কলকাতা: বুধবার রাতে নাগের বাজারের ফ্ল্যাট থেকে উঠতি মডেল বিদিশা দে মজুমদারের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পাশাপাশি তিন পাতার একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করা হয়। সেই তিন পাতার সুইসাইড নোটে বাবা-মা- বোন বা অন্যান্য কাছের মানুষের উল্লেখ থাকলেও সম্পর্কের কথা উল্লেখ নেই। অন্যদিকে, হোয়াটস অ্যাপের মৃত্যুর আগের কয়েক ঘণ্টা সম্পর্কের বিচ্ছেদ নিয়েই যন্ত্রণার কথা বলে গিয়েছেন কাছের বান্ধবীকে।
পুলিশ সূত্রের খবর, তিন পাতার সুইসাইড নোটে পরিষ্কার নিজের পরিচয় তৈরি করার জন্য মডেল তথা অভিনেত্রী কতটা লড়াই করছিলেন। নিজের পরিচয় তৈরি করার জন্য কাঁকিনাড়ার বাড়ি থেকে নাগের বাজারের ফ্ল্যাটে থাকতে শুরু করেছিলেন। তীব্র লড়াইয়ের পরেও কোনও আশানরূপ ফল পাচ্ছিলেন না বিদিশা। সেই কারণেই আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছিলেন তিনি বলে প্রাথমিক সূত্রে পুলিশ মনে করছে। সুইসাইড নোট থেকে পুলিশ জানতে পেরেছে, আগে দুবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন উঠতি মডেল বিদিশা। কিন্তু সেই সময় তিনি সাহস জোগাড় করতে পারেনি বলে লেখা রয়েছে।
যদিও হোয়াটস অ্যাপে কাছের বন্ধু দিয়া দাসকে অন্য কথা বলেছেন। বন্ধুকে উঠতি মডেল মেসেজে লিখেছিলেন, ‘ওকে ছাড়া বাঁচতে পারব না রে, বাবা-মায়ের থেকে ওকে বেশি ভালোবাসি।’ পুলিশ সূত্রের খবর, মৃত্যুর আগে বান্ধবী দিয়া দাসের সঙ্গে মেসেজে কথা বলেন বিদিশা। সেখানে তিনি বার বার সঙ্গীকে কতটা ভালোবাসতেন তাই বোঝাতে চেয়েছিলেন। ইতিমধ্যে পুলিশ বান্ধবীর সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। বান্ধবী দিয়া দাসের দাবি, অনুভব বেরা নামে এক যুবকের সঙ্গে বিদিশার সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল। তাঁকে ভীষণ ভালোবাসতেন। তারপরেই বিদিশা জানতে পেরেছিলেন, অনুভব অন্য কারও সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন। এই খবরটা জানার পরেই বিদিশা মানসিকভাবে ভীষণ ভেঙে পড়েছিলেন।
প্রথমে টেলি অভিনেত্রী পল্লবী দের আত্মহত্যা, তার কয়েকদিনের মধ্যে উঠতি মডেল বিদিশা দে মজুমদারের আত্মহত্যা নতুন করে ভাবাচ্ছে। প্রশ্ন উঠতে শুরু করছে, তরুণ অভিনেত্রী, মডেলরা এত অল্পেই নিজেদের শেষ করে দেওয়ার কথা কেন ভাবছেন? মনোবিদরা যদিও জানাচ্ছেন, খুব তাড়াতাড়ি সাফল্য পাওয়ার আশাই তাঁদের জন্য কাল হয়ে দাঁড়াচ্ছে। তাঁরা জানিয়েছে, সবাই জীবনে সফল হতে চান। কিন্তু সফল হতে গেলে প্রয়োজন অধ্যাবসা, পরিশ্রম। কিন্তু শর্টকার্টে সফল হওয়ার চেষ্টা করতে গিয়েই তরুণ প্রজন্ম অবসাদে ভুগতে শুরু করেছে।