পুলিশের সামনেই অভিনেত্রী নবনীতাকে খুন-ধর্ষণের হুমকি,নিষ্ক্রীয় পুলিশ, ঘটনার ভিডিয়ো ট্যাগ মুখ্যমন্ত্রীকে

কলকাতা: নিমতা থানার সামনে অভিনেতা-অভিনেত্রীকে হুমকি৷ পুলিশের সামনেই দেওয়া হল খুনের হুমকি৷ মুখ্যমন্ত্রীকে ট্যাগ করে ফেসবুকে ভিডিয়ো পোস্ট করলেন অভিনেত্রী নবনীতা দাস৷ সেখানে নবনীতাকে বলতে শোনা যায়, ‘‘সামনে বলছে ডেড করে দেব৷ এর পরেও কেউ কিছু বলছে না৷ এটা কেমন আইন?’’
আরও পড়ুন- কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবের উদ্বোধনী মঞ্চে রানি-অরিজিৎ, আমন্ত্রিতের তালিকায় আর কারা?
এই ঘটনার সঙ্গেই আরও একবার পুলিশের বিরুদ্ধে উঠল হেনস্থা ও অসহযোগিতার অভিযোগ৷ এই ঘটনার এফআইআর নিতে অস্বীকার করে পুলিশ৷ চার ঘণ্টা ধরে চলে টালবাহানা৷ সাদা কাগজে সই করিয়ে নেওয়ার চেষ্টা হয় বলেও কাঠগড়ায় নিমতা থানার পুলিশ৷ নিমতা থানা থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে খুন-ধর্ষণের হুমকি দেওয়া হয় অভিনেতা জীতু কমলের স্ত্রী অভিনেত্রী নবনীতা দাসকে। ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েন দু'জনেই। শারিরীকভাবে কিছুটা দুর্বল রয়েছেন নবনীতা৷ প্রচণ্ড মানসিক চাপ সামলাতে না পেরে আতঙ্কে কেঁদে ফেলেন তিনি। পরে ফেসবুক লাইভ করে গোটা ঘটনা প্রকাশ্যে নিয়ে আসেন তারকা দম্পতি।
ফেসবুক লাইভে এসে চোখে জল নিয়ে নবনীতা বলেন, “আমি খুব ভয় পেয়ে গিয়েছি। পুলিশের সামনে আমাকে বলা হচ্ছে রেপ করে দেব, ডেথ করে দেব। এটা কীরকম? পুলিশের সামনেই যদি এরকম করে বলা হয়, তাহলে আমি একা থাকলে কী করতে পারে। আমরা কী দোষ করেছি? গাড়ি নিয়ে বের হওয়ার কী আমাদের অপরাধ? আমার প্রচণ্ড ভয় লাগছে।”
ঘটনার সূত্রপাত গাড়ি দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে। নিমতা কাছাকাছি এলাকায় জিতু-নবনীতার গাড়িতে ধাক্কা মারে একটি পণ্যবাহী গাড়ি৷ থানায় অভিযোগ জানায় দুই পক্ষই৷ তাদের মধ্যে বচসাও হয়৷ নবনীতা ও জিতুর অভিযোগ, থানার সামনে গাড়িতে ধাক্কা দেওয়া ব্যক্তিরা লাগাতার খুন, ধর্ষণের হুমকি দেয়। ওই ব্যক্তি বলেন, ‘রাস্তায় ডেড করে দেব৷’ পুলিশ সামনেই সমস্ত ঘটনাটি ঘটে৷ অথচ পুলিশের ভূমিকা ছিল নিষ্ক্রিয়৷ এর পরেই ফেসবুকে ক্ষোভ উগড়ে দেয় তাকরা দম্পতি৷
এই ঘটনা প্রসঙ্গে প্রাক্তন আইজি পঙ্কজ দত্ত বলেন, ‘‘আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছি৷ যে অ্যাসিস্টেন্ট পুলিশ কমিশনার ছিলেন, উনি ঠিক ভাবেই বিষয়টি সামলেছেন৷ যে নীচুতলার পুলিশ কর্মী অভব্য আচরণ করেছিলেন, তাঁর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে৷’’ এদিকে এই ঘটনার প্রতিবাদে পুলিশি নিষ্ক্রীয়তার অভিযোগে নিমতা থানার সামনে বিক্ষোভ করেন বিজেপি’র মহিলা মোর্চা৷ অভিযোগ, গতকাল যখন নবনীতাদের গাড়ির সঙ্গে ওই গাড়িটি ধাক্কা লাগে তখন কর্তব্যরত এএসআই তাঁদের থানায় না যওয়ার পরামর্শ দেন৷ থানায় গেলে তাঁদের চাককে গ্রেফতার করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়৷ অনেক টালবাহানার পর ঘণ্টার চারের পর অভিযোগ নেওয়া হয় এবং অভিযুক্ত পণ্যবাহী গাড়িটির চালক, খালাসি, গাড়ির মালিক ও তাঁদের সহকর্মীকে গ্রেফতার করে পুলিশ৷
এদিকে, জিতু কমলের গাড়ির চালক ও ওই গাড়ির আরোহীদের বিরুদ্ধে অভব্য আচরণ এবং গাড়ি ভাঙচুরের পাল্টা অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। দুই পক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে শীঘ্রই তদন্ত শুরু করা হবে। খতিয়ে দেখা হচ্ছে এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ৷