বারাসত: মিড ডে মিলে পড়ুয়াদের পাতে নুন-ভাত দিয়ে চূড়ান্ত অমানবিকতার পরিচয় দিয়েছিল হুগলির একটি স্কুল৷ সেই নিয়ে কম জল ঘোলা হয়নি৷ হওয়ার কথাও নয়৷ নুন-ভাত বিতর্ক যখন বাংলার রাজনীতিতে নতুন মাত্রা দিয়েছে, ঠিক তখনই প্রচারের আলোর বাইরে মিড ডে মিলে মাছ-ভাত-মাংস- সবজি-দুধ পড়ুয়াদের পাতে দিয়ে নজির গড়ে চলেছে দত্তপুকুরের একটি সরকারি প্রাথমিক স্কুল৷
প্রতিদিন নিয়ম করে মিড ডে মিলের মেনু তে থাকছে ডাল-ভাত৷ সঙ্গে আলু সেদ্ধ৷ সপ্তাহে একদিন মাংস৷ একদিন মাছ৷ একদিন সবজি-সয়াবিন৷ রোজ থাকছে পাপড় ভাজা৷ সপ্তাহে একদিন পড়ুয়াদের মুখে তুলে দেওয়া হচ্ছে এক গ্লাস দুধ৷ স্কুলের মধ্যেই রয়েছে বিপনী৷ সেখান থেকেই পড়ুয়ারা কম দামে বই-খাতা-পেন পেয়ে যাচ্ছে৷ শুধু তাই নয়, কম্পিউটার শিক্ষা থেকে শুরু করে নাচ-গান যোগব্যায়াম চর্চা, ছবি আঁকার মত ক্লাস নেয়া হচ্ছে দত্তপুকুরের এই প্রাথমিক স্কুলে৷
পড়ুয়া ও অভিভাবকদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রাখার জন্য হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত চলছে যোগাযোগ৷ পড়ুয়াদের অভাব-অভিযোগ সমস্যার কথা সেখানেই তুলে ধরছেন অভিভাবকরা৷ শিক্ষকরাও জানাচ্ছেন কোন পড়ুয়ার কী সমস্যা হচ্ছে৷ ফলে হাতে হাতে মিলছে সমাধান৷ মিড ডে মিলে অনন্য নজির গড়ার পর স্কুল কর্তৃপক্ষের এবার লক্ষ্য স্কুলে বসানো সিসিটিভি ও শিক্ষক-পড়ুয়াদের বায়োমেট্রিক হাজিরা ব্যবস্থা চালু করা৷
কিন্তু মাত্র সাড়ে চার টাকার মিড ডে মিলের বরাদ্দে কীভাবে এত কিছু সম্ভব? তাও আবার ৫৬২ পড়ুয়ার জন্য? এই মুহূর্তে ওই স্কুলে ১৩ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা রয়েছেন৷
দত্তপুকুর আদর্শ এফপি স্কুলের প্রধান শিক্ষক সমীর দে জানিয়েছেন, স্কুলের প্রত্যেক শিক্ষক শিক্ষিকা পড়ুয়াদের নিজেদের সন্তান বলে মনে করেন৷ তাঁদের যত্নআত্তি করেন৷ মিড ডে মিলের যে বরাদ্দ অর্থ পাওয়া যায় তার থেকেই এই সমস্ত কিছু করা হয়৷ কিছু ঘাটতি পড়লে শিক্ষকরা নিজেদের বেতন থেকেই তা মিটিয়ে দেন৷ এছাড়াও স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রী শুভানুধ্যায়ীরাও স্কুলের পরিকাঠামো উন্নয়ন ও মিড ডে মিলের জন্য কিছু অর্থ সাহায্য করে থাকেন৷ ফলে কোনও সমস্যা হয় না বলেই তিনি জানিয়েছেন৷