ্ছা পূরণে সার্থক হবে বলে জানিয়েছে কিরণ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

three × three =