মুম্বই: যে কোনও মুহূর্তে তাঁদের গ্রেফতার করতে পারে সিবিআই। আর সেই আশঙ্কায় সুশান্ত মামলার দ্রুত শুনানি চেয়ে বম্বে হাই কোর্টে আপিল করলেন অভিনেতার দুই দিদি প্রিয়াঙ্কা সিং এবং মিতু সিং।
বিচারপতি এসএস শিন্ডে এবং বিচারপতি এমএস কর্নিকের ডিভিশন বেঞ্চ তাঁদের আগে এই দ্রুত শুনানির আবেদনের কারণ জানতে চায়। তখনই প্রিয়াঙ্কা ও মিতু এ কথা জানান। অভিনেত্রী রিয়া চক্রবর্তী তাঁদের বিরুদ্ধে যে এফআইআর দায়ের করেছেন তা রদ করার জন্য দুই বোন এই আবেদন করেন। তাঁদের পক্ষের আইনজীবী মাধব থোরাত বলেন সুশান্তের দুই বোনের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে এফআইআর রয়েছে। অতএব তাঁরা ইতিমধ্যেই মামলায় অভিযুক্ত। আর এ কারণেই দুজন ভয় পাচ্ছেন, যে কোনও সময় তাঁদের গ্রেফতার করা হতে পারে। তাই আবেদনে প্রিয়াঙ্কা ও মিতু অন্তর্বর্তীকালীন জামিন চেয়েছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও জোরালো পদক্ষেপ না নেওয়ারও আবেদন জানিয়েছেন তাঁরা।
গত সেপ্টেম্বর মাসে সুশান্তের বান্ধবী ও অভিনেত্রী রিয়া চক্রবর্তী সুশান্তের দুই বোনদের বিরুদ্ধে প্রতারণা ও সুশান্তকে ড্রাগ দেওয়া নিয়ে অভিযোগ করেন। এ নিয়ে তিনি এফআইআরও দায়ের করেছিলেন। রিয়ার দাবি ছিল যে কয়েকজন ডাক্তারের সঙ্গে সুশান্তের বোনরা ষড়যন্ত্র করেছিলেন এবং নিষিদ্ধ ওষুধের একটি মিথ্যা প্রেসক্রিপশন অভিনেতাকে পাঠিয়েছিলেন। তার ডোজ এবং পরিমাণের তদারকি না করে সুশান্তকে দেওয়া হত বলেও অভিযোগ করেন রিয়া। এর ফলে সুশান্তের ক্রনিক অ্যাংজাইটি অ্যাটাক হতে পারে ও এটিই সুশান্তের আত্মহত্যার কারণ হতে পারে বলে মত রিয়ার। এফআইআরটি বান্দ্রা পুলিশ দায়ের করে সিবিআইকে পাঠিয়ে দেয়। এই মামলায় রিয়ার পক্ষের আইনজীবী সতীশ মানেশিন্দে বলেন তিনি ইতিমধ্যে আবেদনের জবাব পাঠয়ে দিয়েছেন। হলফনামায় রিয়া বলেছেন যে বিনা পরামর্শে বা পরীক্ষা ছাড়াই সাইকোট্রপিক পদার্থ দেওয়া নার্কোটক্স ড্রাগ অ্যান্ড সাইকোট্রপিক সাবস্ট্যান্টস অ্যাক্ট, ১৯৮৫ এবং ২০০০ সালের টেলিমেডিসিন প্র্যাকটিস গাইডলাইনের বিরোধী।
এছাড়াও রিয়ার অভিযোগ সুশান্তের দুই বোন একে অপরের সঙ্গে সম্মিলিতভাবে প্রেসক্রিপশন তৈরি করেছেন এবং এটি মনগড়া। হলফনামায় তিনি জানিয়েছেন, সুশান্ত মহারাষ্ট্রের মুম্বইয়েই বেশিদিন ছিলেন। দিল্লিতে নয়। আরও একটি আশ্চর্যের ব্যাপার হল ডঃ তরুণ কুমার একজন হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ। অথচ তিনি এমন ব্যক্তিকে প্রেসক্রিপশন দিলেন যাঁর সঙ্গে তিনি দেখা করেননি বা যাঁর সম্পর্কে তিনি জানেন না। সুশান্ত এবং অভিযুক্ত চিকিৎসকের মধ্যে কখনও টেলিফোনেও যোগাযোগ ছিল না বলে ইঙ্গিত দেন রিয়া। মানেশিন্দে আরও উল্লেখ করেছেন যে বোনদের বিরুদ্ধে তদন্তের কাজটি এখন এক প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে এবং সেই কারণেই আর্জি খারিজ করা উচিত। এরই মধ্যে, থোরাট শুনানি শেষে আদালত অতিরিক্ত সলিসিটার জেনারেল যিনি সিবিআই এবং মুম্বই পুলিশের প্রতিনিধিত্ব করছেন, বুধবারের মধ্যে উত্তর জমা দিতে বলেছিলেন। আদালতে আবেদনের শুনানি হবে ৪ নভেম্বর।