মুম্বই: সুশান্ত সিং রাজপুত মামলায় সিবিআই সম্প্রতি সিদ্ধার্থ পিঠানিকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। সুশান্তকে নিয়ে সিবিআইয়ের সামনে সিদ্ধার্থ এক বড়সড় তথ্য প্রকাশ করেছেন। একটি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সিদ্ধার্থ তাঁর বিবৃতিতে বলেছেন যে ২০১৯ সালের পরে সুশান্তের জীবনে পরিবর্তন শুরু হয়েছিল। গত বছরের আগস্ট থেকে সুশান্তের কাজ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল এবং রিয়া চক্রবর্তীর সঙ্গে তিনি আরও বেশি সময় কাটাতে শুরু করেছিলেন। তবে তখন এমন সময়ও এসেছিল যখন সুশান্তকে একা ছিলেন।
সিদ্ধার্থ বলেছেন যে তাঁর বাবার কাজ ভাল চলছিল না। তাই তিনি অর্থোপার্জন করতে হায়দরাবাদে গিয়েছিলেন। তারপরে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে একদিন সুশান্তের একটি ফোন আসে। সুশান্ত বলেছিলেন যে তিনি অভিনয় জগত ছেড়ে দেবেন এবং তাঁর স্বপ্নের প্রকল্প '১৫০' শুরু করবেন। সিদ্ধার্থ আরও জানিয়েছেন, রিয়া সুশান্তকে প্রথম জানুয়ারিতে ছেড়ে চলে যান। তারপরে রিয়া কিছুদিন পরে ফিরে এসেছিলেন। রিয়া সিদ্ধার্থ জানিয়েছিলেন, এখন থেকে রিয়া এবং দীপেশ একসঙ্গে সুশান্তের যত্ন নেবেন। জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে সুশান্ত বলেছিলেন যে তাঁকে তার বোন মিতুর কাছে যেতে হবে। তাঁরা যখন সেখানে পৌঁছোন তখন সুশান্তের অবস্থা ভাল ছিল। সেখানে থাকার পরে তাঁরা আবার মুম্বই ফিরে আসি। এর পর সুশান্ত ভাল হতে শুরু করেন। তিনি ওয়ার্কআউট করতেন। সুশান্ত সুস্থ হয়ে উঠছিলেন। তাই ওষুধ খাওয়া বন্ধ করে দেন। হঠাৎ তাঁকে ওষুধ বন্ধ করতে সিদ্ধার্থ নিষেধ করেছিলাম।
এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে সুশান্তের স্বাস্থ্যের আবার অবনতি হতে শুরু করে। তিনি সবার থেকে দূরে থাকতে শুরু করেছিলেন, তবে রিয়া তখন তাঁর সঙ্গে ছিলেন। জুনের প্রথম সপ্তাহে সুশান্তের স্বাস্থ্যের আরও অবনতি ঘটে। তিনি ঘরে একা থাকতে শুরু করেন। তিনি কারোর সঙ্গে কথা বলতেন না। তাই সবাই রিয়া এবং সুশান্তকে একা ছেড়ে দিয়েছিলেন। লকডাউন জুড়ে রিয়া সুশান্তের সঙ্গেই ছিলেন। সিদ্ধার্থ বিবৃতিতে আরও বলেছেন, ৮ জুন সকালে সকাল সাড়ে ১১ টায় রিয়া তার ব্যাগ প্যাক করে বাড়িতে চলে যান। রিয়া তাঁকে সুশান্তের যত্ন নিতে বলেছিলেন। এমন সময় সুশান্ত রিয়াকে জড়িয়ে ধরে চলে যান। কিছুক্ষণ পর সুশান্তের বোন মিতু বাড়িতে আসেন। তিনি সুশান্তের যত্ন নিতে শুরু করেন। মিতু বাড়িতে থাকাকালীন সুশান্ত পুরানো জিনিস মনে করতেন এবং কাঁদতেন। ১২ জুন, মিতু তাঁর বাড়িতে চলে যায়।
১৪ জুন সকাল ১০টা ১০.৩০ নাগাদ তিনি হলে কাজ করছিলেন। তখন কেশব তাঁকে জানান সুশান্ত স্যার দরজা খুলছেন না। এরপর তিনি ও দীপেশ দরজায় কড়া নাড়েন। কিন্তু সুশান্ত দরজা খোলেননি। তখনই মিতু তাঁকে ফোন করেন। বলেন তিনি সুশান্তকে ফোন করেছিলেন। কিন্তু তিনি ফোন তুলছেন না। সিদ্ধার্থ তখন জানান তাঁরাও চেষ্টা করছেন। কিন্তু সুশান্ত দরজা খুলছেন না। তিনি মিতুকে ডাকেন। এরপর সিদ্ধার্থ গুগল থেকে রফিক কেওয়ালের নম্বরটি বের করে ফোন করেন। রফিককে তিনি লকটির ছবি এবং বাড়ির ঠিকানা পাঠিয়েছিলেন। বেলা দেড়টায় রফিক তার এক সঙ্গীকে নিয়ে সেখানে পৌঁছে যান। রফিক লক ভাঙার পর দীপেশ ও সিদ্ধর্থ সুশান্তের ঘরে যান। ঘর অন্ধকার ছিল। দীপেশ ঘরের আলো জ্বালানোর পর তাঁরা দেখান সুশান্ত সবুজ কাপড়ে ফাঁস লাগিয়ে ফ্যানে ঝুলছেন।