কলকাতা: ভারতীয় ফুটবলের কিংবদন্তী ‘চাইনিজ ওয়াল’ গোষ্ঠ পালের ৪৪ তম মৃত্যুদিনে রাগে দুঃখে মোহনবাগান রত্ন ফিরিয়ে দিলেন তাঁর পরিবার।
গোষ্ঠ পালের ৪৪ তম মৃত্যুদিনের দিন সকালে তাঁর ছেলে নিরাংশু পাল ক্লাব তাঁবু তে আসেন মোহনবাগান রত্ন ফিরিয়ে দিতে। ওয়ি সময় ক্লাব তাঁবু তে ছিলেন, ফুতবল সচিব স্বপন বন্দোপাধ্যায়, কোষাধ্যক্ষ সত্যজিৎ চ্যাটার্জী। দুকনেই নীরাংশুবাবুর এই পদক্ষেপে হতচকিত হয়ে গিয়ে এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে অনুরোধ করেন, কিন্তু নীরাংশু বাবু কিছুতেই মত পরিবর্তন না করে মোহনবাগান রত্ন ফিরিয়ে দিয়ে ক্লাব ছাড়েন।
১৯১৩ সালে ওপার বাংলা থেকে কলকাতায় খেলতে আসেন গোষ্ঠ পাল। তারপর আমৃত্যু তিনি মোহনবাগানের সঙ্গেই ছিলেন। ১৯৬১ সালে তিনিই হন ভারতীয় ফুটবলের প্রথম পদ্মশ্রী। তাঁর পরিবারের সদস্য দের খুব ইচ্ছা ছিল, মোহনবাগানে গড়া হবে গোষ্ঠ বাবুর স্মারক সমৃদ্ধ মিউজিয়াম। যেখানে সবুজ মেরুন যোদ্ধাদের পাওয়া স্মারক সাজানো থাকবে। সেই ভাবনা থেকেই মোহনবাগানের হয়ে খেলে পাওয়া সমস্ত স্মারক ১৯৯২ সালে তখনকার ক্লাব প্রশাসক দের হাতে তুলে দিয়েছিলেন ওনার পরিবার। স্মারকগুলি সম্মানের সঙ্গে পরবর্তী প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন অঞ্জন মিত্র-টুটু বসুরা। ২০০৪ সালে প্রয়াত গোষ্ঠ বাবুকে মোহনবাগান রত্ন দেওয়া হয়।
তারপরেই তখনও সংগ্রহশালা না তৈরি হওয়ায় বাবার স্মারকগুলি ঘরে ফেরানোর উদ্যোগ নেন নীরাংশুবাবু। তখনই ক্লাবকর্তাদের অবহেলার আরও নজির সামনে আসে তাঁদের। স্মারক ফেরত চাইতে গিয়ে দেখা যায় বহু স্মারকেরই অস্তিত্ব নেই। বহু স্মারক ভাঙাচোরা। আলমারির এককোণে অবহেলায় ফেলে রাখা স্মারকের ব্যাগ খুলতে চোখে পড়ে পদ্মশ্রী স্মারকটিই নেই। নেই মোহনবাগানের আদি স্মারকটিও। যা আদতে দেওয়া হয়েছিল ১৯১১ সালের আইএফএ শিল্ড জয়ী সদস্য দের। ঐতিহাসিক ভাবে গুরুত্বপূর্ণ স্মারক নেই দেখে ভেঙে পড়েন নীরাংশুবাবু। থানায় ডায়েরীও করেন তিনি। না পাও্যা স্মারকের তালিকা ক্লাবকর্তাদের কাছে জমা দিয়েও মেলেনি কোনও সমাধান। শেষে পদ্মশ্রী উদ্ধারের আর কোনো আশা না দেখে রাগে দুঃখে মোহনবাগান রত্ন ফেরত দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন গোষ্ঠ বাবুর পরিবার।