কলকাতা: এ এক অন্য মমতার গল্প। তিনি রাজনৈতিক মঞ্চ থেকে ভাষণ দেন না। রাজ্য সামলান না। একটি ছোট্ট সংসারই তাঁর কাছে রাজ্য। স্বামী ও শাশুড়িকে নিয়ে সেখানেই দিন কাটে এই মমতার। তবে গোটা রাজ্য তাঁকে চেনে। অনেকেই তাঁকে ‘দ্বিতীয় মমতা’ বা ‘দ্বিতীয় দিদি’ হিসেবেও ডাকে। সেই ‘মমতা’র আজ কাজ নেই। ভাল নেই তিনি।
‘বাঘিনী’ ছবির ট্রেলার যখন বের হল, তখন পর্দার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখে গায়ে কাঁটা দিয়েছিল দর্শকের। রক্তমাংসের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর হুবহু মিল। যেন বাস্তব থেকে উঠে এসেছে। এই চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন যিনি, তাঁর নাম রুমা চক্রবর্তী। তাঁর অভিনয় দেখে তাক লেগে গিয়েছিল দর্শকের। পর্দার সেই মমতা তথা শিল্পী রুমা চক্রবর্তী অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয় আজ। রোজগার না থাকায় দৈন্যদশায় জর্জরিত তিনি। লকডাউনের মধ্যে স্বামীর সেলিব্রাল অ্যাটাক হয়ে গিয়েছে। দেহের একটা দিকে প্যারালাইসিস হয়েছে। চোখে তিনি ভাল দেখতে পান না। স্বামীর চিকিৎসার খরচ জোগাড় করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে রুমা চক্রবর্তীকে। এছাড়া যে বাড়িতে তিনি রয়েছেন সেটি এক আত্মীয়ের বাড়ি। ভাড়া রয়েছেন তাঁরা। কয়েক দিনের মধ্যে সেই ঘরও তাঁকে ছাড়তে হবে। কীভাবে দিনগুজরান হবে তা জানেন না পর্দার মমতা।
তাঁর ওপর নির্ভরশীল সংসার। অথচ রোজগার এখন পুরোপুরি বন্ধ। লকডাউনের মধ্যে কোথাও থেকে ডাকও আসেনি। রুমা চক্রবর্তী জানালেন তাঁর ‘বাঘিনী’ ছবি এখন মুক্তির অপেক্ষায়। ছবিটি মুক্তি না পাওয়ায় অনেক সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়েছে তাঁকে। উপরন্তু তাঁর মতো শিল্পীদের অসুবিধা জানানোর মত জায়গার বড় অভাব। ফলে সে ক্ষেত্রেও পিছিয়ে পড়তে হয়েছে তাঁকে। তিনি আরও জানালেন তিনি যে বাড়িটা রয়েছেন সেটি আমফানে ক্ষতিগ্রস্ত। তার ফলে সেটি তাঁকে ছেড়ে দিতে হবে। তাই আবাসন দপ্তরের কাছে ইতিমধ্যেই তিনি আবেদন করেছেন যাতে একটি সরকারি ঘর পাওয়া যায়। আজ যদি তিনি সত্যিই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হতেন, হয়তো বা তাঁকে এত অসুবিধার মধ্যে পড়তে হত না। তবে এনিয়ে রুমা চক্রবর্তী ভাবতে চান না। তিনি জানিয়েছেন, তিনি কখনও সেভাবে ভাবেননি। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে কেউ তাঁকে সাহায্যার্থে এগিয়ে এলে তিনি বাধিত থাকবেন।