মুম্বই: বুধবার জামিন পেয়েছেন অভিনেত্রী রিয়া চক্রবর্তী। তবে তাঁর পরিবারের পক্ষে এখনও কঠিন সময় শেষ হয়নি। অভিনেতার মা, সন্ধ্যা চক্রবর্তী একটি সংবাদমাধ্যকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন যে কীভাবে পরিবার এই কঠিন সময়ের মোকাবেলা করছে। তিনি বলেন যে রিয়া প্রায় একমাস ধরে বন্দি ছিলেন। তবুও তিনি সকলেই শক্ত হওয়ার কথা বলতেন এবং পরিবার যাতে অক্ষত থাকে তার চেষ্টা চালিয়েছিলেন। সন্ধ্যা বলেন যে তাঁর মেয়ে একজন যোদ্ধা এবং সে নিজেই তার যত্ন নিতে সক্ষম।
“ও যার মধ্যে দিয়ে গিয়েছে… ও কীভাবে এর থেকে বেরিয়ে আসবে? তবে ও একজন যোদ্ধা। ওকে অবশ্যই শক্তিশালী হতে হবে। এই ট্রমাটি কাটিয়ে উঠতে এবং ওর জীবন ফিরে পেতে সহায়তা করার জন্য আমাকে ওর থেরাপি করতে হবে।” বলেন রিয়ার। বুধবার বম্বে হাই কোর্ট রিয়ার জামিনের গ্রহণ করলেও রিয়ার ভাই শৌভিকের আর্জি খারিজ করেছে। আপাতত জেলেই রয়েছেন তিনি। সন্ধ্যাও একই বিষয়ের কথা উল্লেখ করেন এবং বলেন যে পরিবারের দুর্দিন এখনও শেষ হয়নি। তিনি বাচ্চাদের কথা চিন্তা করে বিছানা ব্যবহার বন্ধ করেছেন। তিনি এও বলেন, “আমার ছেলে এখনও জেলে রয়েছে এবং আগামীকাল কী হবে সে সম্পর্কে আমি ভীত। আমার বাচ্চারা যখন জেলে রয়েছে তখন আমি আর বিছানায় ঘুমাতে পারি না। আমি খেতে পারি না। আমি মধ্যরাতে ঘুম থেকে উঠে পড়ি। এরপর কী হবে তা নিয়ে আমি ভয় পাই।”
আরও পড়ুন: জেলের মধ্যে ক্লাস নিতেন বন্দিদের, নিজেকে সুস্থ রাখতে আরও একটি কাজ করতেন রিয়া
রিয়ার মা আরও বলেছেন যে এই ঘটনার প্রভাব তাঁর মধ্যে এতটাই পড়েছিল যে তিনি আত্মহত্যা করতে গিয়েছিলেন। তবে থেরাপি তাঁকে সেখানে থেকে বেরিয়ে আসতে সহায়তা করেছে। তিনি এখন তাঁর পরিবারের পক্ষে দৃঢ় থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমার পরিবারকে কেবল একটি কোণে ঠেলে দেওয়া হয়নি, তাকে ধ্বংস করা হয়েছে। এক পর্যায়ে আমি ভেবেছিলাম এটি শেষ করার একমাত্র উপায় আমার জীবন শেষ করে দেওয়া। আমি এই ধরণের ব্যক্তি নই, আপনি জানেন। আমি নিজের জন্য থেরাপি চেয়েছি। এখন যখন এই অনুভূতিগুলি উপস্থিত হয়, আমি নিজেকে স্মরণ করিয়ে দিই যে আমার সন্তানদের জন্য আমার থাকা দরকার। তারা অনেক খারাপ সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।”
বুধবার শর্তসাপেক্ষে জামিন দেওয়া হয়েছে রিয়া চক্রবর্তীকে। ১ লক্ষ টাকা ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন পেয়েছেন তিনি। তবে বেশ কয়েকটি নিয়ম মেনে চলতে হবে রিয়াকে। অভিনেত্রীকে জানানো হয়েছে তাঁকে রোজ এজলাসে হাজিরা দিতে হবে। যদি কোনও কারণে তিনি অনুপস্থিত থাকেন তবে তার উপযুক্ত কারণ জানাতে হবে। তদন্তকারী সংস্থার কাছে পাসপোর্ট জমা রাখতে হবে রিয়াকে। কোনওভাবেই তিনি দেশের বাইরে যেতে পারবেন না। যদি কোনও কারণে তাঁকে দেশের বাইরে যেতে হয়, তবে গ্রেটার মুম্বইয়ের NDPS আদালতের বিশেষ বিচারপতির অনুমতি লাগবে। এমনকী তাঁকে গ্রেটার মুম্বইয়ের বাইরে যেতে হলেও তদন্তকারী অফিসারের অনুমতি নেওয়া বাধ্যতামূলক। এক্ষেত্রে উপযুক্ত কারণ দর্শাতে হবে রিয়াকে। বুধবার থেকে ১০ দিন পর্যন্ত তাঁকে প্রতিদিন নিকটবর্তীর থানায় হাজিরা দিতে হবে। এরপর থেকে ছ’মাস পর্যন্ত প্রতিমাসের প্রথম সোমবার তদন্তকারী সংস্থার অফিসে উপস্থিত হতে হবে।