আজ বিকেল: উচ্চমাধ্যমিক পাশ মানেই এবার পছন্দের বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করে জীবনে সুপ্রতিষ্ঠিত হওয়ার পথে যাওয়া শুরু। কেউ জেনারেল লাইনে পড়বে। কেউ বা ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার হবে। কেউ কমার্স নিয়ে পড়ে ব্যাংকে চাকরি করবে, চাটার্ড অ্য়াকাউন্ট্যান্ট হবে। কেউ আবার সিভিল সার্ভিস দিয়ে আমলার পদে বসবে। এখান থেকেই শুরু হবে সমস্ত ধাপ। অনেকে আবার বৃত্তিমূলক কোর্স করে এখন থেকেই চাকরির রাস্তাটা সুগম করে নেবে। কী কী বৃত্তিমূলক বিষয় স্নাতক স্তরে পড়া যেতে পারে, এখানে রইল তার তালিকা।
বিবিএ: প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে কর্মীদের মধ্যে সম্পর্ক তৈরি করা, তাদের সঠিকভাবে পরিচালনা করার পথ তৈরি করার জন্য বিশেষ সুদক্ষ কর্মীর প্রয়োজন। এ ধরনের কাজের দিকটিকে নজরে রেখে তৈরি হয়েছে ব্যাচেলর অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন কোর্সটি। একইভাবে পড়তে পারেন বিবিএ ইন হসপিটাল ম্যানেজমেন্ট এবং বিবিএ ইন হেলথ কেয়ার – বিষয় দুটি প্রায় কাছাকাছি। এ রাজ্য থেকে কোর্স দুটি করার সুযোগ রয়েছে। সরকারি বা বেসরকারি দু’ক্ষেত্রেই প্রয়োজন হচ্ছে দক্ষ মানবসম্পদের। সব ধরনের ডেটা মেন্টেন, ম্যানেজমেন্ট কন্ট্রোল, ডিপার্টমেন্টের মধ্যে সঠিক সম্পর্ক স্থাপন করে কাজের সুবিধা তৈরি করার জন্য প্রয়োজন হচ্ছে নন-মেডিক্যাল স্টাফদের। আর এ কারনেই পড়ানো হচ্ছে হসপিটাল ম্যানেজমেন্ট এবং হেলথ কেয়ার।
পড়া শেষে সুযোগ রয়েছে ইনভেন্টরি অ্যান্ড স্টোর ম্যানেজমেন্টের কাজে, রেকর্ড ম্যানেজমেন্টের কাজে, কর্পোরেট কমিউনিকেশন, ব্র্যান্ড বিল্ডিং, মার্কেটিংয়ের কাজে, ফিন্যান্স এবং অ্যাকাউন্ড দেখা সহ বিভিন্ন ধরনের কাজের।বিবিএ ইন সাপ্লাই চেন ম্যানেজমেন্ট- যে কোনও পণ্য উৎপাদনের পরই তা সরাসরি ক্রেতার হাতে আসে না। বেশ কয়েকগুলি ধাপের মাধ্যমে পুরো কাজটি শেষ হয়। এই পুরো প্রক্রিয়াটি সাপ্লাই চেন ম্যানেজমেন্টের অন্তর্ভুক্ত। ইন্টারনেটের মাধ্যমে যখন কিছু কেনা হয় এই সাপ্লাই চেন সিস্টেম সরাসরি পর্যবেক্ষণ করা যায়।চাকরির ক্ষেত্রে এই ম্যানেজমেন্টের কদর রয়েছে। বিভিন্ন আইটি কোম্পানি, রিটেল কোম্পানি, বিভিন্ন বিজনেস হাউজ, লজিস্টিক কোম্পানি এই বিষয়ের গ্র্যাজুয়েটদের নিয়ে থাকে।
বিবিএ ইন্স্যুরেন্স অ্যান্ড রিস্ক ম্যানেজমেন্ট: যে কোওন প্রতিষ্ঠানে আর্থিক, প্রাতিষ্ঠানিক বা ম্যানেজমেন্টাল ঝুঁকি থাকলে সেখানে পুরো বিষয়টি দেখে ইন্স্যুরেন্স অ্যান্ড রিস্ক ম্যানেজমেন্ট। এ রাজ্য থেকেই বিষয়টি নিয়ে পড়ে নেওয়া যায়। পড়া শেষে ফিনান্সিয়াল সেক্টরে কাজ মেলে। এছাড়া ওয়েল্থ ম্যনেজারস, ভেঞ্চার ক্যাপিটালিস্ট এবং ইনসিওরেন্স কোম্পানিতে কাজের সুযোগ রয়েছে।
