কলকাতা: দুষ্কৃতীদের হাতে ভারতীয় নবজাগরণের পুরোধা ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর মহাশয়ের মূর্তি ভাঙার প্রতিবাদে সরব হল শিক্ষক শিক্ষাকর্মী শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চ৷
বুধবার শিক্ষক শিক্ষাকর্মী শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের রাজ্য কমিটির যুগ্ম সম্পাদক কিংকর অধিকারী তীব্র ধিক্কার জানিয়ে বলেন, ‘‘এ কোন সকাল, রাতের চেয়েও অন্ধকার! নবজাগরণের যে সব মনীষীদের জন্য আজও পশ্চিম বঙ্গের মর্যাদা সারা ভারতবর্ষের কাছে মাথা উঁচু করে রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হলেন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। মনীষীদের উপর এই আঘাত ভারতবর্ষকে মধ্যযুগের দিকে নিয়ে যেতে সাহায্য করবে। অবিলম্বে রাজ্য প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনের কাছে আমাদের দাবি সিসিটিভি ফুটেজ থেকে দুষ্কৃতীদের চিহ্নিত করে অবিলম্বে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। এটা বিস্ময়ের, এখনও পর্যন্ত কাউকে চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করা হল না! মধ্যযুগীয় এই বর্বরতার তীব্র ধিক্কার জানাই৷ এবং সমস্ত শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষকে আহ্বান জানাই, আসুন দলমত নির্বিশেষে জেলায় জেলায় রাজ্যের সর্বত্র ধিক্কার ও প্রতিবাদে সামিল হই৷’’
অন্যদিকে, বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙচুরের প্রতিবাদে অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি জানাল মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতি৷ শিক্ষক সংগঠনের তরফে শিক্ষামন্ত্রীর কাছে ইমেল মারফত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে৷ এদিন শিক্ষক সংগঠনের তরফে জানানো হয়েছে, ১৪ মে একদল দুষ্কৃতি রাজ্যের অত্যন্ত প্রাচীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিদ্যাসাগরের হাতে গড়া মেট্রোপলিটান স্কুল যা পরবর্তীকালে বিদ্যাসাগর কলেজ হামলা চালিয়েছে৷ এই কলেজের ভারতীয় নবজাগরণের পথিকৃৎ৷ কিন্তু, রাজ্যের এই অহংকারের বিদ্যাসাগরকে নিগৃহীত করা হল৷ যারা বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভেঙেছে, তারা দুষ্কৃতী ও সমাজ বিরোধী। সংঠন মনে করছে, এই সমস্ত দুষ্কৃতীদের অবশ্যই চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া দরকার।
মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতি সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ মিত্র বলেন, ‘‘আমরা লক্ষ্য করলাম সোশ্যাল সাইটে সেই সব দুষ্কৃতীদের ভিডিও ক্লিপ প্রকাশ্যে বেরিয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত তাদের কাউকে গ্রেপ্তার করা হল না, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার কোনও লক্ষণ চোখে পড়ছে না৷ এটা আমরা কিছুতেই মেনে নিতে পারছি না। আমরা মনে করি ভারতীয় নবজাগরণের পথিকৃৎ, করুণাসাগর, বিদ্যাসাগরের মূর্তি যারা ভেঙেছে তারা এই সমাজের কলঙ্ক৷ এর নিন্দা করার ভাষা আমাদের নেই৷ আমরা এদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাইছি। আমরা শিক্ষামন্ত্রীর কাছে দাবি করছি এই সমস্ত সমাজবিরোধীদের অবিলম্বে গ্রেফতার করা হোক ও সর্বসমক্ষে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া হোক৷ যাতে ভবিষ্যতে কেউ কখনও এ ধরনের কোনও কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হওয়ার সাহস না দেখাতে পারে৷’’ যদিও, হামলার ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৫৭ জনকে জেরার জন্য আটক করেছে পুলিশ৷