কলকাতা: করোনা পরিস্থিতিতে শুরু হল ২৬তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব। ভার্চুয়ালে উৎসবের উদ্বোধনে যোগ দেন বলিউড বাদশা শাহরুখ খান। শুক্রবার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নবান্নে উপস্থিত হয়েছিলেন পরিচালক অনুভব সিনহা। সত্যজিৎ রায় মেমোরিয়াল লেকচার দেন তিনি। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন উৎসব সভাপতি রাজ চক্রবর্তী, দেব, মিমি চক্রবর্তী, নুসরত জাহান, গৌতম ঘোষ, ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, তনুশ্রী চক্রবর্তী, অরিন্দম শীল, মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস এবং ইন্দ্রনীল সেন।
এদিন শাহরুখ জানান, ২০১১ সাল থেকে কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে আসছেন তিনি। এবছর করোনার জন্য আসতে পারেননি। ফলে তাঁর মন খারাপ। কিন্তু ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে সেই খারাপ লাগা খানিকটা কাটিয়েছেন তিনি। বাদশা আরও বলেন, করোনার সময় মানুষকে বিনোদন দেওয়ার চেষ্টা করেছেন তাঁরা। এই বছরটা বিশ্বের বিনোদনের জন্য উৎসর্গ করা উচিত বলে মন্তব্য করেন কিং খান। শাহরুখের কাছে ‘দিদি’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আবদার করেন রাখিতে কিন্তু আসতে হবে। শাহরুখ আসবেন বলে কথাও দেন। এবছর অনুষ্ঠান দেখার জন্য ৫০টি LED স্ক্রিন লাগানো হয়। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় ও জুন মালিয়া। প্রয়াত অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের স্মরণে একটি ভিডিও-ও দেখানো হয়।
এবারের উদ্বোধনী ছবি সত্যজিৎ-সৌমিত্র জুটির ‘অপুর সংসার’। প্রতিদিনই শিশির মঞ্চে দেখানো হচ্ছে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের একটি করে সিনেমা। এছাড়াও তাপস পাল, মনু মুখোপাধ্যায়, সন্তু মুখোপাধ্যায়, অমলা শংকর, ইরফান খান, ঋষি কাপুর, কিম কি দুকের মতো প্রয়াত তারকাদের ছবিও উৎসবে দেখানো হচ্ছে। এবছর শুধুমাত্র সরকারি প্রেক্ষাগৃহে দেখানো হচ্ছে উৎসবের সিনেমা। নন্দনের তিনটি প্রেক্ষাগৃহ ছাড়াও রয়েছে রবীন্দ্র সদন, শিশির মঞ্চ, রবীন্দ্র ওকাকুরা ভবন, টালিগঞ্জ রাধা স্টুডিওর সামনের চলচ্চিত্র শতবর্ষ ভবন এবং এক্সাইড ক্রসিংয়ের কলকাতা ইনফরমেশন সেন্টারে (KIC) দেখানো হবে ছবি। এর আগে জানানো হয়েছিল ই-টিকিট Bookmyshow ওয়েব সাইট থেকে কাটা হলে তবেই ছবি দেখতে পাবেন দর্শকরা। এদিন মুখ্যমন্ত্রী জানান যাঁদের কাছে ডেলিগেট কার্ড রয়েছে তাঁরাও সিনেমা হলে ঢুকতে পারবেন। এবছর ডেলিগেট কার্ড ও ই-টিকিট বিনামূল্যে দেওয়া হচ্ছে।
এ বছর চলচ্চিত্র উৎসবে সিনেমা হলে ১০০ শতাংশ দর্শক বসার অনুমতি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু তার পাশাপাশি স্যানিটাইজেশন নিয়ে সতর্ক করেন তিনি। বলেন, প্রতিটি শোয়ের পর যেন নিয়ম করে সিনেমা হল স্যানিটাইজ করা হয়। দর্শকরাও যেন স্যানিটাইজার নিয়ে যান ও মাস্ক পরে থাকেন। মুখ্যমন্ত্রী এও জানান, বাংলার কোভিড সংক্রমণের হার অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় অনেকটা কম। তবে গঙ্গাসাগর বা চলচ্চিত্র উৎসবের মতো অনুষ্ঠানের জন্য যেন সংক্রমণ না বাড়ে তা খেয়াল রাখতে রাজ্যবাসীকে অনুরোধ করেন মুখ্যমন্ত্রী।