বিবিএ স্পোর্টস ম্যানেজমেন্ট: স্পোটর্স অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে কেরিয়ার তৈরি করার জন্য বিবিএ স্পোর্টস ম্যানেজমেন্ট কোর্সটি করে নেওয়া যায়। আর্থিক দিক থেকে বা গ্ল্যামারের দিক থেকে কেরিয়ারটির বেশ গুরুত্ব রয়েছে। স্পোর্টস ম্যানেজমেন্ট নিয়ে পড়ার পর হওয়া যায় স্পোর্টস ফোটোগ্রাফার, স্পোর্টস জার্নালিস্ট, স্পোর্টস ম্যানেজমেন্ট পার্সোনেল, স্পোর্টস ল এক্সপার্ট, ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ম্যানেজার, অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টস ম্যানেজার, অ্যাথলিট ডিরেক্টর, স্পোর্টস কোচ ম্যানেজার, মার্কেটিং ম্যানেজার। বিবিএ গ্লোবাল বিজনেস – ফরেন ট্রেড, ওয়ার্ল্ড ইকনমি, ইন্টারন্যাশনাল রিলেশন সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা দিতে সাহায্য করে বিবিএ গ্লোবাল বিজনেস। বিষয়টি নিয়ে পড়ার পর হওয়া যায় ইন্টারন্যাশনাল হিউম্যান ম্যানেজার, ইন্টারন্যাশনাল ট্রেনিং ম্যানেজার, ইন্টারন্যাশনাল অপারেশন ম্যানেজার, গ্লোবাল ডিস্ট্রিবিউশন ম্যানেজার, বিজনেস অ্যাসোসিয়েট, অ্যাসোসিয়েট ফিনান্সিয়াল কনসাল্ট্যান্ট।বিবিএ ইন রিয়েল এস্টেট ম্যানেজমেন্ট -বিবিএ কোর্সে পড়ানো ম্যানেজমেন্ট এবং মার্কেটিং কোর্সের পাশাপাশি রিয়েল এস্টেট ডেভলপমেন্ট, রিয়েল এস্টেট ম্যানেজমেন্ট— এ সংক্রান্ত নিয়ম নীতি, প্রপার্টি অ্যানালিসিস, ল্যান্ড এভেলিউশন প্রভৃতি বিষয় পড়ানো হয় বিবিএ ইন রিয়েল এস্টেট ম্যানেজমেন্ট কোর্সে। পড়া শেষে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কাজের সুযোগ পাওয়া যায়। বিবিএ বিজনেস অ্যানালিটিক্স- ব্যবসার বা প্রতিষ্ঠানের বিপুল তথ্যের, পরিসংখ্যানের বিশ্লেষণ করতে সাহায্য করে বিজনেস অ্যানালিটিক্স। স্নাতকস্তরে বিষয়টি নিয়ে পড়তে গেলে বিবিএ ইন বিজনেস অ্যানালিটিক্স হিসাবে পড়া যায়।পড়া শেষে কাজের সুযোগ রয়েছে এমএনসি-তে, রিটেলস-এ, আইটি ফার্মে, টেলিকম কোম্পানিতে ও ই-কমার্স ফার্মে।
এছাড়া নিজস্ব ব্যবসা বা প্রতিষ্ঠান তৈরি করার জন্য পড়ে নেওয়া যায় বিবিএ এন্ট্রাপ্রেনিওরশিপ। বিষয়টির মধ্যে রয়েছে এন্ট্রাপ্রেনিওরশিপ ইন আ গ্লোবাল ইকনমি, নিউ বিজনেস ডেভলপমেন্ট, বিজনেস অ্যান্ড মার্কেটিং প্ল্যানস ফর নিউ ভেঞ্চার, লিডারশিপ ম্যানেজমেন্ট, প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট সহ প্রভৃতি বিষয়।পড়া শেষে কাজের সুযোগ রয়েছে এফএমসিজি, রিটেল, ট্যুরিজম, ব্যাঙ্কিং, হসপিটালিটি, অ্যাডভার্টাইজিং সহ প্রভৃতি ক্ষেত্রে।
বিবিএ ফিনান্স অ্যান্ড অ্যাকাউন্টিং: ব্যবসা বা প্রতিষ্ঠানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় অ্যাকাউন্টিং এবং ফিনান্স। গ্লোবাল ফিনান্সের ক্ষেত্রকে ভালোভাবে জানতে, বিভিন্ন শিল্প ক্ষেত্রে অ্যাকাউন্টিং, অডিটিং, ফিনান্সিয়াল অ্যানালিসিস এবং রিস্ক ম্যানেজমেন্ট সংক্রান্ত বিষয় জানতে এই বিষয়টি পড়ে নেওয়া যায়। পড়া শেষে যে ধরনের কাজ মেলে তার মধ্যে রয়েছে অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড ফিনান্স কনসালট্যান্ট, ট্রেজারার, চাটার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টের অ্যাকাউন্টস অ্যাসিস্ট্যান্ট, ট্যাক্স অ্যাসিস্ট্যান্ট, অ্যাকাউন্টস এক্সিজিকিউটিভ, ইন্টারন্যাল অডিটর, বিজনেস অ্যানালিসিস্ট, ফিনান্স অফিসার সহ বিভিন্ন ধরনের কাজ।