‘এবারও বেঁচে যেত, চিকিৎসকদের ইগো ঠেলে দিল ডিপ কোমায়’, বিস্ফোরক মা

‘এবারও বেঁচে যেত, চিকিৎসকদের ইগো ঠেলে দিল ডিপ কোমায়’, বিস্ফোরক মা

কলকাতা: ঐন্দ্রিলা শর্মা আর নেই৷ গত ২১ নভেম্বর সকলকে চির বিদায় জানিয়ে অমৃতলোকে পাড়ি দেন অভিনেত্রী৷ ‘জিয়ন কাঠি’ ছুঁইয়ে আপামর দর্শকের মনে জায়গা করে নিয়েছিলেন তিনি। তাঁর আর সবস্যাচী চৌধুরীর সম্পর্ক আজ অনেকের কাছেই আদর্শ৷ দু’বার ক্যান্সারকে জয় করে ফিরে এসেছিলেন৷ কিন্তু তৃতীয়বার ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার পর সব শেষ৷ টানা ২০ দিন হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে হারতে হয় তাঁকে৷ সকলের প্রার্থনা ব্যর্থ করে পঞ্চভূতে বিলীন হন ঐন্দ্রিলা৷ কিন্তু, অভিনেত্রীর মৃত্যু ঘিরে এবার বিস্ফোরক দাবি করলেন তাঁর মা৷ 

আরও পড়ুন- ‘জীবন কখনও রোদ ঝলমলে… কখনও সাদাকালো’, লাস্যময়ী অবতারে ঘুম কাড়লেন ঋতাভরী

সম্প্রতি এক জীবনবিমা কর্মচারী কমিটির পক্ষ থেকে ঐন্দ্রিলা শর্মার উদ্দেশে স্মরণসভার আয়োজন করা হয়েছিল। ঐন্দ্রিলার মৃত্যুর পর প্রথমবার ওই অনুষ্ঠানেই প্রকাশ্যে আসেন অভিনেত্রীর মা শিখা শর্মা৷ সেখানে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময় বিস্ফোরক মন্তব্য করেন তিনি৷ শিখাদেবী বলেন, ‘‘হাওড়ার যে হাসপাতালে ভর্তি ছিল ঐন্দ্রিলা, সেই হাসপাতালের চিকিৎসকদের ইগোর কারণেই ডিপ কোমায় চলে গিয়েছিল ও৷ ’’ 

কথা বলতে বলতে বারবার চোখ ভিজে আসে তাঁর৷ বলেন, ‘‘ওই আমাদের সংসারের মেরুদণ্ড ছিল৷ যাবতীয় সিদ্ধান্ত নিত ওই৷ ওর দিদি ডাক্তার হতে পারে, কিন্তু বোনের সঙ্গে কথা না বলে কোনও কাজ করত না৷ যতদিন বাঁচব হাহাকার নিয়ে বাঁচতে হবে আমাদের৷’’ তিনি আরও বলেন,  ‘দু দুবার ক্যানসারের সঙ্গে লড়েছে। কিন্তু কখনও চোখের জল ফেলেনি আমার মেয়েটা। ওঁকে খুব কম কাঁদতে দেখেছি৷ সেদিন ও আমার পাশেই শুয়েছিল। হঠাৎ যে কী হয়ে গেল৷ হাত-পা আর লড়ল না, ১০ মিনিটে সব ওলট পালট হয়ে গেল। এর পর অপারেশন হল। জ্ঞানও ফিরেছিল৷ কিন্তু তারপর কোমায় চলে গেল। জানি না কী চিকিৎসা করেছে! হাসপাতালের নার্সিং কেয়ার খুবই ভালো ছিল। আমরা খুব খুশিও ছিলাম। কিন্তু পোস্ট অপারেটিভ ট্রিটমেন্ট নিয়ে একটা প্রশ্নচিহ্ন থেকেই গেল।’    

এখানেই থেমে থাকেননি শিখাদেবী৷ তিনি আরও বলেন, ‘দুজন ডাক্তারের মধ্যে ইগোর লড়ই চলছিল। ঐন্দ্রিলার অপারেশন করেছিলেন ডা. ঘোষ৷ তিনি এক কথায় অমায়িক। কিন্তু যে চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে ও ভর্তি ছিল,  ডা. পিয়া ঘোষ আমাদের সঙ্গে একেবারেই সহযোগিতা করেননি। এমআরআই করাটা ওর পক্ষে একদম ঠিক হয়নি। আমরা এই নিয়ে নিজেদের মধ্যে অনেক আলোচনা করেছি৷ একজন বাদে সবাই কো-অপারেট করেছেন৷ উনি ইগোর কারণে সহযোগিতা করেননি। উনিই দায়িত্ব নিয়ে ঐন্দ্রিলাকে ডিপ কোমায় পৌঁছে দিলেন।’’ 

শিখাদেবীর কথায়, ‘‘ডা. পিয়া ঘোষ কতটা চিকিৎসক আর কতটা মানবিক জানি না। অনেক ডাক্তার ওঁর চিকিৎসা করেছেন৷ কিন্তু উনি সেটা ফলো করেননি। আমার বড় মেয়ে ডাক্তার, ও নিজেও অনেক অনুরোধ করেছিল৷ কিন্তু, উনি শুনতে চাননি। ওর কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হতই না। ও বাঁচতে পারত। নাহলে রিভার্স করত। ওইটুকু মেয়েটা ১০টা অ্যাটাক সহ্য করেছে৷ কতটা শক্ত হার্ট ছিল ওর। না হলে সাধারণত দুবার অ্যাটাক হলেই মানুষ মারা যায়। ওর লাং শক্ত ছিল, কিডনি শক্ত ছিল। একটা ব্রেনের অপারেশন। সেটা ঠিক মতো হয়নি। একটা ইগো ২৪ বছরের মেয়ের প্রাণ কেড়ে নিল।’