কলকাতা: যত দিন যাচ্ছে টলি অভিনেত্রী পল্লবী দের মৃত্যু রহস্য ততই যেন আরও বেশি ঘনীভূত হচ্ছে। ইতিমধ্যেই পল্লবীর প্রেমিক সাগ্নিককে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেই অভিনেত্রী মৃত্যু রহস্যের কিনারা করতে চাইছে পুলিশ। এমতাবস্থায় জেরার মুখে পড়ে সামনে এসেছে সাগ্নিকের ভুয়ো কল সেন্টার থেকে রোজগারের তথ্য। জানা যাচ্ছে, নিউটাউনের দিকে একটি ভুয়া কল সেন্টার চালাতেন সাগ্নিক এবং সেখান থেকে মাস গেলে মোটা টাকা রোজগার হত। কিন্তু কোথায় গেল ভুয়ো সেন্টার থেকে রোজকার হওয়া সেই বিপুল পরিমাণ নগদ? আপাতত এর উত্তর খুঁজতেই তদন্ত চালাচ্ছে পুলিশ।
উল্লেখ্য, সময় যত এগিয়েছে ততই পল্লবী এবং সাগ্নিকের ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আছে পুলিশের সামনে। সাগ্নিককে জিজ্ঞাসাবাদের আগে থেকেই পল্লবী এবং সাগ্নিকের বিলাসবহুল জীবনযাপনের অর্থ প্রসঙ্গে উঠেছিল একাধিক প্রশ্ন। অন্যদিকে পল্লবীর পরিবারের তরফ থেকে বারবার দাবি করা হয়েছিল যে, তাঁদের মেয়ের টাকাতেই নাকি বিলাসবহুল জীবনযাপন করতেন প্রেমিক সাগ্নিক। পুলিশি তদন্তেও দেখা যায়, সামান্য চাকরি করেই দামি দামি গাড়ি, মোবাইল ব্যবহারে অভ্যস্ত ছিলেন সাগ্নিক। কোথা থেকে আসত সেই সমস্ত টাকা? এই প্রশ্ন উঠতেই পুলিশি তদন্তের সামনে আসে রাজারহাটের একটি ভুয়া কল সেন্টারের সঙ্গে সাগ্নিকের যোগ। জানা যায় ওই ভুয়ো কল সেন্টার চালিয়েই বিপুল অর্থ রোজগার করতেন সাগ্নিক। কিন্তু সেই বিপুল পরিমাণ নগদ টাকা কোথায় রয়েছে সেই তথ্য এখনও পুলিশকে দেননি সাগ্নিক। আর সেই অর্থের খোঁজেই এবার নিউটাউনের এক বহুতল আবাসনের প্রমোটিং সংস্থার কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে চলেছে পুলিশ। সূত্রের খবর, ওই বহুতলে সাগ্নিক চক্রবর্তী এবং পল্লবী দে দুজনেরই যাতায়াত ছিল। সেক্ষেত্রে ওই প্রমোটিং সংস্থা কর্মকর্তাদের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ রয়েছে কিনা সাগ্নিক-পল্লবীর, আপাতত সেটাই জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। অন্যদিকে পল্লবীর পরিবারের সদস্যদেরও ফের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে খবর।
পুলিশি তদন্তে সম্প্রতি সামনে এসেছে নতুন ফ্ল্যাটের জন্য সাগ্নিক প্রায় ৪৩ লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন। কিন্তু কোথা থেকে এত বিপুল অর্থ এসেছিল সেই ব্যাপারে এখনও পর্যন্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি স্বাপ্নিকের কাছ থেকে। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, ভুয়া কল সেন্টারের নগদ টাকা দিয়েই এই ফ্ল্যাট কেনার কাজ চলছিল। এছাড়া সাগ্নিকের তিনটে ব্যাংক একাউন্টে কিছু টাকার হদিস পাওয়া গিয়েছে। সেখানে যেমন পল্লবী দের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা পাঠানো হয়েছে তেমনই আবার পল্লবীকেও মাঝে মাঝে বিপুল অর্থ ট্রান্সফার করেছেন সাগ্নিক। এই সমস্ত টাকার হিসেব খুঁজতেই আপাতত তদন্তে নেমেছে পুলিশ আধিকারিকরা। অন্যদিকে সাগ্নিকের পরিবারের তরফ থেকে নিউটাউনের ফ্ল্যাট কেনা প্রসঙ্গে জানানো হয়েছে, সাগ্নিকদের পরিবারের দুটির সম্পত্তি বিক্রি করে সেই টাকায় নিউটাউনের ফ্ল্যাট কেনার আগাম টাকা দেওয়া হয়। তাঁদের পরিবারের একটি অ্যাকাউন্টে ২৫ লক্ষ টাকা ছিল। সেটাও সম্পত্তি বিক্রির টাকা বলে দাবি করেছে সাগ্নিকের পরিবার। কিন্তু পুলিশের প্রশ্ন সেই দুটি সম্পত্তি কোথায় ছিল? কবেই বা সেটা বিক্রি হয়েছে সেই সম্পর্কে প্রয়োজনীয় নথিপত্র সাগ্নিকের পরিবারের লোকদের কাছে পুলিশ দেখতে চেয়েছে বলে খবর।
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”YouTube video player” width=”560″>