পেটে ভাত সঙ্গে শিক্ষা, দারিদ্রতা মুক্ত ‘সুশীল’ সমাজ গড়ছেন যুবক

নয়াদিল্লি: প্রত্যেক নাগরিকের ব্যক্তিগত উন্নতি একটি দেশের উন্নতির মান নির্ধারণ করে৷ তাই শিক্ষা, স্বাস্থ্যের মত মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত অনগ্রসর শ্রেণী দেশের সার্বিক উন্নয়নের পথে বাধা তৈরি করবে এটাই তো স্বাভাবিক৷ এক্ষেত্রে সরকারি প্রচেষ্টা সবসময়ই বিতর্কিত৷ কিন্তু বহু স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ও মহানহৃদয় মানুষ এই পিছিয়ে পড়া শ্রেণীকে মূলস্রোতে ফিরিয়ে আনার যে আপ্রাণ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে

পেটে ভাত সঙ্গে শিক্ষা, দারিদ্রতা মুক্ত ‘সুশীল’ সমাজ গড়ছেন যুবক

নয়াদিল্লি: প্রত্যেক নাগরিকের ব্যক্তিগত উন্নতি একটি দেশের উন্নতির মান নির্ধারণ করে৷ তাই শিক্ষা, স্বাস্থ্যের মত মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত অনগ্রসর শ্রেণী দেশের সার্বিক উন্নয়নের পথে বাধা তৈরি করবে এটাই তো স্বাভাবিক৷ এক্ষেত্রে সরকারি প্রচেষ্টা সবসময়ই বিতর্কিত৷ কিন্তু বহু স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ও মহানহৃদয় মানুষ এই পিছিয়ে পড়া শ্রেণীকে মূলস্রোতে ফিরিয়ে আনার যে আপ্রাণ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তার বহু ক্ষেত্রেই সফল এবং প্রশংসাযোগ্য৷ তেমনই এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘নির্ভেদ ফাউন্ডেশন’৷

যার অন্যতম পথিকৃৎ ৩৩ বছরের সুশীল মিনা৷ একুশ শতকের স্ব-স্ব ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত অত্যাধুনিক যুবসমাজ যখন জীবনের আনন্দ খুঁজে নিতে ‘ফ্যান্টাসি’ দুনিয়ায় মসগুল, তখন দিল্লির সুশীল ব্যস্ত সমাজ গড়ার কাজে৷ তাইতো মাত্র ২৫ বছর বয়সে রেলে চাকরি পেয়েও নিজেকে উৎসর্গ করেছেন সমাজ সেবায়৷

পেটে ভাত সঙ্গে শিক্ষা, দারিদ্রতা মুক্ত ‘সুশীল’ সমাজ গড়ছেন যুবক

ছোট থেকেই রাস্তার শিশুদের জীবন তাকে ভাবাত৷ দুমুঠো অন্ন সংস্থানের জন্য ছোট ছোট হাতে বড় বড় কাজের দায়িত্ব দেখে কষ্ট পেতেন৷ এরপর কলেজে পড়ার সময় সতীর্থ অনেককেই দেখলেন ছোট্ট-আন্ধকার একচিলতে ঘরে বসেই চাকরির পড়া করতে৷ কখনও বা সেই চাকরির পড়াশোনার খরচ যোগাতে ছোটোখাটো কাজ করতে৷ আবার অনেকেই দেখেছেন মেধাবী হওয়া সত্ত্বেও শুধুমাত্র আর্থিক সঙ্গতির অভাবে স্বপ্নগুলোকে বিসর্জন দিতে৷ তখন থেকেই মাথায় ঝোঁক চাপে এদের জন্য সাধ্যমত কিছু একটা করার৷ রেলের চাকরি পাওয়ার পরই তাই সময় নষ্ট করেননি সুশীল৷

পেটে ভাত সঙ্গে শিক্ষা, দারিদ্রতা মুক্ত ‘সুশীল’ সমাজ গড়ছেন যুবক

বর্তমানে ব্যাংককর্মী তরুণরা বিদ্যাকে নিয়ে শুরু করেন সমাজকে আলোয় ফেরানোর প্রথম পদক্ষেপ, দুস্থ যুবক-যুবতীদের বিনামূল্যে চাকরির পরীক্ষার কোচিং দেওয়ার জন্য ‘নির্মাণ কোচিং সংস্থা’৷ একইসঙ্গে বস্তি ও পথশিশুদের বিনামূল্যে পড়ানোর কাজ৷ কিছুদিনের মধ্যেই এই উদ্যোগে অভাবনীয় সারা মেলে৷ বাড়তে থাকে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা৷ এই মুহূর্তে উত্তরপ্রদেশ, বিহার, গুজরাট এবং রাজস্থান এই চারটি রাজ্য মিলিয়ে তার ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ৩৫০০৷ পড়ালেখার পাশাপাশি প্রতিদিন ৭০০ পড়ুয়ার খাবারের ব্যবস্থাও করে ‘নির্ভেদা ফাউন্ডেশন’৷

পেটে ভাত সঙ্গে শিক্ষা, দারিদ্রতা মুক্ত ‘সুশীল’ সমাজ গড়ছেন যুবক

২০১৫ সালে তৈরি হয় এই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা৷ সোসাইটি রেজিস্ট্রেশন অ্যাক্ট ১৮৬০ এর আওতায় এই সংস্থা একটি ‘সোসাইটি’ হিসেবে স্বীকৃতি পায়৷ এই মহৎ কাজে ব্রতী হয়ে এগিয়ে আসেন আরও অনেকে৷ কিন্তু এত বড় কর্মকান্ডে অর্থের জোগান বলতে সংস্থার সদস্যদের মাসিক বেতনের একটা অংশ৷ এর মাধ্যমে পড়াশোনার খরচ চলে৷ আর খাওয়ার খরচ আসে জনসাধারণের সাহায্যপ্রাপ্তির জন্য তৈরী ফান্ড ‘মিলাপ’ থেকে৷ সুশীল জানিয়েছেন কারো কাছ থেকে অর্থ সাহায্য নেয় না তাদের সংস্থা৷ মূলত স্টেশনারি, জামাকাপড়, খেলনা, কাঁচা খাবার, প্যাকেট জাত খাবার, রান্না করা খাবার অনুদান হিসেবে নেওয়া হয়৷

পেটে ভাত সঙ্গে শিক্ষা, দারিদ্রতা মুক্ত ‘সুশীল’ সমাজ গড়ছেন যুবক

সমাজে ‘নির্ভেদা’-র চাহিদা মত বাড়ছে, বাড়ছে খরচও৷ চিন্তিত সুশীল জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত এই কাজে সাহায্যের আবেদনে সারা দেয়নি বিশ্বখ্যাত কোনো এনজিও বা ইনস্টিটিউশন৷ তবুও দমে যাননি বিবেকানন্দের আদর্শে উদ্বুদ্ধ এই যুবক৷ তাঁর মতে ব্যক্তি বিশেষে প্রত্যেকে যদি খুব ছোট ছোট পদক্ষেপে গ্রহণ করলেও এই পুরো সমাজকে দারিদ্রতা আর অসহায়তার অন্ধকার থেকে মুক্ত করা সম্ভব৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

5 × 1 =