কলকাতা: অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর সঙ্গে জড়িত ড্রাগস সম্পর্কিত মামলায় অভিনেত্রী রিয়া চক্রবর্তী গ্রেপ্তার হয়েছেন সম্প্রতি। তাঁর জামিনের আবেদনও খারিজ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু রিয়ার পাশে দাঁড়িয়ে তাঁকে হেনস্তা করার অভিযোগ তুলে শনিবার পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেস পার্টি কলকাতায় একটি সমাবেশ করে। মধ্য কলকাতায় পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির সদর দফতর থেকে বের হওয়া সমাবেশে কয়েকশো দলীয় কর্মী অংশ নিয়েছিলেন। পার্টির পক্ষ থেকে পশ্চিম মেদিনীপুর ও পশ্চিম বর্ধমান জেলায়ও একই জাতীয় শোভাযাত্রা বের করা হয়েছিল।
নেতারা তদন্তের নামে ‘বাংলার কন্যার’ বিরুদ্ধে কথিত ‘নিন্দনীয় অভিযানের’ বিরোধিতা করে স্লোগান দেন। “তিনি (রিয়া) ন্যায়বিচার না পাওয়া পর্যন্ত আমরা থামব না” এমন লেখা প্ল্যাকার্ডও ধরে ছিলেন দলের সমর্থকরা। কংগ্রেস লোকসভা নেতা এবং পশ্চিমবঙ্গ পার্টির ইউনিট প্রধান অধীর রঞ্জন চৌধুরী রিয়া চক্রবর্তীকে 'বাঙালি ব্রাহ্মণ' হিসাবে অভিহিত করার তিন দিন পরে এই ঘটনা ঘটল। অধীর চৌধুরী দিন কয়েক আগে টুইট করেছিলেন, “পশ্চিমবঙ্গের মেয়ে রিয়া চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র এবং উসকানিমূলক আচরণ সহ্য করা হবে না।” বুধবার তিনি বলেন যে সুশান্ত সিং রাজপুত একজন ভারতীয় অভিনেতা। তবে কেবল নির্বাচনী ব্রাউন পয়েন্ট অর্জন করতেই বিজেপি তাঁকে 'বিহারি অভিনেতা' হিসাবে প্রচার চালাচ্ছে।
এই ঘটনার পালটা দিয়েছে বিজেপিও। কংগ্রেসে কটূক্তি করেছে তারা। বিজেপির জাতীয় সাধারণ সম্পাদক রাহুল সিনহা বলেছেন, “শতাব্দী প্রাচীন পুরাতন কংগ্রেস দলটির হাতে আজ কোনও বিষয় নেই। এ কারণেই তারা ভাষার প্রতি এ জাতীয় ক্ষুদ্র রাজনীতি খেলছে। এটা দুর্ভাগ্য। আইন তার নিজস্ব পথে চলবে। এ নিয়ে প্রশ্ন তোলার অর্থ তারা বিচার ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। তদন্ত সংস্থাগুলি যাই করুক না কেন, শেষ পর্যন্ত বিষয়টি আদালতে পৌঁছবে।” সংসদ ও তৃণমূল সদস্য সৌগত রায় আগে বলেছিলেন “আদালতে দোষী প্রমাণিত হওয়ার আগেই তাঁকে নির্যাতনের শিকার হতে হল। নিন্দনীয় এই অভিযান আবারও বাঙালির প্রতি বিজেপির নিবিড় ঘৃণা প্রমাণ করে।”
সুশান্ত মৃত্যু মামলায় রিয়া চক্রবর্তী সামনে আসার পর সোশ্যাল মিডিয়ায় বাঙালি মহিলাদের বিরুদ্ধে ট্রোল শুরু হয়েছিল। বর্তমানে NCB গ্রেপ্তার করেছে রিয়াকে। ড্রাগ মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন রিয়া। টুইটারে অধীর চৌধুরী করেছেন, “প্রয়াত তারকা সুশান্ত সিংহ রাজপুত ছিলেন একজন ভারতীয় অভিনেতা। বিজেপি তাঁকে বিহারি অভিনেতা হিসাবে পরিণত করেছে কেবলমাত্র নির্বাচনে পয়েন্ট অর্জন করতে। রিয়ার বাবা একজন প্রাক্তন সামরিক কর্মকর্তা। জাতির সেবা করেছেন। রিয়া একজন বাঙালি ব্রাহ্মণ মহিলা। অভিনেতা সুশান্ত রাজপুতের ন্যায়বিচারকে বিহারীর ন্যায়বিচার হিসাবে ব্যাখ্যা করা উচিত নয়।” একদিকে বিজেপি রাজপুতকে নিয়ে বিহারের দিকে দড়ি টানছেন। অন্যদিকে এই পরিস্থিতিতে তৃণমূল কংগ্রেস চুপ। এর মাঝে অধীর বিহার ও বাংলায় প্রান্তিক নির্বাচনী লড়াইয়ে অধীর চৌধুরী এক ধাপ এগিয়ে গিয়েছেন। টুইটারে তিনি এও লিখেছেন, “রিয়ার বাবাও তাঁর বাচ্চাদের জন্য ন্যায়বিচার দাবি করার অধিকারী।”