কলকাতা: অনুরাগীদের জন্য সুখবর। চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। চোখ মেলে তাকিয়েছেন। ICU-এর চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের অবস্থা অত্যন্ত সংকটজনক। কিন্তু এখন চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছেন তিনি। বৃহস্পতিবার তাকে দ্বিতীয়বার ডায়ালিসিস দেওয়া হয়েছিল। গত ২৪ ঘণ্টায় অভিনেতার গ্লাসগো কোমা স্কেলে ৯-১০ থেকে ১০-১১-এ উন্নীত হয়েছে।
হাসপাতালের তরফে জানানো হয়েছে, চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছেন সৌমিত্র। কথা বললে প্রতিক্রিয়াতে তিনি চোখও খুলছেন। ক্রিটিক্যাল কেয়ার বিশেষজ্ঞ ডাঃ অরিন্দম কর বলেছেন, “ডায়ালাইসিসের পরে ইউরিয়া এবং ক্রিয়েটিনিন এবং অন্যান্য প্যারামিটারগুলি আরও ভাল জায়গায় পৌঁছেছে। তবে ২২ দিন আইসিইউ সাপোর্ট এবং কোভিড এনসেফালোপ্যাথি থাকায় তাঁর স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয়েছে। তবে সৌমিত্র চট্টোপাধঅ্যায় ভালভাবেই লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন।” চিকিৎসকদের মতে এটি ইতিবাচক দিক। অভিনেতার কোনও অভ্যন্তরীণ রক্তপাত এবং সেপসিসের লক্ষণ নেই। তাঁকে অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয়েছে। তাঁর শরীরে হিমোগ্লোবিনের সংখ্যা কমে গিয়েছে। তবে ডঃ কর বলেছেন যে ডায়ালাইসিসের কারণে এমন হতে পারে।
গত সপ্তাহ থেকে অচেতন ছিলেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। এদিন তিনি প্রতিক্রিয়া দেন। তাঁর স্নায়ুর সমস্যাই ভাবাচ্ছে চিকিৎসকদের। হাসপাতালের একজন চিকিৎসক জানান, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে প্রথমবার ডায়ালিসিস দেওয়ার প্রক্রিয়া সফল হয়েছে। তাঁর রক্তচাপের ওঠানামার করেনি। ডায়ালিসিস তাঁর রেনাল সংক্রান্ত কার্যকারিতা স্বাভাবিক করেছে। তবে তাঁর অবস্থা অত্যন্ত সঙ্কটজনক রয়েই গিয়েছে। অভিনেতার চিকিত্সকরা বলেন যে তাঁর চেতনা এখনও সম্পূর্ণ আসছে না। তবে তাঁর নতুন করে জ্বর আসেনি। প্রবীণ এই অভিনেতা নিউমোনিয়ায়ও ভুগছেন। চিকিৎসকরা এও জানিয়েছেন যে তাঁর ফুসফুসের কাজ কিছুটা হলেও স্থিতিশীল।
বুধবার, হাসপাতালের একজন মুখপাত্র বলেছেন, “আমরা গৌণ সংক্রমণের মোকাবেলা করছি। পরিস্থিতি অনুসারে আমরা সব ধরণের অ্যান্টিবায়োটিক এবং অ্যান্টি-ফাঙ্গাল ওষুধ দিয়েছি। আশা করছি যে তিনি এবার চিকিৎসায় সাড়া দেবেন। তাঁর কিডনি ঠিকভাবে কাজ শুরু করবে।” চিকিৎসক গণমাধ্যমকে এও জানিয়েছিলেন যে যেহেতু সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের গৌণ নিউমোনিয়া ছিল, তাই চিকিৎসা নিয়ে তাঁদের চিন্তা করতে হচ্ছে। মেডিক্যাল বোর্ডের সদস্যরা তাঁর এয়ারওয়েটিকে এন্ডোট্রাকিয়াল ইনটুয়েশন এবং ভেন্টিলেশন নজরে রেখেছেন। তবে তাঁর রক্তক্ষরণ বন্ধ হয়েছে। হিমোগ্লোবিন ও রক্তের অন্যান্য উপাদান আপাতত স্থিতিশীল। তবে রেনাল ফাংশানের উন্নতির প্রয়োজন। তাই ২ থেকে ৩টি পর্বে ডায়ালিসিসের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এতে ইউরিয়ায় ক্রিয়েটিনিনের পরিমাণ কম থাকবে। যার ফলে আচ্ছন্নভাব কমতে পারে।