পুনে: বিপদের নাম হোয়াটসঅ্যাপ। পরিত্রাণের নামও হোয়াটসঅ্যাপ। কীভাবে?
মহারাষ্ট্রর একটা গ্রাম গত বছর সাক্ষী থেকেছে ভুয়ো হোয়াটসঅ্যাপ বার্তাকে কেন্দ্র করে উত্তাল হয়ে ওঠা জনতার হিংসাত্মক আচরণ। গণপিটুনি এবং আরো অনেক কিছু। এবার হোয়াটসঅ্যাপকে হাতিয়ার করে কীভাবে এই প্রবণতা থেকে রেহাই পাওয়া যায়, তারই পথ খুঁজে পেয়েছন গ্রামবাসীরা।
মহারাষ্ট্রে গত বছর ভুয়ো ভিডিও থেকে উত্তেজনা ছড়ায়। ভিডিও প্রকাশ করে দেখানো হয়, শিশু চুরি হচ্ছে। এরপর গণপিটুনি, মৃত্যু। পুলিশ গ্রামবাসীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু করে। পুলিশের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন গ্রামবাসীরাও। তাঁরা এই ধরণের প্রবণতা রুখতে পুলিশকে সাহায্য করছেন। তাঁদের নাম দেওয়া হয়েছে, পুলিশ পাটিল। পুনে (গ্রামীণ) –এর এসপি সন্দীপ পাটিল বলেন, পুলিশেপ্রয়োজনীয় সংখ্যক কর্মীর অভাব রয়েছে। তাই উপযুক্ত সময়ে খবর পাওয়া যায় না। এব্যাপারে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন গ্রামবীসরাই। গত বছর অক্টোবরে পুনে পুলিশ প্রায় ১৬০০ পুলিশ পাটিলকে প্রশিক্ষণ দেয়। কীভাবে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুয়ো খবর ছড়ানো আটকানো যায়, সেব্যাপারে এঁরা নজরদারি চালান।
৫০ টি গ্রাম মিলিয়ে একটা থানা। এই অবস্থায় কোনো উত্তেজনা ছড়ালে তা নিয়ন্ত্রণ করা পুলিশের পক্ষে কঠিন হয়ে যায়। তাই তারা এই কাজে গ্রামবাসীদের পাশে পেয়েছে। শাকিল দেশমুখ। বুলধানা জেলায় আটালি গ্রামে তিনি একটি দোকান চালান। অবসর সময়ে পুলিশ পাটিল হিসেবে কাজ করেন। সোশ্য়াল মিডিয়ার বিভিন্ন পোস্টে নজর রাখেন, যাতে এলাকায় কোনো উত্তেজনা ছড়াতে না পারে। এভাবেই তিনি পুলিশের বন্ধু, মানুষের বন্ধ হিসেবে কাজ করে চলেছেন। সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানিয়েছেন, গত বছর নাসিকে শিশু অপহরণ করা হচ্ছে বলে ভুয়ো খবরকে কেন্দ্র করে উত্তাল পরিস্থিতি তৈরি হয়। আমাদের গ্রামে ৫ টি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ তৈরি করা হয়েছে। গ্রামবাসীরা নিজেদের মধ্যে খবর ছড়িয়ে দেন। কোনো ভুল খবর ছড়ালে, সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
মুহূর্তে এব্যাপারে গ্রামবাসীদের সজাগ করে দেওয়া হয় যে, খবরটি ভুল। আটালি পঞ্চায়েত সমিতির এক সদস্য জানিয়েছেন, গ্রামবাসীরা উদ্যোগ নিয়ে বারবার বৈঠক করে ঠিক করেছেন, কীভাবে ভুয়ো খবর থেকে উত্তেজনা আটকানো যায়। হোয়াটসঅ্যাপ বার্তাকে কেন্দ্র করে বিপদ ছড়িয়েছে। আবার হোয়াটসঅ্যাপের যথাযথ ব্যবহার দেখিয়ে দিয়েছে, কীভাবে এলাকায় শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখা যায়। মহারাষ্ট্রের এই গ্রাম দৃষ্টান্ত তৈরি করেছে। সারা ভারতের বিভিন্ন জায়গায় এই প্রবণতা কম বেশি দেখা যায়। ফলে সাধারণ মানুষ পুলিশে সঙ্গে এগিয়ে এলে সমস্যা সমাধান মোটেই মুসকিল নয়।