কলকাতা: বুধবারই উঠতি মডেল বিদিশা দে মজুমদারের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার নিয়ে রহস্য বাড়ছে। বিদিশার সুইসাইড নোটে যদিও কাজের চাপের কথা লেখা রয়েছে। তবে পুলিশ ত্রিকোন প্রেমের সম্পর্ক উড়িয়ে দিচ্ছে না। এই পরিস্থিতির মধ্যেই বিদিশার বান্ধবী দিয়ার সঙ্গে প্রেমিক অনুভবের একটি কল রেকডিং ফাঁস হয়েছে। তবে এই কল রেকডিংয়ের সত্যতা আজ বিকেল যাচাই করেনি।
সেই কল রেডিংয়ে দিয়াকে বিদিশার প্রেমিক অনুভব বলে, ‘আমি সত্যি রিলেশনে ছিলাম না। আমার কাছে সমস্ত মেসেজ রয়েছে।’ পাল্টা হুমকির সুরে দিয়া জানায়, ‘রাত একটার সময় মেসেজ এসেছিল। আমার কাছে সব আছে। আমি থানার বাইরে। থানায় গিয়ে যদি বলি সব কিছুর জন্য তুমি দায়ী, তাহলে বড় কেস খাবে।’ সেই সময়ও নিরুত্তাপ ছিল অনুভবের গলা। তিনি বলেন, ‘আমার যদি সত্যি দোষ থাকে, আমি অবশ্যই ফাঁসব। দোষ করলে শাস্তি দেওয়া হোক।’ দিয়া জেরার সুরে বলেন, ‘তোমার দোষ নেই? তিন-চারটে মেয়েকে রিলেশনে রেখেছ, আর তোমার দোষ নেই?’ অবাক সুরে অনুভব জানতে চায়, ‘আমি তিন-চারটে মেয়েকে রিলেশনে রেখেছি? দিয়া বলে, ঋতু, বিদিশা আমরা সব জানি।’ সেই সময় অনুভব স্পষ্ট করে দিয়াকে বলে, কোনওদিন বিদিশাকে ভালোবাসার কথা বলেননি। আই লাভ ইউ বলেননি। কিন্তু সে্স করার কথা বা ফিজিক্যাল হওয়ার কথা তিনি স্বীকার করে নেন।
অন্যদিকে, সুইসাইড নোটে বিদিশা নিজের একাধিক কথা বললেও, সম্পর্কের কথা কিছু লেখেননি। অথচ বিদিশার মোবাইল থেকে পুলিশ জানতে পারে, মৃত্যুর আগে দিয়া নামের বান্ধবীর সঙ্গে বান্ধবীর সঙ্গে কথা বলছিলেন তিনি। সেখানেই তিনি লেখেন, ‘ওকে ছাড়া আমি বাঁচতে পারব না। ওকে আমি আমার বাবা-মায়ের থেকে বেশি ভালোবাসি।’ এই মেসেজের পরেই পুলিশের মনে হয়, এই আত্মহত্যার নেপথ্যে ত্রিকোন প্রেমের সম্পর্ক থাকতে পারে। জানা যায়, বন্ধু মহলে একাধিকবার বিদিশা নিজের বিচ্ছেদের কথা বলেছিলেন। শুধু তাই নয়, তিনি জানিয়েছেন, তাঁর প্রেমিক অন্য একটি সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছেন। ইতিমধ্যে বিদিশার রহস্য মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধান করতে চার বান্ধবীকে পুলিশ তলব করেছে বলে জানা গিয়েছে।
অন্যদিকে, পুলিশ সূত্রের খবর, নিজের কেরিয়ার তৈরি করতেই নৈহাটি থেকে কলকাতা এসেছিলেন। নাগেরবাজারে একটি ফ্ল্যাট ভাড়া করে থাকছিলেন। জিমেজিমে গিয়েই অনুভব বেরা নামে যুবকের সঙ্গে পরিচয় হয়। সেখান থেকেই প্রেমের সম্পর্ক শুরু হয়। পরিচিতরা বলেন, ওই জিমের ট্রেনার ছিলেন অনুভব। অনুভব আসলে মেদিনীপুরের বাসিন্দা। বিদিশা ঘনিষ্ট মহলে একাধিকবার তাঁর বিচ্ছেদের কথা বলেছিলেন বলে জানা গিয়েছে। নিজেকে শেষ করে দেওয়ার ইচ্ছা একাধিকবার প্রকাশ করেছিলেন। তবে তিনি যে সত্যি সত্যি আত্মহত্যা করবেন, তা কেউ কল্পনা করতে পারেননি।