কলকাতা: একের পর এক প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থাকেই এবার কাঠগড়ায় তুলতে শুরু করলেন চাকরি-প্রার্থীদের একাংশ৷ টেট প্রশ্ন-ফাঁস, পিএসসি পরীক্ষায় প্রশ্ন বিভ্রাট, ডিএলএড, ডাব্লুবিএসসি, এসএসসির পর এবার মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রশ্ন-ফাঁস ঘিরে তুঙ্গে উঠেছে৷ প্রশ্ন ফাঁস রুখতে ঢাক-ঢোল পিটিয়ে পর্ষদের তরফে প্রচার চালানো হলেও পরীক্ষায় শুরুতেই দেখা গেল বিভ্রান্তি৷ পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিটের মধ্যেই বাংলা প্রথম পত্র সোশ্যাল মিডিয়ায় ফাঁস হয়ে গিয়েছে বলে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে৷
মঙ্গলবার পরীক্ষা শুরুতে বেশ কয়েকটি জেলা থেকে প্রশ্ন ফাঁসের খবর ছড়িয়ে পড়ে৷ মালদহ, নদীয়া, কলকাতা সহ রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চলে সোশাল মিডিয়ায় প্রশ্ন ফাঁসের খবর বিদ্যুতের গতিতে ছড়িয়ে পড়ে হাতেহাতে৷ উদ্বিগ্ন হয়ে ওঠেন অভিভাবকদের মধ্যে৷ কোথায় কোথায় পরীক্ষা বাতিলের দাবিও উঠতে থাকে৷ কিন্তু, মাধ্যমিক শুরুতেই বিভ্রান্তি ছড়ালেও মাধ্যমিক শিক্ষা পর্ষদের তরফে এখনও কিছু জানানো হয়নি৷ সোশাল মিডিয়ায় পাওয়া প্রশ্ন সঠিক কি না, তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে৷ যদিও, প্রশ্ন-ফাঁসের মতো বিপত্তি এড়াতে এবার কড়া পদক্ষেপ নেয় মধ্যশিক্ষা পর্ষদ৷ পরীক্ষার্থী ছাড়া পরীক্ষা চলাকালীন কারও হাতে প্রশ্ন থাকবে না। সোমবার সাংবাদিক বৈঠক করে সেকথা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন পর্ষদ সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়।
তাঁর মতে, প্রশ্নের প্যাকেট পরীক্ষাকেন্দ্রে আসার পর একেবারে পরীক্ষার হলেই খোলা হবে। কোন ঘরে কতজন পড়ুয়া আছে, সেই মতো প্রশ্নপত্রের প্যাকেট তৈরি করা হয়েছে৷ মোবাইল ব্যবহার নিয়েও বেশ কড়া পর্ষদ৷ পরীক্ষার সঙ্গে যুক্ত পাঁচজন আধিকারিকই একমাত্র মোবাইল রাখতে পারবেন। তাঁরা হলেন, সেন্টার সেক্রেটারি, অফিসার-ইন-চার্জ, ভেন্যু-ইন-চার্জ, ভেন্যু সুপারভাইজর এবং অতিরিক্ত ভেনু সুপারভাইজর। পরীক্ষার দিনগুলিতে যাতে শিক্ষক বা শিক্ষাকর্মীরা মোবাইল স্কুলে না নিয়ে আসেন, তার আর্জি জানিয়েছেন পর্ষদ সভাপতি। তবে কেউ তা আনলেও, ফোন বন্ধ করে প্রধান শিক্ষকের কাছে জমা দিয়ে দিতে হবে। তিনি সেগুলি লকারে রেখে তালা দিয়ে তার চাবি ভেন্যু-ইন-চার্জের কাছে দিয়ে দিতে হবে৷ কিন্তু, প্রশ্ন উঠছে এতকিছু পরও কেন এই বিভ্রান্তি? পরীক্ষা শুরুতেই যদি এমন বিভ্রান্তি ছড়িয়ে পড়ে, তাহলে পরীক্ষার্থীদের মনোবল ভেঙে পড়লে কে নেবে এই দায়? প্রশ্ন তুলছেন অভিভাবকদের একাংশ৷