কলকাতা: ক্রমশ সুস্থ হয়ে উঠছেন অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। তাঁর অবস্থা আগের চেয়ে অনেকটাই স্থিতিশীল। তাঁর স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগে ভক্তরা। উদ্বিগ্ন অমিতাভ বচ্চনও। মুম্বই থেকে তিনি ফেলুদার স্বাস্থ্যের খবর নিলেন। চেক আপের জন্য সম্প্রতি হাসপাতালে গিয়েছিলেন অমিতাভ বচ্চন। অমিতাভের চিকিৎসক ও সৌমিত্রের চিকিৎসক বন্ধু। নিজের চিকিৎসকের কাছ থেকেই সৌমিত্রর খবর নেন অমিতাভ।
স্বাস্থ্যের উন্নতি হলেও তিন দিন দুর্বল সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। ঠিকমতো কথা বলতে পারছেন না অভিনেতা। মুখ দিয়ে খেতেও পারছেন না। তাঁর স্নায়বিক অবস্থা নিয়ে চিন্তিত চিকিৎসকরা। সোমবার মিন্টো পার্কের বেসরকারি হাসপাতালের স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞেরা নতুন পথের সন্ধান করছেন। ফিজিয়োথেরাপির পাশাপাশি অভিনেতার স্পিচথেরাপিও শুরু হয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন চোখে পড়েনি। তবে সৌমিত্র যে এখন বিপন্মুক্ত, তা জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। কিন্তু তাঁকে স্বাভাবিক অবস্থাত ফিরতে আরও কিছুদন সময় লাগবে বলে মনে করা হচ্ছে।
করোনা থেকে সেরে ওঠার পর ক্রমশই শরীর ঠিক হচ্ছে অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের। শনিবার কথা বললেন তিনি। প্রশ্নের উত্তরে প্রতিক্রিয়াও জানা্চ্ছেন। শুনছেন রবীন্দ্রসংগীত ও নিজের ছবির গান। অভিনেতাকে সুস্থ করে তুলতে মিউজিক থেরাপির সাহায্য নিয়েছেন চিকিৎসকরা। চিকিৎসকদের বক্তব্য তাঁকে সুস্ত করতে তাঁর পছন্দের গানগুলো শোনানো হচ্ছে। এতে অভিনেতার মস্তিষ্কের আবেগের কেন্দ্র হাইপোথ্যালামাস অংশ সক্রিয় হবে৷ যা মানসিক শান্তি, স্বস্তি ও আনন্দ বাড়াতে সাহায্য করবে। এনআইবিপি মনিটরে এর ফলাফল ধরাও পড়েছে। এছাড়া অভিনেতাকে দেওয়া হচ্ছে ইন্ট্রাভেনাস ইমিউনো গ্লোবিউলিং এবং থাইমোসিন আলফা ওষুধ। এগুলি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এনসেফ্যালোপ্যাথির সমস্যা কাটানোর জন্য পালস মিথাইল প্রেডনিসোল ওষুধের মাত্রা বাড়ানো হয়েছে অভিনেতার। হাসপাতাল সূত্রে খবর, চিকিৎসায় ইতিবাচক সাড়া দিচ্ছেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। শনিবার দুপুরে ভালই ঘুম হয়েছে তাঁর। তবে এখনও তাঁকে ITU থেকে সাধারণ কেবিনে আনা হয়নি। ICU-তেই রয়েছেন তিনি। তাঁর এখন আর জ্বর নেই।
এ মাসের মাঝামাঝি থেকেই অসুস্থ সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। জ্বর আসে তাঁর। হালকা করোনা উপসর্গ দেখা দেওয়ায় করোনা পরীক্ষা করা হয় তাঁর। সোমবার পরীক্ষার রিপোর্ট আসে। তখনই জানা যায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন অভিনেতা। মঙ্গলবার বর্ষীয়ান অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের করোনা ধরা পড়ে। মিন্টো পার্ক এলাকার এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। বয়সের কারণে ও অন্যান্য অসুস্থতার কারণে তাঁকে ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে রাখা হয়। তাঁর স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণের জন্য মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। ১৬ জন চিকিৎসক তাঁকে দেখছেন। করোনার পাশাপাশি আরও সমস্যা দেখা দেয় সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের। স্নায়ুর সমস্যা শুরু হয়েছিল তাঁর। এছাড়া তাঁর ফুসফুসের অবস্থা নিয়েও চিন্তিত ছিলেন চিকিৎসকরা। তাছাড়া ক্যানসারও এই ক্রমশ শরীরে ছড়িয়ে পড়ছিল মস্তিষ্কে এবং ফুসফুসে। তবে দ্বিতীয় প্লাজমা থেরাপির পর তিনি কিছুটা হলেও স্থিতিশীল হয়েছিলেন। আর বুধবার রাতে জানা যায় করোনা মুক্ত হয়েছেন তিনি।