মুম্বই: প্রযোজক, পরিচালক এবং স্ক্রিপ্ট রাইটার কিরণ রাও এক সময় ছিলেন আমির খানের প্রথম স্ত্রী রীনার সহযোগী৷ আমিরের সঙ্গে তাঁর প্রথম দেখা হয়েছিল লাগানের সেটে৷ এর পর ভালোবাসা, তিন বছরের লিভ ইন, তার পর বিয়ে৷ ১৫ বছরের সুখী দাম্পত্য জীবনের মূল্যবান উপহার তাঁদের একমাত্র সন্তান আজাদ৷ তবে ১৫ বছরের দাম্পত্য জীবনে ইতি টেনে বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিলেন ‘বলিউডের পারফেক্ট জুটি’ আমির-কিরণ৷
আরও পড়ুন- ১৫ বছরের দাম্পত্যে ইতি, বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত আমির-কিরণের
১৯৭৩ সালে বেঙ্গালুরুতে জন্ম হয় কিরণের৷ জন্মসূত্রে হায়দরাবাদের এক রাজ পরিবারে মেয়ে কিরণ। বেঙ্গালুরুতে জন্ম হলেও তাঁর ছোটবেলা কিন্তু কেটেছে কলকাতায়৷ পরে তিনি মুম্বই চলে যান৷ ১৯৯৫ সালে সোফিয়া কলেজ অফ ওম্যান থেকে খাদ্য বিজ্ঞান নিয়ে স্নাতন হওয়ার পর দিল্লির জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া কলেজ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি ঝুলিতে পোড়েন৷ কিন্তু কিরণের স্বপ্ন ছিল পরিচালক হওয়া৷ তাই পড়াশোনা শেষ করেই তিনি বিভিন্ন পরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে শুরু করেন৷ প্রথম প্রথম সেভাবে সাড়া পাননি৷ জুটেছিল কিছু ছোটোখাটো কাজ৷ সেই সময় রীনার সহযোগী হিসাবেও কিছুদিন কাজ করেছিলেন৷ এর পর তিনি জানতে পারেন আশুতোশ গোয়ারিকর একটি ছবি করছেন৷ যোগাযোগ করেন তাঁর সঙ্গে৷ সুযোগও পেয়ে যান৷ সেই ছবিটি ছিলেন ‘লাগান’৷
ওই সিনেমা সহকারী পরিচালক হিসাবে কাজ করেন কিরণ৷ প্রতিটি চরিত্রের মেকআপ, পোশাক থেকে শ্যুটিং-এর ডেট সব কিছু ঠিক করার দায়িত্ব ছিল কিরণের উপর৷ লাগানের সেটেই কিরণকে প্রথম দেখেছিলেন আমির৷ কিন্তু সে ভাবে তখন কথা হত না৷ এই সিনেমার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন রীনাও৷ তবে লাগানে কিরণের কাজে খুশি হয়ে তাঁকে সহকারী হিসাবেই রেখে দিয়েছিলেন আশুতোষ৷ পাশাপাশি কাজ করছিলেন রীনার সঙ্গেও৷ এর পর আরও একটি ছবিতে আমিরের সঙ্গে কাজ শুরু করেন আশুতোষ৷ কিন্তু সেই সময় আমিরের সঙ্গে রীনার বিচ্ছেদ নিয়ে খুবই মানসিক যন্ত্রণার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলেন অভিনেতা৷ আর সেই সময়েই আমিরের মাথা নিজের কাঁধে রাখেন কিরণ৷
আরও পড়ুন- বড় পার্দায় কাজের অভাব? বিতর্কের মাঝেই ফের ছোট পর্দায় ফিরছেন যশ
কিরণ সেদিন ফোনটা করেছিলেন নেহাতই কাজের জন্য৷ কিন্তু প্রথম ফোনেই কিরণের সঙ্গে অনেক কথা বলেছিলেন আমির৷ ভালো লেগেছিল তাঁর৷ এর পর তাঁদের কথা বলার সময় বাড়ে৷ বাড়ে মেলামেশা৷ একে উপরের প্রেমে ডুব দেন আমির-কিরণ৷ ঠিক করেন লিভ-ইন করবেন৷ ৩ বছর লিভ ইনের পর ২০০৫ সালে বিবাহ বন্ধনে বাঁধা পড়ে এই জুটি৷ ২০১১ সালে সারোগেসির মাধ্যমে জন্ম হয় আজাদের৷ তবে এই সম্পর্ককে আর এগিয়ে নিয়ে যেতে চান না তাঁরা৷ কিন্তু আজাদের প্রতি সমস্ত কর্তব্য পালন করতে চান একসঙ্গে৷ একসঙ্গে চলবে পেশাদারিও৷ তবে এবার নতুন অধ্যায়ের সূচনা করতে চলেছেন তাঁরা৷ তবে স্বামী-স্ত্রী হিসাবে নয়, সন্তানের বাবা মা ও একই পরিবারের সদস্য হিসাবে৷