মুম্বই: একা রামে রক্ষে নেই, সুগ্রীব দোসর। একে তো করোনার মোকাবিলা করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। তার মধ্যে আবার যোগ হয়েছে সেলিব্রিটিদের বায়নাক্কা। কিছুদিন আগে অভিনেত্রী রেখার বাংলার এক নিরাপত্তাকর্মী করোনায় আক্রান্ত হন। এরপর স্বাভাবিকভাবেই অভিনেত্রীর করোনা টেস্ট করার প্রয়োজন হয়ে পড়ে। কিন্তু রেখা নাকি পুরসভা কর্মীদের তার বাড়িতে ঢুকতে দিচ্ছেন না। টেস্ট তো দূরের কথা।
এমনিতেই সেলিব্রিটিদের হাজারো বায়না নিয়ে অভিযোগের অন্ত নেই। কোনো ছবির শুটিং হোক বা ডেট পাওয়া, সব ক্ষেত্রেই সেলিব্রিটিদের অনেক চাহিদা। পরিচালক থেকে প্রযোজক, কাস্টিং ডিরেক্টর সবাই তাদের বায়না মেটাতে গিয়ে হিমশিম খায়। এমন খবর বহুবার প্রকাশ্যে এসেছে। কিন্তু এবার রেখার জেদ যেন সবকিছুকে ছাড়িয়ে গেল। বাংলোর নিরাপত্তাকর্মীর শরীরে করোনার সন্ধান মেলার পর বাংলোর বাকি স্টাফ এবং অভিনেত্রীর সোয়াব টেস্ট করা বাঞ্ছনীয় ছিল। সেই জন্যই বৃহন্মুম্বাই মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের কর্মীরা অভিনেত্রীর বাড়ি গিয়েছিলেন। কিন্তু অভিযোগ, তাদের নাকি দরজা থেকেই কার্যত তাড়িয়ে দেন রেখা। পুরোকর্মীদের বাড়িতে ঢুকতেই দেয়নি তিনি। অভিনেত্রীকে বারবার বোঝানোর চেষ্টা করা হয় এমন অবস্থায় করোনা পরীক্ষা না করালে পরিস্থিতি আরও বিপজ্জনক হতে পারে। এমনকী গোটা বাড়ি স্যানিটাইজ করা প্রয়োজন। না হলে যে কোনো জিনিস থেকে ছড়াতে পারে সংক্রমণ। কিন্তু এতকিছু বলা সত্বেও রেখাকে রাজি করানো যায়নি।
এই পরিস্থিতিতে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন রেখার সেক্রেটারি ফারজানা। তিনি অভিনেত্রীর ফোন নম্বর দিয়ে দেন মিউনিসিপাল কর্পোরেশনকে। সেখান থেকে স্বাস্থ্যকর্মীরা অভিনেত্রীকে ফোন করেন। তাকে বোঝান। কিন্তু তাতেও রেখাকে তার জেদ থেকে টলানো যায়নি। শোনা গিয়েছে নিরাপত্তাকর্মী শরীরে করোনা ভাইরাসের সন্ধান পাওয়ার পর থেকে রেখা বাইরের কোন ব্যক্তির সংস্পর্শে আসতে চাইছেন না । সেই কারণে পরীক্ষা করাতেও নারাজ তিনি। তবে বহুবার বলার পর রেখা জানিয়েছেন যে তিনি তার লালারস পাঠিয়ে দেবেন বিএমসি-কে। আপাতত সেই আশাতেই দিন গুনছেন পুরোকর্মীরা।
এদিকে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন অমিতাভ বচ্চন এবং অভিষেক বচ্চন। দুই অভিনেতার অবস্থাই বর্তমান স্থিতিশীল। এছাড়া ঐশ্বর্য এবং আরাধ্যাও করোনায় আক্রান্ত। হোম কোয়ারেন্টাইনে থেকে তাদের চিকিৎসা চলছে। করোনা থাবা বসিয়েছে অনুপম খেরের পরিবারেও। অভিনেতার মা, ভাই, ভাইয়ের স্ত্রী এবং ভাইঝি করোনায় আক্রান্ত। এছাড়া আমির খানের পরিবারের সাত স্টাফের শরীরে মিলেছে করোনা ভাইরাসের সন্ধান। প্রত্যেকেরই চিকিৎসা চলছে বলে জানিয়েছে বৃহন্মুম্বাই মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন।