মুম্বই: বৃহনমুম্বাই মিউনিসিপাল কর্পোরেশন কঙ্গনা রানাউতের অফিসে অবৈধ নির্মাণ হয়েছে অভিযোগ তুলে তা ভাঙার কাজ শুরু করেছিল। বুধবার সকালে তার বিরুদ্ধে বম্বে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন অভিনেত্রী কঙ্গনা। দিন শেষ হওয়ার আগেই বম্বে হাই কোর্টের রায় দিল আপাতত কঙ্গনার অফিস ভাঙতে পারবে না BNC। বৃহস্পতিবার বিকেল ৩ টে পর্যন্ত কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আদালতে তরফে।
শিবসেনার বিরুদ্ধে কঙ্গনার মন্তব্যের পরে তাঁর উপর ঝুলছে খাঁড়া। বুধবার সকালে অভিনেত্রীর মুম্বই অফিস ভাঙার কথা ঘোষণা করে বৃহনমুম্বাই মিউনিসিপাল কর্পোরেশন। জানানো হয় কঙ্গনার অফিসে একাধিক এমন নির্মাণ রয়েছে যা বেআইনি। এরপরই শুরু হয়ে যায় অফিস ভাঙার কাজ। একটি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে বিএমসির একজন প্রবীণ কর্মকর্তা বলেছিলেন, “আমরা তাঁকে নোটিসের জবাব দেওয়ার জন্য ২৪ ঘণ্টা সময় দিয়েছি। কিন্তু তিনি কোনও উত্তর দেননি।” এই কর্মকর্তা বলেন, কঙ্গনা রানাউতের অফিসের অভ্যন্তরে বেশ কয়েকটি অবৈধ ও অননুমোদিত নির্মাণ কাজ রয়েছে এবং সেই কারণেই এই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। BMC-র তরফে জানানো হয়, বেশ কয়েকটি অবৈধ নির্মাণ করেছেন কঙ্গনা। এই ঘোষণার পরই কঙ্গনার অফিস ভাঙার কাজ শুরু হয়।
এদিকে বুধবার বেলা ২টো ৫৬ মিনিটে মুম্বইয়ের ছত্রপতি শিবাজী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামেন কঙ্গনা রানাউত। বিমানবন্দরে ছিল কঠোর নিরাপত্তা। তার মধ্যে উঠে নিজের মুম্বাইয়ে বাসভবনের দিকে রওনা দেন কঙ্গনা। বিমানবন্দরে বিক্ষোভের মুখেও পড়তে হয় অভিনেত্রীকে। এ দিন সকালেই তার মণিকর্ণিকা প্রোডাকশনের অফিস ভাঙচুর করার খবর প্রকাশে আসতেই কঙ্গনা জানান যে সত্যিকারের পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর পরিণত হয়েছে মুম্বাই। তিনি মুম্বই আসার আগেই তার অফিস ভাঙ্গা তোড়জোড় শুরু হয়। এরপর এই ঘটনাটা নিয়ে বম্বে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন কঙ্গনা। হাইকোর্টের তরফে বৃহস্পতিবার বেলা ৩টে পর্যন্ত কাজ স্থগিত রাখার নির্দেশ দেওয়া হয় BMCকে। বম্বে হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করেন অভিনেত্রী। মামলার বিচারপতি এস কাথাওয়ালার বেঞ্চে এই পিটিশনের শুনানি হবে বৃহস্পতিবার। কঙ্গনার আইনজীবী জানিয়েছেন, BMC যা ভাবছে, তেমন কোনও ভুল কাজ কঙ্গনা তাঁর অফিসে করেননি। তাই তাদের স্টপ ওয়ার্ক নোটিশের কোনও আইনি ভিত্তি নেই। শুধুমাত্র ক্ষমতার অপব্যবহার করে কঙ্গনাকে হেনস্থা করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ তোলেন তিনি।
BMC কঙ্গনার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ এনেছে তার মধ্যে উল্লেক্ষ্য হল-
১) নিচতলায় শৌচাগার অবৈধভাবে অফিসের কেবিনে রূপান্তরিত করা হয়েছে।
২) নিচতলায় স্টোর রুমে অননুমোদিত রান্নাঘরে তৈরি হয়েছে।
৩) স্টোরের অভ্যন্তরে সিঁড়ির পাশে এবং নিচতলায় পার্কিংয়ে অন্য একটি শৌচাগার অবৈধভাবে নির্মিত করা হয়েছে।
৪) নিচতলায় নির্মিত পেন্ট্রির কোনও অনুমোদন নেই।
৫) প্রথম তলায় লিভিং রুমে তৈরি কাঠের পার্টিশন সহ কক্ষ / কেবিন অননুমোদিত।
৬) প্রথম তলায় পুজোর ঘরে কাঠের পার্টিশন সহ মিটিং রুম / কেবিনেরও অনুমোদন নেই।
৭) প্রথম তলায় ইটের ডিজাউনের দেওয়াল এবং স্ল্যাব সহ উন্মুক্ত চৌকিতে অননুমোদিত শৌচাগার নির্মাণ করা হয়েছে।
৮) দ্বিতীয় তলায় সম্মুখ স্ল্যাব অনুভূমিক প্রসারিত হওয়ার অনুমতি নেই।
৯) ৪ নম্বর বাংলোর সঙ্গে ৫ নম্বর বাংলোর দ্বিতীয় তলায় পার্টিশন ভেঙে ফেলা হয়েছে অনুমতি না নিয়েই।
১০) সংলগ্ন বেডরুমের টয়লেট (৪ নম্বর বাংলো) ভেঙে ফেলা হয়েছে এবং একই ক্ষেত্রটি দ্বিতীয় তলায় বাসযোগ্য অঞ্চল হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে যার অনুমতি নেই।
১১) প্রধান প্রবেশদ্বারের অবস্থান পরিবর্তিত হয়েছে অনুমতি না নিয়েই।