মাত্র ১৭ বছরে ক্যানসার আক্রান্ত হন, ফুসফুসে ১৯সেমি টিউমার, কী ভাবে লড়েছেন ঐন্দ্রিলা?

মাত্র ১৭ বছরে ক্যানসার আক্রান্ত হন, ফুসফুসে ১৯সেমি টিউমার, কী ভাবে লড়েছেন ঐন্দ্রিলা?

কলকাতা:  আচমকা ব্রেন স্ট্রোকে ফের একবার ওলটপালট তাঁর জীবন৷ সদ্য ক্যান্সারকে হারিয়ে ফিরেছিলেন রুপোলি পর্দায়৷ এরই মধ্যে ফের এক ধাক্কা৷ দু’বার ক্যানসার জয়ের পর অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা শর্মার ব্রেন স্ট্রোকের ঘটনা রীতিমতো আলোড়ন ফেলে দিয়েছে৷ এর আগে কেমন ছিল অভিনেত্রীর জীবন? কবে মারণরোগে আক্রান্ত হন ঐন্দ্রিলা?

ঐন্দ্রিসার জন্ম ১৯৯৮ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি৷ অভিনেত্রীর বাবা উত্তম শর্মা, মুর্শিদাবাদের একটি হাসপাতালের চিকিৎসক। মা শিখা শর্মা, একটি নার্সিং হস্টেলের ইন-চার্জ। ঐন্দ্রিলা ছিলেন কলকাতার একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ছাত্রী৷ কিন্তু অসুস্থতার কারণে পড়াশোনা শেষ করা হয়ে ওঠেনি তাঁর৷ 

২০১৫ সালের ৫ ফেব্রুয়ারিষ সেদিন ছিল ঐন্দ্রিলার জন্মদিন৷ সেদিনই আসে দুঃসংবাদ৷ ঐন্দ্রিলা জানতে পারেন তিনি মারণরোগে আক্রান্ত৷ তখন তিনি মাত্র একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। জানতে পারেন তাঁর অস্থি মজ্জায় ক্যান্সার রোগ বাসা বেঁধেছে। সেই তবে থেকে জীবনের এক নতুন লড়াই শুরু হয় ঐন্দ্রিলার৷ তবে এই কঠিন লড়াইয়ে পাশে পেয়েছেন কিছু বন্ধুকে। কেউ আবার ছেড়ে চলে গিয়েছেন। 

দিল্লিতে গিয়ে কর্কট রোগের চিকিৎসা শুরু করেন ঐন্দ্রিলা। একের পর এক কেমো আর ইঞ্জেকশনে বিকৃত শরীর। সেই সময় মেয়েকে নিয়ে মুর্শিদাবাদের বহরমপুরেই থাকতেন ঐন্দ্রিলার বাবা-মা৷ রোগগ্রস্ত ঐন্দ্রিলার দিকে সকলের নজর ছিল বাঁকা৷ যেন তিনি কোনও ভিন্‌গ্রহী৷ দিল্লির চিকিৎসকরা ঐন্দ্রিলাকে সময় দিয়ে দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, হাতে আর মাত্র ছ’মাস। কিন্তু টানা দেড় বছর চিকিৎসা করার পর ২০১৬ সালে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরেন এই ফাইটার৷ 

পরবর্তী পাঁছ বছর ঠিকঠাকই চলছিল। ২০১৭ সালে ‘ঝুমুর’ ধারাবাহিকের অভিনয় দুনিয়ায় আত্মপ্রকাশ ঘটে ঐন্দ্রিলার। তাল কাটল ২০২১-এর ফেব্রুয়ারি মাসে। ডান দিকের কাঁধে আচমকাই যন্ত্রণা অনুভব করেন ঐন্দ্রিলা। আর পাঁচজনের মতোই প্রথমে ভেবেছিলেন হয়তো শোয়ার সমস্যার কারণে যন্ত্রণা৷ বুঝতে পারেননি, এ এক বড় বিপদের সঙ্কেত। চিকিৎসা করাতে গিয়ে জানতে পারেন, তাঁর ডান দিকে ফুসফুসে একটি ১৯ সেন্টিমিটারের টিউমার গজিয়ে উঠেছে। আবারও শুরু হয় কেমো৷ আবারও সেই যন্ত্রণা! তবে কিছুটা হতাশা থেকেই আর চিকিৎসাই করাতে চাননি নায়িকা।

কিন্তু, মা-বাবা, দিদি আর বন্ধু সব্যসাচীর পীড়াপীড়িতে রাজি হন৷ ফের শুরু হয় কঠিন লড়াই৷ অস্ত্রোপচার হয় অভিনেত্রীর৷ তবে ওটি থেকে তাঁকে ফিরিয়ে আনা যাবে কিনা, তা নিয়ে সংশয় ছিল চিকিৎসকের মনে। তিনি কি অস্ত্রপচার করাতে চান? ঐন্দ্রিলার উপরেই ছাড়েন সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার। আরও একবার বাঁচার আশায় অস্ত্রোপচার করানোর সিদ্ধান্ত নেন অভিনেত্রী৷ কাছের মানুষগুলোর ভালবাসার জোরে ফিরে আসেন তিনি। সেই লড়াইয়ে রাজার মতো ফিরে আসা ঐন্দ্রিলা ফের একবার ঝড়ের মুখে৷ ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হাসপাতালে৷ এই খবরে উদ্বেগে গোটা ইন্ডাস্ট্রি৷ শুধু তাঁর ফেরার প্রার্থনা সকলের মনে৷  
 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

two × four =