পরিচালক তরুণ মজুমদারের অবস্থা অতি সংকটজনক, হাসপাতালে মুখ্যমন্ত্রী

পরিচালক তরুণ মজুমদারের অবস্থা অতি সংকটজনক, হাসপাতালে মুখ্যমন্ত্রী

কলকাতা: টলিউডের বিশিষ্ট পরিচালক ৯২ বছর বয়সী তরুণ মজুমদারের শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি। হাসপাতাল সূত্রে খবর, অতি সংকটজনক তরুণ মজুমদার। যকৃতের জনিত সমস্যা নিয়ে এইমুহূর্তে বিশিষ্ট এই পরিচালক ভর্তি কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে। দিন দুয়েক আগেই ৯২ বয়সী পরিচালককে এই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে এবং আপাতত সেখানেই তিনি চিকিৎসাধীন রয়েছেন। জানা যাচ্ছে বৃহস্পতিবার অসুস্থ এইউ পরিচালককে দেখতে হাসপাতালে গিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরিচালকের পরিবারের সদস্যের সঙ্গে তিনি বেশ কিছুক্ষণ কথা বলেছেন বলেও খবর।

উল্লেখ্য, ৯২ বছর বয়সী টলিউডের বিশিষ্ট এই পরিচালক সত্তরের দশকে একের পর এক হিট সিনেমা উপহার দিয়েছেন দর্শক মন্ডলীকে। তবে পরিচালক ছাড়াও তরুণ মজুমদারের আরও একটি পরিচয় রয়েছে। বাংলার রাজনৈতিক ক্ষেত্রে তাঁকে বরাবরই মমতা বিরোধী মুখ হিসেবেই দেখা গিয়েছে। কিন্তু রাজনৈতিক মতাদর্শে বিরোধিতা থাকলেও সৌজন্যবোধে যে কোনো কমতি নেই বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও একবার সেটাই প্রমাণ করলেন। সমস্ত রাজনৈতিক সমীকরণ এবং বিভাজনকে দূরে সরিয়ে এদিন তরুণ মজুমদারের শারীরিক অসুস্থতার খবর পেয়েই মুখ্যমন্ত্রী ছুটে যান হাসপাতলে এবং তাঁর পরিবার-পরিজনের সঙ্গে কথাও বলেন। তবে মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও আরও কয়েকজন বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ তরুণ মজুমদারকে দেখতে এই কয়েকদিনে হাসপাতলে গিয়েছেন বলে খবর। জানা যাচ্ছে মুখ্যমন্ত্রীর আগে পরিচালককে দেখতে হাসপাতালে যান রাজনীতিবিদ কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়, বিমান বসুর মতো বিরোধী দলনেতারাও।

অন্যদিকে পরিচালকের পরিবার সূত্রে খবর, এই মুহূর্তে তরুণ মজুমদারের শারীরিক অবস্থা একেবারেই ভালো নয়। তার চিকিৎসার জন্য একটি বিশেষ মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। সেই বোর্ডে রয়েছেন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ সৌমিত্র ঘোষ, হূদরোগ বিশেষজ্ঞ সরোজ মন্ডল, নেফ্রোলজিস্ট অর্পিতা চৌধুরী, সিসিইউ বিশেষজ্ঞ অসীম কুণ্ডুর মত এসএসকেএমের বিশিষ্ট চিকিৎসকরা। দিন দুয়েক আগেই হাসপাতাল সূত্রে জানা যায় প্রায় এক মাস ধরে তরুণ মজুমদার কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন। এর সঙ্গেই সদ্য তাঁর শ্বাসকষ্টের সমস্যা এবং ডায়াবেটিসের সমস্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় সোমবার কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে পরিচালককে ভর্তি করা হয়।

তরুণ মজুমদারের বিখ্যাত কিছু ছবির মধ্যে আছে ‘কাঁচের স্বর্গ’ (১৯৬২), বালিকা বধূ (১৯৬৭), কুহেলী (১৯৭১), শ্রীমান পৃথ্বীরাজ (১৯৭৩), দাদার কীর্তি (১৯৮০)। তাঁর পরিচালনায় দর্শক পেয়েছে ‘আলো’, ভালোবাসা ভালোবাসা’র মতো ছায়াছবিও। এর মধ্যে ‘কাঁচের স্বর্গ’ ছবির জন্য তিনি প্রথমবার জাতীয় পুরস্কার পান। এছাড়াও চারটি জাতীয় পুরস্কার, সাতটি বি.এফ.জে.এ. সম্মান, পাঁচটি ফিল্মফেয়ার পুরস্কার ও একটি আনন্দলোক পুরস্কার রয়েছে তাঁর ঝুলিতে। ১৯৯০ সালে তাঁকে পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত হন তরুণ মজুমদার। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

15 + 10 =