কলকাতা: খাস কলকাতার বুকে জাতপাত তুলে অধ্যাপকদের হেনস্থা৷ প্রতিবাদে চার বিভাগীয় প্রধান সহ একাধিক অধ্যাপকের ইস্তফার পর রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে ড্যামেজ কন্ট্রোলে নেমেও কাজে এল না শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বার্তা৷ উল্টে, বুধবার আরও দু’বিভাগীয় প্রধান-সহ ৭ জন স্টাডি সেন্টারের অধিকর্তা ইস্তফা জমা দিয়েছেন বলে খবর৷ তৃণমূল ছাত্র পরিষদকে কাটগড়ায় তুলে এই পদত্যাগ বলে জানা গিয়েছে৷
পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে উপাচার্যের সঙ্গে বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের৷ ইস্তফা দেওয়া অধ্যাপকদের কাজে ফেরার অনুরোধ শিক্ষামন্ত্রী৷ ঘটনার সত্যতা প্রমাণ হলে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার নির্দেশ শিক্ষামন্ত্রীর৷ কিন্তু, এখনও পর্যন্ত অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ার অভিযোগ তুলে আজ দু’বিভাগীয় প্রধান-সহ ৭ জন স্টাডি সেন্টারের অধিকর্তা ইস্তফা দেন৷ ফলে, রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতপাত কাণ্ড আরও জটিল পরিস্থিতি ধারণ করল বলেই মনে করছেন পর্যবক্ষক মহলের একাংশ৷
আজ উপাচার্য সব্যসাচী বসু রায়চৌধুরী পরিস্থিতি মোকাবিলায় বৈঠক ডাকেন৷ কিন্তু তাঁরা সেই বৈঠকে না গিয়ে আরও ২জন বিভাগীয় প্রাধান ও ৭ জন স্টাডি সেন্টানের অধিকর্তা ইস্তফাপত্র উপাচার্যের টেবিলে পৌঁছে দেন৷ এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৬ জন অধ্যাপক ও ১০ জন স্টাডি সেন্টরের অধিকর্তা ইস্তফা পত্র দিলেন৷
বর্ণবিদ্বেষ রুখতে বারংবার কলম ধরেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর৷ আত তারই নামাঙ্কিত রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে জাত তুলে পাঁচ অধ্যাপককে হেনস্থার অভিযোগ৷ প্রতিবাদে একদিনে চার বিভাগীয় প্রধানের ইস্তফা৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি সংস্থার অধিকর্তারও পদত্যাগ রয়েছেন৷ অভিযুক্ত টিএমসিপি পরিচালিত ছাত্র সংসদের৷ যদিও, গোটা ঘটনার দায় এড়িয়েছে শাসক দলের ছাত্র সংগঠন৷ অধ্যাপিকার অভিযোগ খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপাচার্য সব্যসাচী বসুর৷ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে তদন্ত কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস কলেজ কর্তৃপক্ষের৷
অভিযোগ, ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যেই এক অধ্যাপিকাকে হেনস্থা করা হয়৷ কোমরে সমস্যা থাকার কথা জানার পরও তাঁকে তিন ঘণ্টার দাঁড় করিয়ে হেনস্থা করার অভিযোগ৷ দীর্ঘ সময় তাঁকে জলস্পর্শ পর্যন্ত করেতে দেওয়া হয়নি৷ উল্টে তাঁর দিকে জলের বোতল ছুড়ে মারা হয় বলেও অভিযোগ উঠেছে৷ তাঁকে ফাঁসানোর জন্য ছাত্র সংসদের তরফে তাঁর বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ তোলা হয় বলেও অভিযোগ৷ জাত তুলে হেনস্থা সহ অধ্যাপিকার গায়ের রঙ নিয়েও কটাক্ষ করা হয়৷ হেনস্থার তালিকা থেকে বাদ যান অন্য তফশিলি অধ্যাপকরাও৷