কলকাতা: লকডাউনের প্রথম থেকেই বন্ধ ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি। বন্ধ থিয়েটারও। শুটিং যেমন হচ্ছে না তেমনই মঞ্চে অভিনয়ও হচ্ছে না। ফলে চলচ্চিত্র অভিনেতা ও অভিনেত্রীদের মতো মঞ্চের অভিনেতা ও অভিনেত্রীদের অবস্থাও খুব একটা ভাল নয়। প্রায় ৬ মাস কাজ না থাকায় অনেকেই আর্থিক সংকটে ভুগছেন। তাঁদের সাহায্যার্থে এগিয়ে এলেন অভিনেতা কৌশিক সেন, দেবশংকর হালদারের মত ব্যক্তিত্বরা।
করোনা আবহে যেমন সিনেমা দেখতে যাওয়া সম্ভব নয়, তেমনই নাটক দেখতেও কেউ যাচ্ছে না। ফলে থিয়েটারের অভিনেতা-অভিনেত্রীদের রোজকার প্রায় নেই বললেই চলে। অনেকেই আর্থিক সংকটে ভুগছেন। এই পরিস্থিতিতে তাঁদের পাশে দাঁড়ালেন কৌশিক সেন, দেবশংকর হালদার, অরিন্দম গঙ্গোপাধ্যায়, খেয়ালি ঘোষজস্তিদারের মতো শিল্পীরা। গত কয়েক মাস ধরে থিয়েটারের সঙ্গে যুক্ত আর্থিক সংকটাপন্ন ব্যক্তিদের সাহায্য করছেন তাঁরা। কলকাতার অ্যাকাডেমি অফ ফাইন আর্টসের সদস্যদের আর্থিক সাহায্যের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বিতরণ করা হয়েছে। জানা গিয়েছে থিয়েটার হল খোলা না পর্যন্ত এভাবেই শিল্পীদের সাহায্য করবেন তাঁরা।
কীভাবে এই পরিকল্পনা? মার্চ মাসের লকডাউন শুরুর পরপরই আর্থিকভাবে সমাজের পিছিয়ে পড়া থিয়েটার শিল্পীদের সাহায্যার্থে একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ খোলা হয়েছিল। গ্রুপের নাম 'সৌভ্রাতৃত্ব'। এরপর থেকে প্রতি মাসে বেশ কিছু নাট্যব্যক্তিত্বকে আর্থিক সাহায্য করা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। অভিনেতা কৌশিক সেন জানিয়েছেন, যাঁরা শুধু থিয়েটারের সঙ্গে যুক্ত, এই লকডাউনের মধ্যে তাঁরা খুব সমস্যার মধ্যে রয়েছেন। তাই মার্চ মাস থেকেই মাসে ১৪৫ জনের তালিকা তৈরি করে, তাঁদের আর্থিক সহায়তা করার চেষ্টা চালাচ্ছেন তাঁরা। প্রত্যেকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পৌঁছে যাচ্ছে অর্থ। সম্প্রতি একটি সংস্থার সঙ্গে হাত মিলিয়ে তাঁরা নাট্যকর্মীদের হাতে খাদ্য সামগ্রীও তুলে দিয়েছেন। এই উদ্যোগে সামিল হয়েছেন অনাবাসী ভারতীয়রাও। তাঁরাও তাঁদের সাধ্যমতো টাকা পাঠিয়েছেন। এই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা 'অনুদ্বীপ'-র সাহায্যে উদ্যোগটিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চলছে। নাট্যকর্মী খেয়ালি ঘোষদস্তিদার জানিয়েছেন, এভাবে মানুষের হাতে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র এবং খাদ্য সামগ্রী চাল, ডাল ইত্যাদি তুলে দেওয়া অভিনব উদ্যোগ। এর সঙ্গে যুক্ত থাকতে পেরে তিনি গর্বিত।