কলকাতা: বাংলায় নতুন কর্মদিবস তৈরি করে দেশের শীর্ষে উঠেছে বাংলা৷ বনধ নিষিদ্ধ করে কর্মদিবস বাঁচানোর ঐতিহাসিক পদক্ষেপ নিয়েছে তৃণমূল সরকার৷ একটি কর্মদিবসও যাতে নষ্ট না হয়, সেই বিষয়ে শাসক দলের তরফে আগেই নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে৷ কিন্তু, এবার সেই তৃণমূল পরিচালিত সরকারি কর্মসূচিতেই কর্মদিবস নষ্টের আশঙ্কা করছে শিক্ষক মহলের একাংশ৷
শনিবার দলীয় সাংবাদিক বৈঠক থেকে শিক্ষা দপ্তরের নয়া কর্মসূচি ঘোষণা করে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘‘আগামী ৫ নভেম্বর নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে সকাল ১১টায় আমরা সমস্ত সরকারি ও সরকারি পোষিত কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত শিক্ষকদের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে তাঁদের সকলকে আমন্ত্রণ জানিয়েছি৷ সমস্ত কলেজের নিয়মিত শিক্ষক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত শিক্ষক তাঁদের সকলকেই আমরা উৎসবের পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সরাসরি এক প্রীতি বৈঠকের ডাক দিয়েছি৷ আগামী ৫ নভেম্বর সকাল ১১টার বৈঠক যদিও শুরু হবে ১২টা৷ কিন্তু পিছানো যেত, যেহেতু আবার হলের চাপ রয়েছে৷ চলচ্চিত্র উৎসব হবে৷ সেই কারণে আমরা অনুষ্ঠানটি একটু আগেই দিয়েছি৷ সমস্ত শিক্ষক সংগঠনের সবাইকেই আমরা আলাদা আলাদাভাবে আমন্ত্রণ জানিয়েছি৷ সকলেই সেদিন উপস্থিত হবেন, এই আমন্ত্রণ জানাচ্ছি শিক্ষা দপ্তরের তরফ থেকে এবং মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীর তরফ থেকে৷’’ একই সঙ্গে আগামী ২০ নভেম্বর, বুধবার পার্শ্বশিক্ষকদের আমন্ত্রণমূলক বৈঠক করার বিষয়েও জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী৷
সপ্তাহের শুরুতে মঙ্গলবার একটি কর্ম দিবসে সরাসরি সরকারি ভাবে সমস্ত কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ডেকে বৈঠক ঘিরে প্রশ্ন তুলছেন শিক্ষকদের একাংশ৷ শিক্ষা দপ্তরের আমন্ত্রমণ অনুযায়ী সমস্ত কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা উপস্থিত হন, তাহলে কলেজে পঠন-পাঠন কীভাবে চলবে? কেননা আগামী সোমবার পর্যন্ত ছট পুজোর ছুটি ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার৷ মঙ্গলবার সমস্ত সরকারি দপ্তর, স্কুল-কলেজ খুলে যাবে৷ কিন্তু সপ্তাহের শুরুতেই কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সরকারি অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ ঘিরে উঠছে প্রশ্ন৷ শিক্ষকদের একাংশের অভিযোগ, তাহলে কী মঙ্গলবার কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে অঘোষিত ছুটি দিয়ে দিলেন পার্থবাবু? ১১টায় সময় সরকারি অনুষ্ঠানে হাজিরা দেওয়া কারণে কী নষ্ট হবে না কর্মদিবস? মঙ্গলবার শিক্ষকদের অভিবাবে কী ছুটি হয়ে যাবে বাংলার সমস্ত কলেজ-বিশ্ববিদ্যাল? প্রশ্ন তুলছেন শিক্ষকদের একাংশ৷
এমনকি তৃণমূল কংগ্রেসের দলীয় সাংবাদিক বৈঠক থেকে শিক্ষা দপ্তরের কর্মসূচি ঘোষণা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন শিক্ষক মহলের একাংশ৷ অনেকেই বলছেন, সপ্তাহের প্রথম দিনে কলেজের পঠনপাঠন লাটে না তুলে সরকারি অনুষ্ঠানের কি শনি কিংবা রবিবার করা যেত না? যদিও চলচ্চিত্র উৎসবের জন্য শহর কলকাতার অধিকাংশ হল উৎসব কমিটির দখলে চলে যাবে৷ অনেকেই বলছেন, যদি তাই হয়, তাহলে আগে কেন কর্মসূচি নিতে পারলো না শিক্ষা দপ্তর? আর যদি বৈঠক করার প্রয়োজন হত, তাহলে চলচ্চিত্র উৎসবের পরেই বা কেন সপ্তাহ শেষে তা করা হল না? তাহলে তো অন্তত পঠন-পাঠন লাটে ওঠার প্রশ্নই উঠত না!