নয়াদিল্লি: পৃথিবী যেন অনেকটাই বদলে গেছে। বছরের শুরুতেও দৃশ্যগুলো আমাদের অতি চেনা পৃথিবীর মতো ছিল, কিন্তু মারণ ভাইরাস করোনার প্রকোপে সবকিছু পালটে গেছে। দৈনন্দিন জীবনযাত্রার যাবতীয় অনুষঙ্গের পরতে পরতে থাবা ফেলেছে কোভিড-১৯। রাস্তাঘাট, হাটবাজার, অফিস-কাছারি সবেতেই চরম সতর্কতা। কর্মস্থলগুলো ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে শুরু করলেও এখনও বন্ধ স্কুল-কলেজ। কোথাও কোথাও চলছে ইন্টারনেটের মাধ্যমে ‘অনলাইন ক্লাস’। কিন্তু ভারতের মতো তৃতীয় বিশ্বের দেশের অবৈতিনিক প্রাথমিক স্কুলগুলিতে অনলাইন ক্লাস দেওয়ার পরিকাঠামো নেই। যাই হোক, আশা করা যায় একদিন সবকিছু স্বাভাবিক হবে এবং শিশুরা হই হই করে স্কুলে যাবে, ঠিক আগের মতো।
কিছু পরিবর্তন অবশ্য একেবারে চিরস্থায়ী হয়ে যেতে পারে, এমনটাই বলছে ইউনাইটেড নেশনস ইন্টারন্যাশনাল চিলড্রেনস ইমার্জেন্সি ফান্ড বা ইউনিসেফ। নতুন করে স্কুল খোলার বিষয়ে কিছু সাবধান বাণীও শুনিয়ে দিয়েছে তারা। ইউনিসেফ বলছে, পড়ুয়াদের স্কুলে ফেরানোর আগে কর্তৃপক্ষকে সুরক্ষার বিষয়টি সম্পূর্ণ নিশ্চিত করতে হবে। এমনও হতে পারে, স্কুল খোলার কিছুদিন পর ফের অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ রাখতে হল বিদ্যায়তন। স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এলাকার নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদেরও শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী এবং ছাত্রছাত্রীদের সুরক্ষার বিষয়টি নিয়ে সুনিশ্চিত পরিকল্পনা করে নিতে হবে।
স্কুল খোলার পর কোভিড-১৯ ভাইরাস সংক্রমণ যাতে না হয় তার জন্য সতর্কবাণীও বলেছে ইউনিসেফ। যেমন-
১) অত্যন্ত সুচারুভাবে স্কুল খোলা এবং বন্ধ করার প্রক্রিয়া চালাতে হবে যাতে জট না পাকে বা হুড়োহুড়ি না হয়ে। ২) টিফিন খাওয়ার সময়েও একই ভাবে সামলাতে হবে। ৩) প্রয়োজন মতো খোলা জায়গায় কিংবা অস্থায়ী ঘরে ক্লাস নিতে হবে। ৪) স্কুল চালানো হতে পারে শিফটে যাতে ভিড় না হয়। ৫) নতুন করে স্কুল খোলার পর জল এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থা একশো শতাংশ সুনিশ্চিত করতে হবে। রাখতেই হবে হাত ধোওয়ার সাবান। পড়ুয়াদের কনুইতে মুখ চেপে হাঁচি বা কাশির বিষয়টি শেখাতে হবে। ৬) শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার বিষয়টিও শেখাতে হবে শিশুদের।
প্রাপ্তবয়স্করা নতুন ব্যবস্থায় যতটা মানিয়ে নিতে পারে শিশুদের ক্ষেত্রে তা হয় না। নানা ধরনের বিধিনিষেধের ফলে তাদের ওপর আসতে পারে মানসিক চাপ। অনেকদিন স্কুলে না যাওয়ার ফলে আবার স্কুলে অভ্যাস তৈরি করতেও সমস্যা দেখা দিতে পারে বলে জানিয়েছে ইউনিসেফ। সেক্ষেত্রে শিশুদের ভালবেসে, সহানুভূতির সঙ্গে এবং খেলাচ্ছলে সমস্ত কিছু শেখাতে হবে বলে জানানো হয়েছে।
UNICEF-এর পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দেখুন https://www.unicef.org/coronavirus/what-will-return-school-during-covid-19-pandemic-look?utm_source=facebook&utm_medium=organic&utm_campaign=coronavirus -এই লিঙ্কে৷