গ্যাংটক: গভীর মনসংযোগ, কঠোর পরিশ্রম আর সততার সঙ্গে যদি কোনও কাজ করা হয়, তাহলে সফলতা হাতের মুঠোয় ধরা দেয়৷ জীবনে চলার পথে অনেক কঠিন পরিস্থিতি তৈরি৷ সেই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে যাঁরা এগিয়ে যেতে পারে, তাঁরাই জয়ী৷ এমনই এক মেয়ের কাহিনি আজ বলব৷ যিনি একাধারে একজন পুলিশ কর্মী, সফল বক্সার, সুপার মডেল এবং বাইকার৷ যাঁকে নিয়ে গর্বিত সিকিম পুলিশ ফোর্স৷
হিন্দিতে একটি প্রবাদ আছে, ‘পাঙ্খ মে কাহা জান হোতি হ্যায়, বাস হসলোঁ মে উডান হোতি হ্যায়৷’ সত্যিই মনের অদন্য ইচ্ছাশক্তির উপর ভর করেই পাখা মেলা যায় দূর আকাশে৷ তেমটাই করে দেখিয়েছেন পাহাড়ি মেয়ে একশা কেরুং৷ যাঁরা জীবন যুদ্ধে উঠে আসা চ্যালেঞ্জগুলির মোকাবিলা না করে হাল ছেড়ে দেন, তাঁদের কাছে একশা একটি উদাহরণ।
সিকিমের এই তরুণী স্থানীয় মানুষের কাছে একশা হ্যাং সুব্বা নামেও পরিচিত৷ যিনি নিজের জীবন দিয়ে প্রমাণ করেছেন মেয়েরা কোনও অংশে কম নয়৷ ২০১৯ সালে সিকিম পুলিশে যোগ দেন একশা। এই সাহসী তরুণীকে বাহিনীতে পেয়ে গর্বিত তাঁর অফিসাররা৷ কঠোর পরিশ্রম করেই পুলিশের চাকরি পেয়েছিলেন তিনি। তাঁর জীবনদর্শন বহু মেয়েকে অনুপ্রাণিত করেছে৷ একশাকে আদর্শ করে নতুন উদ্যমে বাঁচার শক্তি পেয়েছে সিকিমের মেয়েরা৷ তবে একশা শুধু একজন সাহসি পুলিশ অফিসার নন৷ তিনি একজন জাতীয় পর্যায়ের বক্সার, বাইক আরোহী এবং সুপার মডেল।
বরাবরই মডেলিংয়ের প্রতি অনুরক্ত ছিলেন একশা। সেই কারণেই তিনি পা রেখেছিলেন ‘এমটিভি সুপারমডেল’ -এর মঞ্চে৷ একশা কেরুং এমটিভি রিয়েলিটি শো ‘এমটিভি সুপারমডেল অফ দ্য ইয়ার সিজন ২’-এর সেরা দশে জায়গা করে নিয়েছেন। এই প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত ফলাফল এখনও আসেনি৷ চূড়ান্ত ফল প্রকাশের পরেই জানা যাবে মডেলিং-এর শিরোপা একশার শিয়রে উঠল কিনা৷
একশা স্বপ্ন দেখেন বিশ্বের সবচেয়ে বড় সুপার মডেল হওয়ার। সকলেই বলেন, কেউ দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হলে পৃথিবীতে কোনও কিছুই অসম্ভব নয়। আর একশা সারা বিশ্বকে বলতে চান, যে এমন কিছুই নেই যা মেয়েরা করতে পারে না। একশার এই জেদই সমাদৃত হয়েছে গোটা দেশে৷ এমটিভি শোতে নিজের পরিচয় দেওয়ার পর তাঁকে কুর্নিশ জানিয়েছিলেন খোদ মালাইকা অরোরা৷
একশা যখন যে কাজটি করেন, তাতে ডুবে যান৷ তাঁর পরিচিতরা বলেন, মাত্র ১৯ বছর বয়সে পুলিশের চাকরি পাওয়ার পর আবেগে ভেসে গিয়েছিলে একশা৷ আবার যখন মডেলিং করছেন, তখন তাঁর ফোকাস শুধুই সেটার দিকে। একইভাবে, তিনি যখন বক্সিং রিংয়ে থাকেন, তখন গেম ছাড়া আর কিছুই বোঝে না একশা৷ তাঁর লক্ষ্য হয়ে ওঠে ম্যাচ জেতা৷
একই ভাবে সোশ্যাল মিডিয়াতেও দারুণ জনপ্রিয় একশা কেরুং৷ তার ইনস্টাগ্রাম পেজে বিভিন্ন রূপে তাঁর প্রচুর ছবি রয়েছে৷ তাঁর অনুরাগীর সংখ্যাও নেহাত কম নয়৷ পাশাপাশি বাইক নিয়েও দারুণ প্যাশনেট একশা৷