আজ বিশ্ব জল দিবস, জল-সঙ্কট নিয়ে কয়েকটি হৃদয় নাড়া দেওয়া তথ্য

কলকাতা: আজ বিশ্ব জল দিবস৷ প্রতিবছর ২২ মার্চ গোটা বিশ্বজুড়ে পালিত হয় এই দিনটি৷ পরিশ্রুত জলের গুরুত্ব ও সংরক্ষণের উপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে এই দিনটি পালন করা হয়৷ গোটা বিশ্বে পরিশ্রুত জলের জোগাড় ও তার ভান্ডারকে সুরক্ষিত রাখাই এই মূল লক্ষ্য৷ রাষ্ট্রপুঞ্জের তরফে এই দিনটিকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে পালন করা হয়। ১৯৯৩ সালে প্রথমবার বিশ্ব

আজ বিশ্ব জল দিবস, জল-সঙ্কট নিয়ে কয়েকটি হৃদয় নাড়া দেওয়া তথ্য

কলকাতা: আজ বিশ্ব জল দিবস৷ প্রতিবছর ২২ মার্চ গোটা বিশ্বজুড়ে পালিত হয় এই দিনটি৷ পরিশ্রুত জলের গুরুত্ব ও সংরক্ষণের উপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে এই দিনটি পালন করা হয়৷ গোটা বিশ্বে পরিশ্রুত জলের জোগাড় ও তার ভান্ডারকে সুরক্ষিত রাখাই এই মূল লক্ষ্য৷

রাষ্ট্রপুঞ্জের তরফে এই দিনটিকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে পালন করা হয়। ১৯৯৩ সালে প্রথমবার বিশ্ব জল দিবস পালন করা হয়। সারা পৃথিবীতে ৬৬.৩ কোটি মানুষ নিরাপদ পানীয় জলের অভাবে ভুক্তভোগী। এত সংখ্যক মানুষের বাড়ির কাছাকাছি পানীয় জলের কোনও ব্যবস্থা নেই। পৃথিবীর মোট তিন ভাগ জল ও একভাগ স্থল। এমনটা আমরা ছোট থেকেই বইয়ের পাতায় পড়ে এসেছি। তবে সেই জলের কতটা ব্যবহারযোগ্য তা আমরা অনেকেই জানি না। ফলে নদী, খাল, বিল, সাগর, সমুদ্রে প্রচুর জল থাকলেও তার সমস্তটা ব্যবহারযোগ্য নয়। দেখা গিয়েছে, পৃথিবীর মোট জলের ৯৭ শতাংশ হল সমুদ্রের নোনা জল। ফলে তা পানযোগ্য নয়। বাকী তিন শতাংশের মধ্যে ২ শতাংশ বরফ হয়ে হিমবাহ বা অন্য জায়গায় জমে রয়েছে। ফলে সারা পৃথিবীর মানুষের ব্যবহারের জন্য রয়েছে শুধুমাত্র ১ শতাংশ জল।

বিয়ার তৈরিতে প্রচুর জল লাগে। এতে প্রয়োজনীয় সামগ্রীতে যেমন জল গালে তেমনই এক পাঁইট বিয়ার তৈরিতে ২০ গ্যালন জল লাগে বল জানা গিয়েছে। ফলে কম পরিমাণ জল অপচয় হয় তা অবর্ণনীয়। অতলান্তিক মহাসাগর সারা পৃথিবীর মোট সামুদ্রিক জলের ২৩ শতাংশ ধারণ করে রেখেছে। এদিকে প্রশান্ত মহাসাগরে মোট জলের ৪৮ শতাংশ রয়েছে বলে গবেষণায় উঠে এসেছে। অতলান্তিক মহাসাগরের চেয়ে এক চা চামচ জলে বেশি অনু রয়েছে বলে গবেষকরা জানিয়েছেন। একটি উঁট ১০ মিনিটে ৩৫ গ্যালন জল পান করতে পারে। উঁট বহুদিন জল না খেয়ে বাঁচতে পারে বলে জানা যায়। তবে কিছু ইঁদুরের প্রজাতি রয়েছে যারা উঁটের চেয়েও বেশিদিন জল না খেয়ে বাঁচতে পারে। রঙীন মাছের মধ্যে জনপ্রিয় গোল্ডফিস নিয়ে গবেষণায় অভিনব তথ্য সামনে এসেছে। জানা গিয়েছে, গরম জলের চেয়ে ঠান্ডা জলে এই মাছের স্মৃতি বেশি ভালো থাকে।

সারা পৃথিবীতে সমস্ত নদী মিলিয়ে যে পরিমাণ জল রয়েছে তার চেয়ে বেশি জল মজুত রয়েছে পরিবেশে, হাওয়ায়। যদি পরিবেশে মিশে থাকা সমস্ত জলকণা একসঙ্গে বৃষ্টি আকারে ঝরে পড়ে তাহলে পৃথিবীর সমস্ত জায়গা গড়ে এক ইঞ্চি জলে ডুবে যাবে।  একটি সাধারণ নল দিয়ে মিনিটে ২ গ্যালন করে জল বের হয়। প্রতিদিন দাঁত ব্রাশ করার সময়ে কলের মুখ বন্ধ করে রাখলে ফি দিন আপনি চার গ্যালন করে জল বাঁচাতে পারেন। এমনকী বিভিন্ন পাবলিক টয়লেটে দিনে গড়ে ২০০ গ্যালন করে জল নষ্ট হয় বলেও দেখা গিয়েছে। সারা পৃথিবীতে ২৫০ কোটি মানুষ উন্নত শৌচাগারের সুবিধা ভোগ করেন না। ফলে তাদের জলকষ্ট রয়েছে তা আর আলাদা করে বলে দিতে হবে না। এছাড়া ১৮০ কোটি মানুষ দূষিত জল পান করে বেঁচে রয়েছেন। ফলে ডায়রিয়া, কলেরার মতো রোগের প্রকোপ বেড়ে যায়।

জল খরচে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রবাসী। প্রতিদিন একজন আমেরিকাবাসী গড়ে ১০০ গ্যালন জল ব্যবহার করে। সেখানে ইউরোপীয়রা গড়ে ৫০ গ্যালন, সাব সাহারন আফ্রিকার বাসিন্দারা মাত্র ২-৫ গ্যালন জল জনপ্রতি ব্যবহার করতে পারেন। ভারতের মতো অন্য উন্নয়নশীল দেশে মূলত মহিলা বা মেয়েরা জল জোগাড়ের কাজ করেন। সারাদিনের এক চতুর্থাংশ সময়ই এই কাজে অতিবাহিত করেন তাঁরা। প্রতিবছর নোংরা জল ব্যবহার করে ও শৌচাগারের অভাবে সারা বিশ্বে ৮ লক্ষ ৪২ হাজার মানুষ মারা যান। সারা বিশ্বে বিশুদ্ধ জল ও শৌচাগারের ব্যবহার সঠিক হলে মোট রোগ ৯.১ শতাংশ হারে কমবে। এবং সবমিলিয়ে মৃত্যুর হার ৬.৩ শতাংশ হারে কমবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

one + 4 =