বহরমপুর: গ্রামাঞ্চলের সুপ্ত প্রতিভাগুলি অকালেই হারিয়ে যায় যথাযথ শিক্ষাব্যবস্থার অভাবে৷ বিশেষত মাধ্যমিক বা উচ্চমাধ্যমিক পড়াশোনার সময় উচ্চশিক্ষার স্বপ্নগুলো হারিয়ে যায় গ্রাম্য প্রকৃতিতেই৷ সৌভাগ্যক্রমে যদিও বা কেউ কেউ এই স্বপ্ন পূরণের স্বাদ পায়৷ তবে আধুনিক শিক্ষার দৌড়ে স্বাভাবিকভাবেই পিছিয়ে পড়ে অনেকের শিক্ষাগত যোগ্যতা৷ এমনই এক প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে এক সময় কঠোর পরিশ্রম ও অধ্যাবসায়ের মাধ্যমে সমস্ত প্রতিকূলতাকে হারিয়ে জীবনে সফল হয়েছেন শিক্ষাব্রতী এমএ জামান৷
নিজের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে তাই বদ্ধপরিকর ছিলেন গ্রামের মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের উপযুক্ত শিক্ষার পরিবেশ গড়ে তুলতে৷ সেই লক্ষ্যে প্রত্যন্ত এলাকার মেধাবী শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ স্বপ্নপূরণের জন্য মুর্শিদাবাদ জেলার বহরমপুরে গড়ে তুললেন 'জেড অ্যাকাডেমি৷' আপাতত শিক্ষার্থীদের মেডিকেল প্রবেশিকা নিটের প্রস্তুতিতে সাহায্য করবে এই 'জেড এ্যাকাডেমি'
টার্গেট-৪০৷ এই টার্গেট-৪০ এমন একটি প্রকল্প যেখানে মাধ্যমিকের আগেই মেধার ভিত্তিতে ৪০ জনকে বেছে নেওয়া হবে৷ আগামী ৫ জানুয়ারি, রবিবার বহরমপুর গোরাবাজর আইসিআই স্কুলে অনুষ্ঠিত হবে বাছাই পরীক্ষা৷
এই শিক্ষার্থীদের উচ্চমাধ্যমিকের পাশাপাশি প্রস্তুত করা হবে সর্বভারতীয় নিট পরীক্ষার জন্যেও৷ একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগ ও মেডিকেল প্রবেশিকা পরীক্ষার প্রস্তুতির সঙ্গে 'টার্গেট-৪০'৷ অর্থাৎ এই কোর্সে প্রতি বৎসর ৪০ জন মেধাবী ছাত্র-ছাত্রী ভর্তির সুযোগ পাবে৷ আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসহ সম্পুর্ণ আবাসিক এই প্রকল্পে পরীক্ষার্থীদের জন্য থাকবে বিশেষ স্কলারশিপ এর ব্যবস্থা৷ গ্রামের ছোট ছোট পড়ুয়াদের আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলতে সূদুর ক্যালিফোর্নিয়া থেকেই একটি ট্রাস্ট তৈরি করে মুর্শিদাবাদ জেলার সারগাছিতে একটি স্কুল পরিচালনা করছিলেন এমন.এ.জামান৷ এবার লক্ষ্য আরও বড়৷
এমএ জামান বর্তমানে দেশে কর্মরত ও শিক্ষা প্রসারে আত্ম নিয়োজিত। জেড এ্যাকাডেমির 'অ্যাডভাইসর' ড.পার্থ দত্ত রায় ও 'স্ট্র্যাটেজিক অ্যাডভাইসর' ড.মিত্রা দত্ত রায়কে অ্যাকাডেমির পক্ষ থেকে অভিনন্দন জানানো হয়।
গত ২৯ ডিসেম্বর এই 'জেড অ্যাকাডেমি'র পক্ষ থেকে এট্কটি সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছিল বহরমপুর রবীন্দ্রসদনে৷ এ্যাকাডেমি'র প্রতিষ্ঠাতা ও কর্ণধার এম.এ.জামান এদিন 'পাওয়ার পয়েন্ট' উপস্থাপনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন৷ ভিডিও বার্তায় সকলকে শুভেচ্ছা জানান জেড এ্যাকাডেমির সহ-প্রতিষ্ঠাতা ডাঃ সন্দীপ রায়৷
জেলার একজন শিক্ষানুরাগী হিসেবে অত্যন্ত আনন্দিত৷ সেমিনারে অংশগ্রহণকারী বিশিষ্ট শিক্ষক ও সমাজসেবী সাবির চাঁদ৷ তিনি তাঁর প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছেন, “জেড এ্যাকাডেমি অচিরেই 'ক্ষুদ্র বনস্পতি' থেকে 'সুবৃহৎ মহীরুহে' পরিণত হবে৷ খুবই মহৎ ও বিজ্ঞান সম্মত প্রচেষ্টা৷” তিনি বলেন মেডিকেল প্রবেশিকা পরীক্ষার প্রস্তুতিতে সম্পূর্ণ আবাসিক জেড এ্যাকাডেমি নিবিড় পড়াশোনা ও অনুশীলনের সুযোগ প্রদানে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ পরিকল্পনা৷ সকলের শুভ কামনায় শুধু রাজ্য নয়-দেশের মেডিকেল প্রবেশিকা নিট পরীক্ষার সাফল্যের মানচিত্রে অচিরেই জেড এ্যাকাডেমির উজ্জ্বল উপস্থিতি লক্ষ্য করা যাবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি৷ ওইদিন সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন জেলার বিশিষ্ট ও শিক্ষানুরাগীরা৷ ছিলেন অভিভাবকরাও৷