মুম্বই: নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরোর দুঁদে অফিসার তিনি৷ মুম্বইয়ে এনসিবি-র আঞ্চলিক অধিকর্তা হয়ে আসার পর থেকে একের পর এক মাদক চক্রের পর্দা ফাঁস করেছেন৷ ২০২০ সালে সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর পর থেকে মুম্বইয়ে একের পর এক মাদক মামলা সামনে এসেছে৷ সেই সব চক্র ফাঁস করেছিলেন এনসিবি অফিসার সমীর ওয়াংখেড়ে৷ কিন্তু আরিয়ান মামলার সমাধান করতে গিয়ে কি নিজেই ‘চক্রব্যূহে’ জড়িয়ে পড়লেন এই দুঁদে অফিসার?
আরও পড়ুন- সুশান্ত পর্ব ভুলে বলিউডে ফেরার অপেক্ষা! নয়া লুকে নিজেকে গড়ছেন রিয়া
সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর পর থেকেই মাদক সংক্রান্ত মামলার দায়িত্ব নেন সমীর ওয়াংখেড়ে৷ এর পর থেকে প্রায় ১৭ হাজার কোটি টাকার মাদক চক্রের পর্দা ফাঁস করেছেন তিনি৷ অভিযান চালিয়েছেন পরিচালক অনুরাগ কাশ্যপ, অভিনেতা বিবেক ওবেরয়, পরিচালক রামগোপাল বর্মার মতো বলিউড ব্যক্তিত্বের বিরুদ্ধে৷ এমনকী অভনেত্রী রিয়া চক্রবর্তীকেও গ্রেফতার করেছিলেন এই সমীর ওয়াংখেড়েই৷ ২ অক্টোবর যাত্রী সেজে তিনি অভিযান চালান মুম্বই থেকে গোয়াগামী প্রমোদতরীতে৷ সেখানেই রেভ পার্টি থেকে আরিয়ান খান ও তাঁর সঙ্গীদের আটক করেন৷ পরে টানা জিজ্ঞাসাবাদের পর তাঁকে গ্রেফতার করেন এনসিবি অফিসার৷ কিন্তু এবার তাঁর বিরুদ্ধেই উঠল একের পর এক অভিযোগ৷ হাইপ্রোফাইল মাদকচক্রের পর্দা ফাঁস করতে গিয়ে নিজেই জড়ালেন চক্রব্যূহে৷
আরিয়ান থান গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই তাঁর বিরুদ্ধে সুর চড়ছিল৷ সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা আরও জোড়াল হয়৷ পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে কোণঠাসা ওয়াংখেড়ের গ্রেফতারির দাবি উঠেছে৷ আরিয়ানের পাশে দাঁড়িয়ে ওয়াংখেড়ের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন মহারাষ্ট্রের মন্ত্রী তথা এনসিপি নেতা নবাব মালিক৷ প্রসঙ্গত, তাঁর জামাতাকেও মাদক মামলায় গ্রেফতার করেছিলেন এনসিবি অফিসার ওয়াংখেড়ে৷ আরিয়ান খান গ্রেফতার হতেই তিনি ওয়াংখেড়ের বিরুদ্ধে উঠেপড়ে লাগেন৷ তাঁর জামাতা গ্রেফতার হতেই এই ঘটনাকে বিজেপি’র ষড়যন্ত্র বলে দাবি করেছিলেন নবাব৷ সেই ঘটনায় তিনি বলেছিলেন, এনসিবি যেটাকে ২০০ কেজি গাঁজা বলে দাবি করেছে, তা আসলে ৭ গ্রাম৷ তাও আবার গাঁজা নয়, ভেষজ মাদক৷ এত বড় তদন্তকারী সংস্থা হয়ে কী করে গাঁজা ও মাদকের মধ্যে পার্থক্য বুঝতে পারল না এনসিবি?
সেই সময় ওয়াংখেড়েকে বিজেপি’র হাতের পুতুল বলেও তোপ দেগেছিলেন ওয়াংখেড়ে৷ সেই সময় চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে বলেছিলেন, এক বছরের মধ্যে ওয়াংখেড়ের চাকরি যাবে৷ ওঁকে জেলে পাঠিয়ে তবেই শান্ত হব৷ আরিয়ান মামলা যখন চরম পর্যায়ে তখনই ওয়াংখেড়ের বিরদ্ধে প্রথমে এল ঘুষের অভিযোগ৷ তিনি নাকি, আরিয়ানকে ছাড়ার জন্য ২৫ কোটি টাকা দাবি করেছেন৷ ওয়াংখেড়ের বিরুদ্ধে ঘুষের অভিযোগ তোলেন আরিয়ান মামলার একমাত্র সাক্ষী কিরণ গোসাভির দেহরক্ষী প্রভাকর সেইল৷ এর পরেই ওয়াংখেড়ের বিরুদ্ধে শুরু হয় বিভাগীয় তদন্ত৷ যা তাঁকে প্রায় খাদের কিনারায় নিয়ে আসে৷
ঘুষের অভিযোগের মধ্যেই উঠল আরও একটি অভিযোগ৷ বলা হল তিনি ধর্ম লুকিয়ে প্রান্তিক হিন্দু সেজে চাকরিতে ঢুকেছেন৷ তিনি জাতির শংসাপত্র জাল করেছেন৷ এক মুসলিম মেয়ের সঙ্গে বিয়ের ছবি প্রকাশ্যে এনেও তাঁকে চ্যালেঞ্জ করা হয়৷ ওয়াংখেড়ের বিরুদ্ধে আনা এই সকল অভিযোগ আদৌ কি সত্যি? সেই দিকেই তাকিয়ে এখন গোটা দেশ৷