মুম্বই: গত ১৪ জুন মুম্বাইয়ের বান্দ্রায় নিজের ফ্ল্যাটেই সুশান্ত সিং রাজপুতের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের পর থেকে এপর্যন্ত নানান দিক খতিয়ে দেখছে পুলিশ। তবে এই ঘটনায় এপর্যন্ত সবথেকে বড় চাঞ্চল্যকর অভিযোগ প্রকাশ্যে আসে গত মঙ্গলবার, যখন ছেলের ঘনিষ্ঠ বান্ধবী রিয়া চক্রবর্তীর নামে প্রতারণা ও আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ আনেন। এই অভিযোগের ভিত্তিতে বুধবার বিহার পুলিশের কাছে একটি এফআইআরও দায়ের করেন অভিনেতার বাবা কৃষ্ণ কুমার সিং(৭৪)। যেখানে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের সুযোগ নিয়ে সুশান্তের কাছ থেকে আর্থিক সহায়তা নিতেন রিয়া। রিয়ার পাশাপাশি অভিযুক্তদের তালিকায় আছেন আরও ৫ জন।
সেই সূত্রেই এবার অভিনেতার ব্যাংক অ্যাকাউন্টের বিশদ বিবরণ সংগ্রহের কাজ শুরু করেছে পুলিশ। একাধিক সংবাদ মাধ্যমের অনুসারে ব্যাংকের তথ্য সংক্রান্ত রিপোর্ট প্রকাশ্যে এসেছে। তথ্য অনুসারে নভেম্বর ২০১৭ থেকে ফেব্রুয়ারী ২০২০-র মধ্যে ব্যাংকের বিশদ থেকে এটাই প্রমাণ হচ্ছে যে বান্ধবী রিয়া চক্রবর্তী এবং তার পরিবার, বিশেষত ভাই শোমিকের জন্য প্রকৃতপক্ষে প্রচুর টাকা খরচ করেছিলেন সুশান্ত। চালু ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের তথ্য বলছে, মৃত্যুর আগে শেষ কয়েক মাস রিয়ার জন্য পাঁচটি বড় মাপের আর্থিক লেনদেন হয়েছে । সুশান্তের বাবাও এফআইআর-এ দাবি করেছিলেন যে তার ছেলের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে ১৫ কোটি টাকা অন্য কয়েকটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে স্থানান্তরিত হয়েছিল যা কোনওভাবেই প্রয়াত বলিউড অভিনেতার সাথে সংযুক্ত ছিল না। ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তথ্য অনুসারে, ফ্লাইট বুকিংয়ের উদ্দেশ্যে সুশান্তের বান্ধবী রিয়া চক্রবর্তীর ভাই শইক চক্রবর্তীর অ্যাকাউন্টে ২০১৮-র ১৪ই অক্টোবর ৫১,০০০ টাকার লেনদেন হয়েছে।
২০১৯-এর ১২ অক্টোবর, ভিভিডরেজ রিয়েলেটেক্সের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ৭২,৯০০ টাকা স্থানান্তরিত হয়েছিল, এটি সেই দুটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে একটি যেখানে এসঙ্গে ডাইরেক্টর হিসেবে ছিলেন সুশান্ত, রিয়া চক্রবর্তী এবং তার ভাই শইক চক্রবর্তী। এক্ষেত্রে উল্লেখ্য যে সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর মামলার তদন্তে বিহার থেকে মুম্বাইয়ে এসেছে ৪ সদস্যের পুলিশের একটি দল এবং ইতিমধ্যে তাঁরা প্রয়াত বলিউড অভিনেতার আর্থিক লেনদেন এবং ব্যাংক অ্যাকাউন্টের বিশদ স্ক্যান করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। বৃহস্পতিবার তাঁরা একটি ব্যাংকের বান্দ্রা-শাখায় খোঁজ খবর করেন যেখানে সুশান্তের অ্যাকাউন্ট ছিল।
তাঁর ছেলের সাথে প্রতারণা ও হুমকির অভিযোগ এনে পাটনায় রিয়া চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছিলেন সুশান্তের বাবা। একাধিক ধারায় বিহার পুলিশের মামলাটি দায়ের করা হয়েছে যেখানে আইপিসি ধারা ৩৪১ (অন্যায়ভাবে দমন), ৩৪২ (অন্যায়ভাবে বন্দিদশা), ৩৮০ (আবাসনের বাড়িতে চুরি), ৪০৬ (বিশ্বাসের সুযোগ নেওয়া), ৪২০ (প্রতারণা) এবং ৩০৬ (আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়া) অন্তর্ভুক্ত। এদিকে, রাজ্যসভার সাংসদ সুব্রহ্মণ্যম স্বামী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে দ্বিতীয়বার চিঠি লিখে সুশান্তের মৃত্যুর বিষয়ে সিবিআই, এনআইএ এবং এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরের যৌথ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।