কলকাতা: টিভির পর্দায় ভেসে উঠছে একের পর এক খবর৷ সংবাদ পাঠ করে চলেছেন সংবাদ পাঠিকা৷ কিন্তু খবরের চেয়ে দর্শকের নজর যেন অ্যাঙ্কারের দিকেই৷ হবে নাই বা কেন? তাঁর পরনে বোতামহীন সাফারি কোট। শরীরে নেই অন্তর্বাসের চিহ্ন৷ পোশাকের আড়ালে উঁকি দিচ্ছে স্তন যুগল৷ স্পষ্ট বক্ষবিভাজিকা।
আরও পড়ুন- মনে হল যোনি থেকে একটা আস্ত… ১৭ বছর আগের স্মৃতি আওড়ালেন শ্রীলেখা
টেলিভিশনের পর্দায় এহেন লাস্যময়ী সংবাদ পাঠিকাদের দেখে তখন পর্দার ওপাড়ে উপচে পড়েছে দর্শকের ভিড়৷ প্রতিযোগিতার ইঁদুর দৌড়ে নিজেদের এগিয়ে নিয়ে যেতে এভাবেই সংবাদ পাঠ শুরু করেছিল আলবেনিয়ার বাণিজ্যিক চ্যাকনেল ‘জার’৷ উষ্ণতা ছড়িয়ে খুব সহজেই পিছনে ফেলে দেয় বাকি প্রতিযোগীদের৷ এখনও পর্যন্ত জনপ্রিয়তার বিচারে শীর্ষস্থানটি ধরে রেখেছে ‘জার’।
১৯৬০ সালে প্রথম আলবেনিয়ায় টেলিভিশনের আত্মপ্রকাশ৷ সেই সময় ভিন্ন স্বাদের বিভিন্ন অনুষ্ঠান নিয়ে শুরু হয়েছিল টেলিভিশন চ্যানেলের যাত্রা। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে চ্যানেলের সংখ্যা। সময়ের স্রোতে নব্বইয়ের দশকে জন্ম হয় ‘জার’-এর৷
জার একটি বাণিজ্যিক চ্যানেল। সিনেমা, বিনোদনমূলক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পাশাপাশি খবরও সম্প্রচারিত হত সেখানে। তবে ঠিক কত তারিখে এই চ্যানেলের যাত্রা শুরু হয়েছিল, সে সম্পর্কে স্পষ্ট উল্লেখ নেই।
শুরুতেই এতটা জনপ্রিয় ছিল না জার৷ বরং প্রতিযোগিতার দৌড়ে বাকিদের তুলনায় বেশ কিছুটা পিছিয়ে পড়েছিল তাঁরা৷ টিআরপি রেটও ছিল তলানিতে৷ প্রথমে দর্শকের মন বুঝে অনুষ্ঠানগুলি সাজানোর চেষ্টা করেছিল চ্যানেল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তাতে বিশেষ লাভ হয়নি৷ একটা সময় তো চ্যানেল বন্ধ করে দেওয়ার কথাও ভাবা হচ্ছিল। কারণ চ্যাযনেলটি চালাতে যে পরিমাণ অর্থ ব্যয় করা হয়েছিল, তার এক শতাংশও লাভ হচ্ছিল না৷
কী ভাবে চ্যানেলকে বাঁচানো যায়, সেই নিয়ে বহু পরিকল্পনা হয়৷ অনেক আলাপ-আলোচনার পর দর্শক ধরে রাখার একটা অনন্য উপায় বার করে চ্যানেল কর্তৃপক্ষ৷ এই চমক জন্য বোধহয় প্রস্তুত ছিলেন না আলবেনিয়ার দর্শকরাও।
এই চ্যানেলে সম্প্রারিত বাকি অনুষ্ঠানগুলি সে ভাবে চলতই না। যেটুকু দর্শক ছিল, তাঁরা খবরটুকুই দেখত। এক সন্ধ্যায় খবর দেখতে বসে ভিমড়ি খান তাঁরা৷ চোখ আটকে যায় টিভির পর্দায়।
পর্দার ওপারে কমবয়সি সুন্দরী সংবাদ পাঠিকা সংবাদ পরিবেশন করছে। যাঁর ঊর্ধ্বাঙ্গে শুধুই বোতাম খোলা কোট। নেই অন্তর্বাস৷ এহেন সংবাদ পাঠিকার খবর দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে চিরিদেকে৷ সব চ্যালেন ছেড়ে জার টিভির সামনে ভিড় জমাতে থাকেন দর্শকরা৷ বাড়ি বাড়ি চলতে থাকে একটাই চ্যানেল। হু হু করে বাড়তে থাকে টিআরপি৷ শোনা যায়, প্রথম দিনেই ওই চ্যা্নেলটি যা ব্যাবসা করেছিল, তা এত দিনের আর্থিক ক্ষতির অর্ধেক পূরণ করে দিয়েছিল। এর পর থেকে এটাই হয়ে যায় তাঁদের ড্রেস কোট৷ এক লাফে আকাশ ছোঁয় চ্যানেলের টিআরপি৷
এর পর আরও কিছু সংবাদ পাঠিকা নিয়োগ করা হয়৷ রমরমিয়ে চলতে শুরু করে জার৷ এই বিষয়টি সারা বিশ্বে সাড়া ফেলেছিল৷ পোশাক বিতর্কের সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে টিআরপিও৷ অনেকে এই চ্যানেলের বিরোধিতাও করে৷ তবে সে দিকে কর্ণপাতও করেননি চ্যানেলের কর্ণধান ইসমেত৷ কারণ তিনি ততক্ষণে দর্শকের সমর্থন পেয়ে গিয়েছেন৷ এএফপি-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘‘আমরা যৌনতা বিক্রি করছি না৷ শুধুমাত্র সংবাদ পাঠিকাদের ড্রেস কোটে বদল এনেছি৷’’ চ্যানেলের সঙ্গে সঙ্গে জনপ্রিয় হয়ে যান সংবাদ পাঠিকারাও৷
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”YouTube video player” width=”560″>