মুম্বই: রবিবার সকালে সকলকে কাঁদিয়ে সুরলোকে পাড়ি দেন সুরসম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেশকর৷ কোকিলকণ্ঠী শিল্পীর প্রয়াণে শোকস্তব্ধ গোটা দেশ৷ কিন্তু মৃত্যুর ঠিক আগে শেষের কয়েকটা মুহূর্ত কী ভাবছিলেন লতা? জীবনভর প্রাপ্তি আর সাফল্য তাঁকে তৃপ্তি দিয়েছিল? নাকি না পাওয়া বেদনাগুলো ঘিরে ধরেছিল তাঁকে? সেই জবাব জানা কখনই সম্ভব নয়৷ কিন্তু সুর সম্রাজ্ঞীর শেষ মুহূর্ত কেমন ছিল, তা নিজের মুখে জানালেন মুম্বইয়ের ব্রিজ ক্যান্ডি হাসপাতালের চিকিৎসক প্রতীত সমদানি৷ তাঁর তত্বাবধানেই ছিলেন শিল্পী৷
আরও পড়ুন- সুর সম্রাজ্ঞীকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে রবীন্দ্র সদনে মুখ্যমন্ত্রী, উপস্থিত অগণিত মানুষ
চিকিৎসক জানান, বিদায়বেলাতেও তাঁর মুখ জুড়ে ছিল স্মিত হাসি৷ লতার চিকিৎসার দায়িত্বে ছিলেন প্রতীত সমদানির কথায়, কিংবদন্তি গায়িকার শেষ মুহূর্তটুকুর সাক্ষী হতে পারাটা তাঁর কাছে আজীবনের পাওনা৷ প্রতীত বলেন, ‘‘শেষ মুহূর্তেও মুখে স্মিত হাসি লেগেছিল সুরসম্রাজ্ঞীর৷ সেই হাসিটা আমার সারা জীবন মনে থাকবে৷’’ তিনিই জানান, মাল্টি অর্গান ফেইলিউর হয়ে মৃত্যু হয়েছে লতার৷ কোভিড আক্রান্ত হয়ে জানুয়ারি মাসে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন৷ পরে কোভিড মুক্তও হয়েছিলেন৷ কিন্তু করোনা পরবর্তী জটিলতা ও বার্ধক্যজমিত সমস্যার কাছে হার মানেন তিনি৷’’ উল্লেখ্য, গত তিন বছর ধরে লতার চিকিৎসার দায়িত্বে ছিলেন ড. প্রতীত সমদানিই৷
প্রতীত জানান, অসুখের কারণে খুবই কম কথা বলতেন উনি৷ সকলের সঙ্গে দেখাও করতে পারতেন না৷ কিন্তু সকলের জন্য ভাবতেন৷ এত বড় মানুষ হয়েও কী সরল ছিলেন উনি৷ হাসপাতালে ভর্তি হলেই বলতেন, সকলকে যেন সমান গুরুত্ব দিয়ে চিকিৎসা করা হয়৷ প্রতীতের আবদারে তাঁর ৮ বছরের ছোট্ট মেয়ের সঙ্গেও দেখা করেছিলেন লতা৷ ভাবও জমে গিয়েছিল তাদের৷
তিনি বলেন, ‘‘যখনই লতাজির কোনও শারীরিক সমস্যা হয়েছে, ওঁর চিকিৎসা করেছি৷ কিন্তু এবারে ক্রমশই ওঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছিল। আমরা সবরকম চেষ্টা করেও ওঁকে বাঁচাতে পারলাম না।’ সমদানি আরও বলেন, যখনই কোনও রকম পরীক্ষার কথা বলতাম, উনি রাজি হয়ে যেতেন৷ কখনও বিরক্ত হতেন না৷ এত বড় শিল্পী হয়েও তিনি ছিলেন অতি সাধারণ৷ কোনও দিনও ভুলব না৷ বিশেষ করে ওঁর মিষ্টি হাসি৷ যা বিদায়বেলাতেও অক্ষুণ্ণ ছিল৷