পরিযায়ী শ্রমিকের আদলে দুর্গা মূর্তি, শিল্পীকে কুর্নিশ বলিউড শিল্পীদের

কলকাতা: প্রতি বছর কলকাতার দুর্গাপুজো প্যান্ডেল ও প্রতিমার ক্ষেত্রে নতুন নতুন থিম নিয়ে আসে। চলে প্রতিযোগিতা। এ বছর মহামারীর কারণে প্রতিযোগিতা না হলেও থিম পুজোর বিরাম নেই। এ বছর বড়িশা ক্লাবের প্রতিমা দৃষ্টি কেড়েছে গোটা দেশের। তাদের প্রতিমায় ফুটে উঠেছে পরিযায়ী শ্রমিকদের যন্ত্রণার কথা। মা দুর্গা এখানে এক পরিযায়ী শ্রমিক। শিল্পীর এই ভাবনাকে কুর্নিশ জানিয়েছে বলিউডও।

7d456035ce305687fcadb2b7e5f429fe

কলকাতা: প্রতি বছর কলকাতার দুর্গাপুজো প্যান্ডেল ও প্রতিমার ক্ষেত্রে নতুন নতুন থিম নিয়ে আসে। চলে প্রতিযোগিতা। এ বছর মহামারীর কারণে প্রতিযোগিতা না হলেও থিম পুজোর বিরাম নেই। এ বছর বড়িশা ক্লাবের প্রতিমা দৃষ্টি কেড়েছে গোটা দেশের। তাদের প্রতিমায় ফুটে উঠেছে পরিযায়ী শ্রমিকদের যন্ত্রণার কথা। মা দুর্গা এখানে এক পরিযায়ী শ্রমিক। শিল্পীর এই ভাবনাকে কুর্নিশ জানিয়েছে বলিউডও।

থিমের ডিজাইনার রিন্টু দাস। মূর্তি গড়েছেন কৃষ্ণনগরের ভাস্কর পল্লব ভৌমিক। লকডাউনের মধ্যে কয়েক হাজার পরিযায়ী শ্রমিক মাইলের পর মাইল হেঁটে এবং বাড়িতে পৌঁছেছিল। তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে তৈরি হয়েছে এই প্যান্ডেল। রিন্টু দাস ও পল্লব ভৌমিকের এই প্রচেষ্টা বেশ কয়েকজন বলিউড সেলিব্রিটির দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। বড়িশা ক্লাবের এই দুর্গা প্রতিমার ছবি এখন নেটদুনিয়ায় ভাইরাল। অভিনেত্রী রবিনা ট্যান্ডন দুর্গা প্রতিমার একটি ছবি শেয়ার করেছেন এবং টুইট করেছেন, “কলকাতার অন্যতম প্রধান প্যান্ডেলে এই বছরের পুজোর জন্য ভাস্কর পল্লব ভৌমিকের কাজ। মা দুর্গা ও তাঁর সন্তানরা এখানে পরিযায়ী শ্রমিক।”

উর্মিলা মাতন্ডকর টুইট করেছেন, “মানুষ আপনাকে যা বলুক না কেন, শব্দ আর ধারণা বিশ্বকে বদলে দিতে পারে। বাংলার শিল্পী পল্লব ভৌমিকের মা দুর্গার সবচেয়ে চমকপ্রদ চিত্র। মা দুর্গা তাঁর সন্তানরা এখানে পরিযায়ী শ্রমিক। আপনারা সবাইকে নবরাত্রির শুভেচ্ছা।” টিসকা চোপড়া পোস্ট করেছেন, “অনেক সময়ই আমরা চেতনাকে উদযাপিত করেছি। দেবী দুর্গা ও তাঁর সন্তানদের এখানে পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে কল্পনা করা হয়েছে।” সায়ানী গুপ্ত লিখেছেন, “এ কারণেই বাংলার দুর্গা প্রতিমাগুলি প্রতিনিধিত্ব এবং ইনক্লুসিভিটির ক্ষেত্রে বরাবর কয়েক মাইল এগিয়ে থাকে। একেই বলে শিল্প।”

পল্লব ভৌমিক তাঁর শিল্প দিয়ে সবাইকে অবাক করে দিয়েছিলেন। একটি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, “আমি সোশ্যাল মিডিয়ায় খুব বেশি সক্রিয় নেই এবং আমার ধারণাও ছিল না যে বলিউড তারকারা আমার সৃষ্টি পছন্দ করেছেন। এই প্রতিমাটি তৈরি করতে আমার দুই মাস সময় লেগেছে। আমি আগস্টে এর কাজ শুরু করি। এটি ফাইবার গ্লাস দিয়ে তৈরি। রিন্টু দাস এই থিমটি তৈরি করেছিলেন এবং আমি তাঁর নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতিমাটি তৈরি করেছি। আমার প্রধান প্রেরণা তাঁর দুর্গা সিরিজ থেকে প্রয়াত শিল্পী বিকাশ ভট্টাচার্যের চিত্রকর্ম।” রিন্টু দাস বলেছেন, “লকডাউনের সময় বাড়ির মধ্যে যখন আবদ্ধ ছিলাম তখন এই অনুপ্রেরণা আমার মাথায় আসে। তখনই আমি স্থির করেছিলাম যে এই বছরের দুর্গাপুজো থিম পরিযায়ী শ্রমিকদের, বিশেষত মহিলাদের এবং তাদের সংগ্রামকে শ্রদ্ধা জানানো উচিত। তারপরে আমি বাড়িশা ক্লাবে এই প্রস্তাবটি দিয়েছিলাম। দেবী দুর্গা কেবল প্রতিমার মধ্যেই নয়, প্রতিটি মহিলার মধ্যেই বাস করেন। এই কারণেই আমরা এই প্রতিমার মাধ্যমে নারীশক্তিকে শ্রদ্ধা নিবেদন করছি।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *