মুম্বই: গতকাল ছিল সরস্বতী পুজো। এখনও ভাসান দেওয়া হয়নি মাকে। কিন্তু দেশবাসীকে কাঁদিয়ে মানবরূপী সরস্বতী চির বিদায় নিয়ে নিলেন তার আগেই। মুম্বইয়ের শিবাজি পার্কে শেষকৃত্য সম্পন্ন হল সুর সম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেশকরের। সেখানে উপস্থিত ছিলেন লতা মঙ্গেশকরের পরিবারের সদস্যরা। মরদেহ নিয়ে পৌঁছেছিলেন বোন আশা ভোঁসলে। একে একে এসেছিলেন শাহরুখ খান থেকে শুরু করে শচীন তেণ্ডুলকর, মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে, এনসিপি সুপ্রিমো শরদ পাওয়ার সহ বিশিষ্টরা। উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। কোভিডে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন ‘কোকিলকণ্ঠী’ লতা মঙ্গেশকর। তবে শুধু করোনা নয়, জানা গিয়েছিল তিনি নিউমোনিয়াতেও আক্রান্ত হয়েছিলেন। তাঁকে নিয়ে বেশ চিন্তায় ছিলেন চিকিৎসকরা। একে বয়সজনিত কারণ, অন্যদিকে করোনার সঙ্গে ফুসফুসে সংক্রমণ, দুইয়ে মিলিয়ে উদ্বেগ ছিল। শেষে কোভিড পরবর্তী জটিলতা কেড়ে নিল তাঁর প্রাণ।
করোনা আক্রান্ত হওয়ায় গত ১১ জানুয়ারি তাঁকে মুম্বইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯২ বছর। গত বছর ২৮ সেপ্টেম্বর ৯২ বছর পূর্ণ করেছেন সুর সাম্রাজ্ঞী। তিনি দীর্ঘদিন ধরেই গৃহবন্দি৷ বাইরে বিশেষ বেরতেন না৷ তবে তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ তৎপর ছিলেন৷ মনে করা হচ্ছে, কোনও ঘনিষ্ট ব্যক্তি বা পরিচারিকার থেকে তিনি সংক্রমিত হয়েছিলেন৷ এদিন হাসপাতালে তাঁকে শেষবার দেখতে আসেন তাবড় ব্যক্তিত্বরা। এসেছিলেন শচীন তেন্ডুলকর। বাড়িতে যখন শিল্পীর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় তখনও সেখানে যান অমিতাভ বচ্চন থেকে শুরু করে জাভেদ আখতার, অনুপম খের সহ আরও অনেকে। জানা গিয়েছিল যে, গতকাল থেকেই লতাজির শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে রাখা হয় ভেন্টিলেশনে। আজ সকাল ৮ টা ১২ নাগাদ সব শেষ। লতা মঙ্গেশকরের মৃত্যুতে ২ দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে। আগামীকাল বাংলাতেও অর্ধ দিবস ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
তাঁর গানের গলা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছিল, তাঁর উর্দু উচ্চারণ নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল, কিন্তু তিনি থেমে যাননি। সব সমালোচনাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে এগিয়ে গিয়েছিলেন জীবন যুদ্ধে। ১৩ বছর বয়সে যে পথচলা শুরু করেছিলেন তা এসে থামল ৯২ বছর বয়সে। পঞ্চভূতে বিলীন হলেন লতা মঙ্গেশকর। কিন্তু তিনি কাউকে ছেড়ে চলে গেলেন না, তিনি থেকে গেলেন সকলের মধ্যে। আজীবন থাকবেন। সুর, তাল, লয়ে…