মুম্বই: চলতি বছরের জুন মাসে সুশান্ত সিং রাজপুতের আত্মহত্যার খবরে তোলপাড় হয় গোটা দেশ। সম্প্রতি সেই মামলার তদন্তভার গিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরোর (সিবিআই) হাতে। শুক্রবার সেই নিয়েই তদন্তকারী সংস্থার কর্মকর্তারা জিজ্ঞাসাবাদ করবেন অভিনেত্রী রিয়া চক্রবর্তীকে।
রিয়া ও তাঁর ভাই সৌভিককে সঙ্গে নিয়ে মুম্বইয়ের সানতাক্রুজ পূর্ব অঞ্চলের ডিআরডিও গেস্টহাউসে পৌঁছেছেন। সেখানে তাঁকে কেন্দ্রীয় সংস্থা জিজ্ঞাসাবাদ করবেন। তাঁর বিরুদ্ধে রাজপুতকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়া এবং তাঁর থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। রাজপুতের ফ্ল্যাটমেট এবং ক্রিয়েটিভ ম্যানেজার সিদ্ধার্থ পিঠানি, রাঁধুনি নীরজ সিং, পরিচারক কেশব বচনার এবং হাউস ম্যানেজার স্যামুয়েল মিরান্ডাও গেস্ট হাউসে পৌঁছেছেন। গত কয়েকদিনে এজেন্সি তাঁদের বেশ কয়েকবার জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। আজ ফের একবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে তাঁদের।
গত সপ্তাহে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনার পরে সিবিআই এই মামলার তদন্ত শুরু করেছিল। রিয়ার বাবা এবং ভাইকে বেশ কয়েকটি তদন্তকারী জিজ্ঞাসাবাদ করেছে ইতিমধ্যেই। এছাড়া রাজপুতের ফ্ল্যাটমেট সিদ্ধার্থ পিঠানিকেও সিবিআই তলব করেছে। বিহারের পাটনায় সুশান্তের পরিবারের দ্বারা দায়ের করা এফআইআরের ভিত্তিতে তদন্তকারী এজেন্সি রাজপুতের মৃত্যুর তদন্ত শুরু করছেন। সুশান্তের বাবা কে কে সিং বিহারের রাজীবনগর থানায় রিয়া, তাঁর বাবা এবং ভাই শৌভিকের সহ আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেন। সেখানে তিনি রিয়ার বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনা সহ আর্থিক তছরুপের অভিযোগ এনেছিলেন। সেই অভিযোগের পরই তদন্ত শুরু করে এনফর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট।
রিয়া ও সুশান্তের অ্যাকাউন্ট খতিয়ে দেখেন তদন্তকারী অফিসাররা। তখনই জানা যায় সুশান্তের অ্যাকাউন্ট থেকে বড় অঙ্কের টাকা লেনদেন করতেন রিয়া। তাঁর লাইফস্টাইল, শপিং, পার্টি প্রভৃতি অনেক ক্ষেত্রেই সুশান্তের টাকা জলের মতো খরচ করতেন অভিনেত্রী। এও জানা যায় যে রিয়ার ভাই সৌভিকের খরচও বহন করতেন সুশান্ত। তাঁর টিউশান ফিজ, তাঁর কোথাও যাওয়ার খরচ, সেসব সুশান্তের অ্যাকাউন্ট থেকেই খরচ করা হত। এছাড়া সুশান্তের একাউন্টের পিন নম্বর নাকি পাল্টাতে চেয়েছিলেন' রিয়া। তাঁর হোয়াটসঅ্যাপ থেকে এই তথ্য খুঁজে পেয়েছে ইডি। হোয়াটসঅ্যাপের একটি চ্যাটে রিয়া তার ট্যালেন্ট ম্যানেজার জয়া সাহার সঙ্গে কথোপকথন চালাচ্ছিলেন। সেখানে তিনি রিয়াকে বলেছিলেন, 'তোমার কি কাজে লেগেছে?' উত্তরে রিয়া লিখেছিলেন, 'হ্যাঁ। কিছুক্ষণের মধ্যেই ঢলে পড়েছে। দিনে মাত্র একবার?' অন্য আরেকটি চ্যাটে রিয়া ও সুশান্তের হাউজ ম্যানেজার স্যামুয়েল মিরান্দার মধ্যে কথোপকথনের প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। সেখানে দেখা গিয়েছে রিয়া তাঁকে লিখেছেন তিনি কি সুশান্তের ক্রেডিট কার্ডের পিন নম্বর তাঁকে পাঠাতে পারবেন? আর নেট ব্যাংকিংয়ের ক্ষেত্রে সেই পিন নম্বরটি বদলানো যেতে পারে? বোঝাই যাচ্ছে রহস্যের জাল ছড়ান রয়েছে আরও গভীরে।