কলকাতা: মেধাবী ছাত্র৷ কিন্তু, ইংরেজিতে দুর্বলতা! বাংলা মাধ্যমের মেধাবী ছাত্রে ঋষিক কোলের রহস্য মৃত্যুর পিছনে এহেন কারণ উঠে এলেও মিলছে না রহস্যের কিনারা! শুধুমাত্র ইংরেজিতে দুর্বলতার কারণেই কী এতবড় সিদ্ধান্ত? ইংরেজিতে ৮০ শতাংশ নম্বর পাওয়ারও পড়ুয়া কি কলেজের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারছিলেন না? নাকি গোটা ঘটনার পিছনে রয়েছে অন্য কোনও রহস্য? মেধাবী ছাত্রীর রহস্য মৃত্যু ঘিরে পুলিশি তদন্ত শুরু হলেও মৃত্যুর কারণ ঘিরে উঠছে একাধিক প্রশ্ন৷
ঋষিক কোলের শিক্ষকরা জানিয়েছেন, উচ্চ মাধ্যমিকে ইংরেজিতে ৮০ শতাংশ নম্বর পেয়েছিলেন ঋষিক৷ ইংরেজি নিয়ে তাঁর কোনও সমস্যা ছিল না৷ পরিবারের দাবি, সেন্ট জেভিয়ার্সের মতো নামি কলেজে ভর্তি হতে পেরে বেশ খুশি ছিলেন হৃষিক৷ ফলে, ইংরেজিতে দুর্বলতার জন্য আত্মহত্যার যুক্তি নামতে নারাজ পরিবার৷ স্বাভাবিক ভাবেই মৃত্যুর কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে৷ পুলিশ সূত্রে খবর, সেক্ষেত্রে খতিয়ে দেখা হচ্ছে হস্টেলে কোনও সমস্যা হয়েছিল কি না! গ্রামের বাড়ি থেকে প্রথম কলকাতায় হস্টেলে থাকতে গিয়ে পরিবেশগত কোনও সমস্যা বা মানিয়ে নেওয়ার সমস্যা হল কি না, তাও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা৷
শুক্রবার উত্তরপাড়া ও হিন্দমোটরের স্টেশনের মাঝে রেললাইন থেকে উদ্ধার হয় মেধাবী ছাত্র ঋষিক কোলের৷ শুরু হয়েছে তদন্তে৷ ঘটনার পিছনে ইংরেজিতে দূর্বলর কারণ প্রাথমিক ভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করা হলেও ছাত্রের রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় বাড়ছে উদ্বেগ৷ বাংলা মাধ্যম থেকে সেন্ট জেভিয়ার্সের ভর্তি হওয়ার মতো যোগ্যতা থাকা পড়ুয়ার জন্য কি ইংরেজি সমস্যাই কি গ্রহণযোগ্য? নাকি মেধাবী পড়ুয়াকে খুন করে ফেলে দেওয়া হয়েছে রেললাইনের ধারে? পিছনে কি কোনও রিগিংচক্র রয়েছে? কেননা, বাংলা মাধ্যমের পড়ুয়াদের প্রায় নামী কলেজে গিয়ে মানিয়ে নিতে সমস্যা হয়৷ পড়তে হয় রিগিংচক্রে৷ এক্ষেত্রেও যে একই ঘটনা ঘটেনি তা এখনও নিশ্চিত না হলেও পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, আত্মহত্যা করেছে ওই ছাত্র৷
বৃহস্পতিবার বেনিয়াপুকুরে কলেজ হোস্টেল থেকে নিখোঁজ হয়ে যান বিএসসি ফিজিক্সের প্রথম বর্ষের ছাত্র ঋষিক কোলে৷ বেনিয়াপুকুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন ঋষিকের পরিবার৷ বেনিয়াপুকুরে শেষ বার তার ফোনের টাওয়ারের লোকেশন সনাক্ত করা গিয়েছে৷
সহপাঠীরা জানিয়েছেন, বালতি কেনার নাম করে হোস্টেল থেকে বেরিয়েছিল ঋষিক৷ তারপর থেকে নিখোঁজ৷ পরে শুক্রবার রেললাইনের উদ্ধার হয় তাঁর ক্ষতবিক্ষত দেহ৷ পুলিশ জানতে পেরেছে, ভর্তি হওয়ার পর ৮টির মধ্যে ৪টি ক্লাসে হাজির ছিলেন না ওই ছাত্র৷ ফলে প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি ক্লাস করতে যেতে কোনও ভয় দেখানো হয়েছিল তাঁকে? প্রথম বার হোস্টেল থাকতে এসেও কি কোনও সমস্যায় পড়েছিলেন ওই ছাত্র? কেননা, ৮০ শতাংশ নম্বর পাওয়া পড়ুয়ার ইংরেজিতে দুর্বলতা ও তার কারণে আত্মহত্যার যুক্তি আদৌ কতটা বাস্তবতা আছে, তা নিয়ে রয়েছে ধোঁয়াশা৷