করোনা আবহেই জয়েন্ট পরীক্ষা, তবে কেন হল না উচ্চমাধ্যমিক? উঠছে প্রশ্ন

করোনা আবহেই জয়েন্ট পরীক্ষা, তবে কেন হল না উচ্চমাধ্যমিক? উঠছে প্রশ্ন

9c1fd07f9bc67214064d80f04bec7cb3

কলকাতা:  করোনা আবহে বাতিল হয়েছে দুই দিল্লি বোর্ডের দশম ও দ্বাদশ৷ অন্যদিকে পরীক্ষা নেওয়ার কথা জানিয়েও সিবিএসসি-র দেখানো পথে হেঁটে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা বাতিল করে দেয় রাজ্য সরকার৷ বদলে বেছে নেওয়া হয় বিকল্প পথে পরীক্ষার্থীদের মূল্যায়নের পন্থা৷ অথচ করোনা আবহেই ঘোষণা করা হল জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষা দিনক্ষণ৷ পরীক্ষা হবে ১৭ জুলাই৷ উচ্চমাধ্যমিক এবং জয়েন্ট এই দুটি পরীক্ষাই পরবর্তী ক্ষেত্রে উচ্চ শিক্ষা বা পেশাগত শিক্ষার পথ খুলে দেয়৷ যদি জয়েন্ট নেওয়া সম্ভব হয় তাহলে উচ্চমাধ্যমিক নেওয়া যেত নাকি? অন্তত যথাযথ মূল্যায়ন হত পরীক্ষার্থীদের৷ 

আরও পড়ুন- জয়েন্ট এন্ট্রান্সের দিন ঘোষণা হল, ১৪ অগাস্টের মধ্যে ফল

উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার পক্ষে সওয়াল করেছিলেন একাধিক শিক্ষাবিদ৷ ছাত্রছাত্রীদের সুরক্ষা বজায় রেখেই পরীক্ষার পক্ষে মত দিয়েছিলেন তাঁরা৷ কিন্তু সেই উপদেশ মানা হয়নি৷ এই বিষয়ে শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের রাজ্য সম্পাদক কিংকর অধিকারী বলেন, ‘‘১৭ জুলাই অফলাইনে জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষা নেওয়ার কথা ঘোষণা করা হল। এর দ্বারা প্রমাণ হল কভিড বিধি মেনে হোম সেন্টারে মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা নিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের মান যাচাই করে নেওয়া যেত। এক্ষেত্রে সরকারের যে সদিচ্ছার অভাব ছিল, সেটা পরিস্কার।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘বর্তমানে কোভিড সংক্রমণের হার প্রতিদিন কমছে। শিক্ষাব্যবস্থায় ছাত্রজীবনের গুরুত্বপূর্ণ প্রথম দুটি পরীক্ষা নিয়ে সরকারের সিদ্ধান্ত শিক্ষার মানকে এক ধাক্কায় অনেকটা নামিয়ে দিল। এই পরিস্থিতিতে জয়েন্ট পরীক্ষা যদি নেওয়া যায় তাহলে মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা নেওয়া গেল না কেন?’’

আরও পড়ুন- ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে ফল, পরীক্ষার হলে কবে? হলফনামা দিয়ে সুপ্রিম কোর্টকে জানাল CBSE

মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতি (STEA)-র দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলা সম্পাদক অনিমেষ হালদার বলেন, ‘‘আমাদের দাবি যে একেবারেই অমূলক না আজকের জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষার দিনক্ষণ ঘোষণা তা প্রমাণ  করলো। আমরা প্রথম থেকেই বলে আসছি, বর্তমান কোভিড পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কিছুটা শিথিলতা অবলম্বন করে মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা সম্পন্ন করা যায়। ফলে এভাবে ডিভাইড এন্ড রুল প্রয়োগ না করে, ২১ লক্ষ্য শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ গুরুত্বহীন না করে রাজ্য সরকারকে তার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার আবেদন জানাচ্ছি।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘ অন্তত ইচ্ছুক পরীক্ষার্থীদের জন্য দ্রুত মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা করে বাকীদের সঙ্গে একইসময় রেজাল্ট বের করা হোক।”

তবে একথাও মানতে হবে যে, ছাত্রছাত্রীদের স্বাস্থ্যের কথা ভেবে বোর্ড পরীক্ষা বাতিলের পক্ষেই মত দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট৷ আদালতেক পর্যবেক্ষণকে মান্যতা দিয়েই প্রথমে দশম ও পরে দ্বাদশের পরীক্ষা বাতিল করে সিবিএসই৷ এ ক্ষেত্রে বলা যেতে পারে দু’মাস আগে পর্যন্ত রাজ্য তথা দেশে করোনা পরিস্থিতি সঙ্গীন ছিল৷ পরিস্থিতির বিবেচনা করেই পরীক্ষা বাতিল করার সিদ্ধান্তকেই সাধুবাদ জানিয়েছিল শীর্ষ আদালত৷ তবে করোনা পরিস্থিতি যখন অনেকটাই স্থিতিশীল, তখন জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা উচ্চ মাধ্যমিকের আয়োজন করা হয়তো সম্ভব হত৷ সেক্ষেত্রে উচ্চ শিক্ষায় প্রবেশের আগে যথাযথ মূল্যায়ন হয় পড়ুয়াদের৷ স্বাস্থ্য বিধি মেনে নিজের স্কুলে পরীক্ষা নিলে উপকৃত হত লক্ষ লক্ষ পড়ুয়া৷ যে পদ্ধতিতে মূল্যায়ন হচ্ছে, তাতে সকল পড়ুয়ার প্রকৃত মানদণ্ডের বিচার হবে কিনা,  সে বিষয়েও প্রশ্ন উঠেছে৷          
 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *