রায়গঞ্জ: তীব্র আর্থিক অস্বচ্ছলতার সঙ্গে লড়াই করে জীবন সংগ্রামে জয়ী হওয়ার কাহিনী জানতে গেলে যেতে হবে ওই একরত্তি শিশুর কাছে। কারণ ছোটদের কাছ থেকে অনেক কিছুই বুঝি জানার আছে বড়দের। ইসলামপুর স্টেট ফার্ম কলোনির গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার এমন একটি শিশু চরিত্র রুম্পা মণ্ডল। স্টেট ফার্ম কলোনি জুনিয়ার বেসিক স্কুলের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র এখন ওই শিশু। রবিবার কলকাতায় সে হাতে তুলে নিয়েছে রাজ্য সেরার শিরোপা।
রাজ্যের অলিম্পিয়াড পরীক্ষার প্রথম হওয়ার শংসাপত্র ও স্মারক। ওই শিশুর জন্য গর্বিত ইসলামপুর শহর। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিকাশ দাস জানান, ঐ শিশুটি চরম অভাব এর মধ্যে মানুষ হলেও পড়াশোনায় বেশ ভাল। স্কুলের বিভিন্ন কর্মসূচিতে যুক্ত থাকতে ভালোবাসে। এবং শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সম্মান প্রদর্শন করা থেকে সবকিছুতেই ওর ভূমিকা প্রশংসনীয়। এমনকি নিয়মিত উপস্থিত হয় স্কুলে। তাই ওর ফলাফল বেশ ভালো হয়। ওর এই রাজ্য সেরা হওয়ার খবরে বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের পাশাপাশি এলাকার বাসিন্দারা আনন্দিত এবং গর্বিত।
রুম্পার সংসারে তীব্র অভাব। বাড়ি ডালখোলা। বাবা অজয় দাস পেশায় সামান্য কাঠ মিস্ত্রী। তাই মামার বাড়ি থেকেই ওর এবং ওর ভাইয়ের পড়াশোনা এবং বেড়ে ওঠা। রুম্পা কোলকাতা গিয়েছে ট্রেনের জেনারেল কামরায়। যেখানে যাওয়াটাই সংশয়ে ছিল।স্কুলের প্রধান শিক্ষক বিকাশ দাস সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন বলেই শেষ পর্যন্ত কোলকাতায় গিয়ে এই শিরোপা নিয়ে আসা। রুম্পা সোমবার সকালে কোলকাতা থেকে ফিরেই ক্লান্ত শরীরে স্কুল চলে এসেছে। বিদ্যালয়ের মিড ডে মিলও যে ওর ভরসা। কারণ মামার বাড়িও ততটা সচ্ছল নয়। রুম্পা এখন চতুর্থ শ্রেণিতে। বিগত বছর সে তৃতীয় শ্রেণীতে পড়তো। এবং তখনই ওই মেয়েটি বসে অলিম্পিয়াডে। অন্যদিকে চতুর্থ শ্রেণী থেকে অলিম্পিয়াড পরীক্ষায় সফল অন্য আরেক পড়ুয়া। ওর নাম অঙ্কিতা সিনহা। সেও ওই প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকেই গত বছর চতুর্থ শ্রেণীতে পরীক্ষা দেয়। ফলাফল এখন বেরিয়েছে। সে বর্তমানে ইসলামপুর স্টেট ফার্ম কলোনি হাই স্কুলের পঞ্চম শ্রেণীতে পড়াশোনা করে।